Advertisement
E-Paper

ছাই ঢাকা ছাপাখানায় ভয়

পুড়ে খাক হয়ে যাওয়া একটি ছাপাখানা, আর তাকে ঘিরে ফের রাজনীতির আগুন ছড়াল হরিনঘাটায়। বড় জাগুলির ওই ছাপাখানাটির মালিক শৈলেন্দ্রনাথ মিত্র পরিচিত তৃণমূল সমর্থক। শাসক দলের দাবি, রবিবার রাতে সিপিএম কর্মীরা নিশ্চুপে এসে শুধু ছাপাখানাটাই নয়, লাগোয়া দলীয় কার্যালেও আগুন ধরিয়ে দিয়ে গিয়েছে। ফলে তৃণমূলের ওই পার্টি অফিসের গায়ে ঝোলানো ফেস্টুন-ফ্লেক্সও ঝলসে গিয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৬ ০১:৫৬
ঝলসানো ছাপাখানা। নিজস্ব চিত্র

ঝলসানো ছাপাখানা। নিজস্ব চিত্র

পুড়ে খাক হয়ে যাওয়া একটি ছাপাখানা, আর তাকে ঘিরে ফের রাজনীতির আগুন ছড়াল হরিনঘাটায়।

বড় জাগুলির ওই ছাপাখানাটির মালিক শৈলেন্দ্রনাথ মিত্র পরিচিত তৃণমূল সমর্থক। শাসক দলের দাবি, রবিবার রাতে সিপিএম কর্মীরা নিশ্চুপে এসে শুধু ছাপাখানাটাই নয়, লাগোয়া দলীয় কার্যালেও আগুন ধরিয়ে দিয়ে গিয়েছে। ফলে তৃণমূলের ওই পার্টি অফিসের গায়ে ঝোলানো ফেস্টুন-ফ্লেক্সও ঝলসে গিয়েছে।

সিপিএম অবশ্য ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। সিপিএমের হরিণঘাটা জোনাল কমিটির সম্পাদক হেমন্ত ভৌমিক বলছেন, ‘‘তৃণমূলের তাণ্ডবে আমরা এলাকায় তিষ্ঠোতে পারছি না, দলীয় সমর্থকেরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে, আর তারা কিনা তৃণমূলের ছাপাখানায় আগুন ধরাতে যাবে?’’

ঘটনাস্থলে এসে পুলিশ এবং দমকলের কর্মীরাও এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি। দমকলের এক কর্তা জানান, অগ্নিকাণ্ডের কারণ স্পষ্ট নয়। ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তার রিপোর্ট না-পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা সম্ভব নয়।’’

তবে, নির্বাচন পর্বে সিপিএমের একাধিক কর্মীরর বাড়িতে আগুন লাগানোর অভিযোগ রয়েছে শাসক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধেই। এ ব্যাপারে পুলিশ দুই তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতারও করেছে। এ বার ওই ছাপাখানায় আগুন লাগায়, তির ঘুরে গিয়েছে সিপিএমের দিকে। যা দেখে সিপিএমের এক জেলা নেতা বলছেন, ‘‘আসলে দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতেই তৃণমূলের এই আত্মঘাতী চাল!’’

নির্বাচনের আগে, ওই এলাকায় তৃণমূলের একচ্ছত্র আধিপত্যে প্রতিরোধ তুলেছিল সিপিএম। জোট ঘোষণার পরে পায়ের তলায় মাটি পেয়ে সেই প্রতিরোধ ক্রমেই জোরদার হয়েছিল। নিজেদের হারানো জমি ফিরে পেতে পাল্টা মারধর শুরু করেছিল তৃণমূলও। ভোটের সকালে সেই উত্তাপের জেরে এক সময়ে বাঁধ ভেঙেছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের। তারা শাসক দলের তাণ্ডব উজিয়েই বুথে পৌঁছে গিয়েছিলেন। সেই উত্তাপের জের ছড়িয়েছিল সিপিএম কর্মীদের বাড়িতে। সিপিএমের পোলিং এজেন্ট হওয়ায় এক বাম সমর্থকের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনা কি তারই বদলা?

হরিণঘাটা থানার পুলিশ জানিয়েছে, ছাপাখানাটির বাইরে একাধিক বিদ্যুৎবাহী তার এমন ভাবে ঝুলতে দেখা গিয়েছে যা থেকে শর্ট সার্কিট হওয়া আদৌ অস্বাভিক নয়। কল্যাণীর এসডিপিও কৌস্তভদীপ্ত আচার্য বলেন, ‘‘সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।’’

আগুনের খবর পেয়ে সকালেই এসেছিলেন তৃণমূলের হরিণঘাটা ব্লক সভাপতি চঞ্চল দেবনাথ। চঞ্চলবাবুরও অভিযোগ, সিপিএম-ই এ কাজ করেছে। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘দুর্ঘটনা হলে দোকানের উল্টোদিকে পার্টি অফিসে আগুন লাগলো কী করে?’’

শৈলেন্দ্রনাথবাবুর পরিবারের তরফো জানানো হয়েছে, রবিবার রাত দুটো নাগাদ তাঁরা খবর পান ছাপাকানায় আগুন লেগেছে। কালীবাজারে এসে তাঁরাও অন্যদের সঙ্গে তাঁরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে ছিলেন। কিন্তু ছাপাখানার কিছু বাঁচানো যায়নি। পরে দমকলের একটি ইঞ্জিন এসে আগুন নেভায়। তবে তাঁর দলের নেতারা ‘অন্য আগুনের’ ইঙ্গিত দিলেও শৈলেন্দ্রবাবুরা কিন্তু সরাসরি কোনও অভিযোগ করছেন না।

তবে, ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন। এ দিন সকালে এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, বাজার এলাকা থমথমে। ওই আগুন লাগা নিয়ে কতা বলতেও চাইছেন না কেউ। স্থানীয় দোকানদারদের কথায়, ‘‘আগুন কেউ লাগাক না লাগাক, এর মধ্য়ে রাজনীতি ঢুকে পড়েছে। েখন আর মন্তব্য করে এলাকায় অশান্তি ছড়াতে চাই না।’’ দিন কয়েক আগে কল্যাণীর মহকুমাশাসক স্বপন কুণ্ডু সর্বদলীয় শান্তি বৈঠক ডেকেছিলেন। তা আর হয়ে ওঠেনি। অভিযোগ ছিল, তৃণমূল বেঁকে বসাতেই সেই বৈঠকই ভেস্তে গিয়েছিল।

সেই উত্তাপেই ফের আঁচ পড়ল এ দিনের ঘটনায়।

Fire incident accident horinghata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy