Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Mukul Roy

রাজনীতির অঙ্গ দল ভাঙানো, মত মুকুলের

শুভেন্দু অধিকারী বুধবার তৃণমূল ছাড়ার পরে বিজেপিতে তাঁকে স্বাগত জানানোর তৎপরতা দেখা গিয়েছিল গেরুয়া শিবিরের নেতাদের মধ্যে।

মুকুল রায়। ফািল চিত্র।

মুকুল রায়। ফািল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:২৫
Share: Save:

তৃণমূলকে ‘ব্যক্তি মালিকানাধীন সংস্থার চেয়েও খারাপ’ বলে কটাক্ষ করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়। সেই সঙ্গেই তাঁর ফের দাবি, ‘‘সকলেই মানবেন, আমি নির্বাচনটা ভাল বুঝি। তৃণমূল একশো আসনও পাবে কি না, সন্দেহ।’’

শুভেন্দু অধিকারী বুধবার তৃণমূল ছাড়ার পরে বিজেপিতে তাঁকে স্বাগত জানানোর তৎপরতা দেখা গিয়েছিল গেরুয়া শিবিরের নেতাদের মধ্যে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, মুকুলবাবু, রাজ্য দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় সকলেই বলেছিলেন, শুভেন্দু বিজেপিতে এলে তাঁকে স্বাগত জানানো হবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক তথা আসানসোল পুরসভার প্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারি তৃণমূল ছাড়ার পর তাঁর জন্য কোনও স্বাগত-বার্তা বিজেপি নেতাদের মুখে শোনা যায়নি। জিতেন্দ্রর বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা নিয়ে মুকুলবাবু এ দিন বলেছেন, ‘‘অন্য দল নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। শুভেন্দু গণ আন্দোলনের ফসল। তাঁর সঙ্গে অন্য কাউকে মেলানো ঠিক নয়।’’

আরও এক ধাপ এগিয়ে আসানসোলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে জিতেন্দ্র তিওয়ারি আসানসোলে দিনের পর দিন আমার দলীয় সহকর্মীদের মেরেছেন, মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়েছেন। এটাই ছিল তাঁর দলীয় দায়িত্ব। তাই তাঁকে পাশে বসিয়ে রাজনীতি করার ইচ্ছা আমার নেই। এটা আমার ব্যক্তিগত মত। তাঁকে দলে নেওয়ার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আমার মত জানতে চাইলে আপত্তির কথা জানাব। তবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কী করবেন, তা তাঁরা ঠিক করবেন।’’ রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা আসানসোলের প্রাক্তন পর্যবেক্ষক সায়ন্তন বসুও বলেন, ‘‘আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছি, মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং আমাদের আসানসোলের জেলা সভাপতিকে একাধিক বার জিতেন্দ্র তিওয়ারি আক্রমণ করেছেন। তাই তাঁকে দলে নিতে আপত্তি আছে।’’

আরও পড়ুন: মুখ্যসচিব-ডিজি’কে ফের তলব, ভিডিয়ো বৈঠক চাইল নবান্ন

তবে জিতেন্দ্রকে দলে নিতে না চাইলেও তৃণমূল থেকে একের পর এক বিদ্রোহের সুর বাইরে আসায় বিজেপি নেতৃত্ব খুশি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং মুকুলবাবুর বিশ্লেষণ, কোনও রাজনৈতিক মর্যাদাসম্পন্ন লোকের পক্ষে আর তৃণমূল করা অসম্ভব। মুকুলবাবু এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘তৃণমূল এখন প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির চেয়েও খারাপ হয়ে গিয়েছে। দমবন্ধ পরিবেশ। তাই অনেকেই দল ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। বাংলায় যাঁরা রাজনীতি করেন, বাংলার উন্নয়ন করতে চান, তাঁরা বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে দল করতে চাইছেন।’’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূল ভাঙার অভিযোগ করছেন। মুকুলবাবু এ দিন তা কার্যত স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ‘‘এটা রাজনীতির অঙ্গ। কংগ্রেস ভেঙেই তো তৃণমূল হয়েছে। সিপিআই ভেঙে সিপিএম হয়েছে। এটাই রাজনৈতিক ইতিহাস।’’

আরও পড়ুন: লকডাউন যাঁদের যৌনকর্মী বানাল, সন্ধ্যা-মালতি-শ্যামলীদের কথা

এই পরিবেশে আজ, শুক্রবার রাতে রাজ্যে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কাল, শনিবার মেদিনীপুরে এবং পরশু রবিবার বোলপুরে তাঁর কর্মসূচি রয়েছে। মেদিনীপুরে শাহের জনসভায় শুভেন্দু এবং আরও কোনও জনপ্রতিনিধি অন্য দল থেকে যোগ দেবেন কি না, তা নিয়ে চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে। মুকুলবাবু অবশ্য এ দিনও দাবি করেছেন, এ বিষয়ে তাঁর জানা নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mukul Roy TMC bjp
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE