ধুন্ধুমার: বামেদের নবান্ন অভিযান ঘিরে সংঘর্ষ। শুক্রবার হাওড়ার মল্লিক ফটকের সামনে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
বামেদের নবান্ন অভিযান মারমুখী চেহারা নিল। আন্দোলনকারীদের আটকাতে লাঠি, জলকামান, কাঁদানে গ্যাস— সবই ব্যবহার করল পুলিশ। বামপন্থী যুব সংগঠন ও পুলিশের খণ্ডযুদ্ধে শুক্রবার দুপুরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় হাওড়া ময়দান। কিছু ক্ষণ অবরোধ করা হয় হাওড়া সেতুও।
বিক্ষোভকারীরা জানান, তাঁদের ১৫০ জন আহত হয়েছেন। অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রায় তিন ঘণ্টার গোলমালে জখম হন পাঁচ পুলিশকর্মী, কয়েক জন সাংবাদিকও।
সকলের জন্য কাজ, কম খরচে পড়াশোনা এবং কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে শিল্পায়নের দাবিতে সিঙ্গুর থেকে নবান্ন অভিযানের কর্মসূচি নিয়েছিল বামপন্থী ১২টি যুব সংগঠন। সকাল থেকেই নবান্নের চতুর্দিক ছিল পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ। মিছিল আটকাতে হাওড়া ময়দানে বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়। মিছিল বঙ্কিম সেতু হয়ে জিটি রোড ধরে নবান্নের দিকে যাবে বলে খবর আসতেই মল্লিক ফটকের সামনে জিটি রোডে স্টিলের ব্যারিকেড, র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স, রোবোকপ, জলকামান দিয়ে ‘দুর্গ’ বানিয়ে ফেলে পুলিশ।
পৌনে ২টো নাগাদ মিছিল মল্লিক ফটকের দিকে এগোতেই বাধা দেয় পুলিশ। অভিযোগ, মিছিল থেকে ইটের টুকরো, কাচের বোতল ছোড়া হয়। লাঠি উঁচিয়ে বিক্ষোভকারীদের কিছুটা পিছু হটিয়ে দেয় পুলিশ। তার পরে ইটপাথরের সঙ্গে লঙ্কার গুঁড়ো এবং রং মেশানো জলের বোতল ছোড়া হয় পুলিশকে লক্ষ্য করে। ইটে তিন জন পুলিশকর্মীর মাথা ফাটে।
বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ছোড়ে পুলিশ। এর মধ্যেই হাওড়া ময়দানের দিক থেকে তিনটি বোমা ছোড়া হয়। পুলিশ পাঁচ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। লাঠি চালায় দফায় দফায়। বেশ কয়েক জন বিক্ষোভকারী লুটিয়ে পড়েন। তাঁদের হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বিকেলে আহতদের দেখতে যান বাম নেতারা।
ডিওয়াইএফের রাজ্য সম্পাদক সায়নদীপ মিত্রের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে হাওড়া পুলিশ শান্তিপূর্ণ মিছিলে বর্বরোচিত আক্রমণ চালিয়েছে। তৃণমূলকর্মীদের হাতে ইটের বস্তা তুলে দেওয়া হয়েছিল। বাড়ির ছাদ থেকে সেই ইটপাটকেল ছোড়া হয় মিছিলের উপরে।
হাওড়ার পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মা বলেন, ‘‘বিক্ষোভকারীরা প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক হয়ে ইটপাথর, বোতল ছুড়তে শুরু করেন। পুলিশের দু’টি গাড়ি ভেঙে দেন।’’ পুলিশের আরও অভিযোগ, মিছিল থেকে বোমা, লঙ্কাগুঁড়ো ছোড়া হয়েছিল। ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র অবশ্য শিলিগুড়িতে দাবি করেন, হাওড়ায় লাঠি চালানোর খবর তাঁর কাছে নেই। কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy