Advertisement
E-Paper

পুরুলিয়ায় গলার নলি কেটে খুন বধূকে! গুজরাত থেকে প্রেমিককে ধরে আনল রাজ্য পুলিশ

পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে ভাড়াবাড়িতে গৃহবধূর রহস্যজনক খুনের ঘটনায় অবশেষে গুজরাতের সুরত থেকে তাঁর প্রেমিককে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম অর্জুন ঘোষ।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫ ২০:৩১

—প্রতীকী চিত্র।

পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে ভাড়াবাড়িতে গৃহবধূর রহস্যজনক খুনের ঘটনায় অবশেষে গুজরাতের সুরত থেকে তাঁর প্রেমিককে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম অর্জুন ঘোষ। বাড়ি মুর্শিদাবাদের শালারে। ধৃতকে ট্রানজিট রিমান্ডে এনে বুধবার রঘুনাথপুর মহকুমা আদালতে হাজির করায় পুলিশ। আদালত ধৃতকে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৮ মে রঘুনাথপুর শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডে ভাড়া বাড়িতে মামনি দুবে নামের এক বধূর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। মৃতদেহের গলার নলি কাটা ছিল। মামনির স্বামী রঘুনাথপুরে ইস্পাত তৈরির একটি বেসরকারি কারখানায় কাজ করেন। কর্মস্থল থেকে তিনি একাধিক বার স্ত্রীকে ফোন করেও পাননি। সন্দেহ হওয়ায় তিনি তড়িঘড়ি বাড়িতে ফিরেই স্ত্রী মামনির দেহ দেখতে পান। পরে তিনি রঘুনাথপুর থানার দ্বারস্থ হন। খবর পেতেই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। তদন্তে নেমেই প্রাথমিক ভাবে পুলিশ বুঝতে পারে, বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই এই খুন হয়ে থাকতে পারে। এর পর বিভিন্ন প্রযুক্তিগত তথ্য ও সূত্র কাজে লাগিয়ে পুলিশ জানতে পারে মামনি দুবেকে খুন করে ভিন্‌রাজ্যে গা ঢাকা দিয়েছেন তাঁর প্রেমিক অর্জুন।

পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অর্জুন ঘোষের সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল মামনি ঘোষের। অর্জুন ঘোষ নিজেও বিবাহিত। অর্জুন ঘোষ দাবি করেছেন, মামনি বিভিন্ন ভাবে তাঁর বৈবাহিক জীবনে সমস্যা তৈরি করছিলেন। তাই পথের কাঁটা মামনিকে সরিয়ে দিতেই খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন অর্জুন। ১৭ মে উনি একবার মামনিকে খুনের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরের দিন উনি মামনিকে প্রথমে চড় থাপ্পড় দিয়ে ও গলায় ফাঁস লাগিয়ে অচৈতন্য করে ফেলেন। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে অর্জুন ক্ষুর দিয়ে মামনির গলার নলি কেটে দেন। পরে গা ঢাকা দেন। আমরা বিভিন্ন প্রযুক্তিগত তথ্য ও সূত্র কাজে লাগিয়ে গুজরাটের সুরত থেকে অভিযুক্ত অর্জুনকে গ্রেফতার করি।’’

তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, মুর্শিদাবাদের শালারের বাসিন্দা অর্জুন বছর আড়াই আগে দুর্গাপুরে একটি ঘিয়ের দোকান চালাতেন। সেই সূত্রেই অর্জুনের সঙ্গে আলাপ হয় বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি এলাকার বধূ মামনির। ধীরে ধীরে দু'’জনের সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। অভিযোগ, অর্জুন বিবাহিত, তা জানার পর মামনি বিভিন্ন ভাবে অর্জুনের স্বাভাবিক বৈবাহিক জীবনে বাধার সৃষ্টি করতে শুরু করে। এর মাঝেই অর্জুন দুর্গাপুরের দোকান ছেড়ে অসম চলে যান। চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে স্ত্রী মামনি ও একমাত্র সন্তানকে নিয়ে রঘুনাথপুরে ভাড়াবাড়িতে থাকতে শুরু করেন দেবাশিস। কিন্তু তার পরেও অর্জুন ও মামনির মধ্যে টেলিফোনে যোগাযোগ অব্যাহত থাকে। এর পরেই মামনির সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ছেদ করার উদ্দেশ্যে তাকে খুনের পরিকল্পনা করে বসেন অর্জুন। সেই উদ্দেশ্যে তিনি মে মাসের মাঝামাঝি অসম থেকে সরাসরি পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে হাজির হন। ১৭ মে মামনিকে জয়চণ্ডী পাহাড়ে নিয়ে গিয়ে সেখানে তাঁকে খুনের চেষ্টা করেন অর্জুন। কিন্তু কোনও কারণে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। পরের দিন মামনির স্বামী কাজে বেরিয়ে গেলে অর্জুন মামনির ভাড়া বাড়িতে হাজির হন। ঘটনার সময় মামনির সন্তান মামাবাড়িতে থাকায় সেই সুযোগ নিয়ে অর্জুন সটান মামনির বাড়িতে ঢুকে তাঁকে প্রথমে চড় থাপ্পড় মারতে শুরু করেন। পরে মামনির গলায় ফাঁস লাগিয়ে অচৈতন্য করে ফেলেন। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে সঙ্গে রাখা ক্ষুর দিয়ে মামনির গলার নলি কেটে দেন। পরে রঘুনাথপুর ছেড়ে গা ঢাকা দেন অর্জুন।

Purulia Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy