পাকিস্তানে বন্দি স্বামীর জন্য মানত করেছিলেন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী। প্রায় তিন সপ্তাহের টানাপড়েন শেষে দেশে ফিরতে পেরেছেন বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউ। গত শুক্রবার তিনি ফিরেছেন হুগলির রিষড়ায়, নিজের বাড়িতে। বুধবারই স্বামীকে নিয়ে তারকেশ্বর মন্দিরে পুজো দিতে গেলেন রজনী সাউ। পুজো দেওয়ার সময়েই বিএসএফ জওয়ানকে চিনতে পেরে ভিড় জমালেন অনেকে। পুজো দেওয়ার জন্য পূর্ণমকে আলাদা করে সুযোগ করে দিলেন পুরোহিত। হুগলির ‘নায়ক’কে ঘিরে ফটো তোলার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু হয়। তাঁকে নিয়ে সকলের সেলফি তোলার আবদার হাসুমুখে মেটান পূর্ণম।
বুধবার দুপুর ১২টা নাগাদ তারকেশ্বর মন্দিরে যান পাকিস্থান রেঞ্জার্সের হাতে ২১ দিন বন্দি থাকা বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী রজনী, মা দেবন্তী সাউ, পুত্র আরব এবং আরও দুই আত্মীয়। পুজো দিতে গিয়ে সাধারণ ভক্তদের লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন তিনি। ঠিক সেই সময়ে মন্দিরের এক পুরোহিত ওই জওয়ানকে চিনতে পারেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, ওই পুরোহিত বিএসএফ জওয়ান এবং তাঁর পরিবারকে ‘বিশেষ ভাবে’ পুজো দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। তত ক্ষণে পূর্ণমকে নিয়ে মন্দিরে উপস্থিত ভক্ত ও দর্শনার্থীদের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়। তিনি পুজো দিয়ে বেরনো মাত্র তাঁকে নিয়ে সেলফি তোলার হিড়িক পড়ে যায়। এমনকি, পূর্ণম পুজো দিতে গিয়েছেন শুনে তাঁকে দেখার জন্য রাস্তা থেকেও অনেকে মন্দির চত্বরে চলে যান। ভিড় নিয়ন্ত্রণ করেন স্বেচ্ছাসেবকরা।
তারকেশ্বরের এক পুরোহিতের কথায়, ‘‘উনি আসল নায়ক। তাঁকে পুজো দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে পেরে নিজেদের ধন্য মনে করছি।’’
উল্লেখ্য, গত ২৩ এপ্রিল (পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হানার পরদিন) পঞ্জাবের পঠানকোটে কর্মরত অবস্থায় ভুল করে পাকিস্তানে ঢুকে গিয়েছিলেন পূর্ণম। পাক রেঞ্জার্স তাঁকে আটক করে। সীমান্তে এমন ঘটলে দু’দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’-এর পরে সংশ্লিষ্ট জওয়ানকে মুক্তি দেওয়াই দস্তুর হলেও পূর্ণমকে তখন ছাড়েনি পাকিস্তান। বিএসএফের সঙ্গে একের পর এক ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’-এর পরে সপ্তাহ দুই আগে অটারী-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ভারতে ফেরেন বিএসএফ কনস্টেবল।
আরও পড়ুন:
গত ২৩ মে রিষড়ার বাড়িতে ফেরার পর থেকে পূর্ণমকে ঘিরে আলাদা উন্মাদনা দেখা যায় স্থানীয়দের মধ্যে। পুজো দেওয়ার পরে পূর্ণম বলেন, ‘‘মায়ের ইচ্ছা পূরণ করতেই তারকেশ্বর মন্দিরে আসা।’’