চা বাগানের ঝোপের মধ্যে লুকোনো ছিল মুখ। সীমান্তরক্ষী বাহিনী তারপরে খুঁজে বার ৮০ ফুট লম্বা একটি সুড়ঙ্গ।
ঠিক যেন ‘বজরঙ্গী ভাইজান’ সিনেমার দৃশ্য। যা দেখে সোমবার সন্ধ্যায় চোখ কপালে উঠে গিয়েছিল বিএসএফ জওয়ানদের। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া থানার ফতেপুর বিওপি-র কাছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে তা ওপারে চলে গিয়েছে। পঞ্জাব ও জম্মু-কাশ্মীরের ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে আকছারই দেখা মেলে এমন সুড়ঙ্গের। ড্রাগ, জাল টাকা, এমনকী হৃষ্টপুষ্ট মানুষ পর্যন্ত ওই সুড়ঙ্গ দিয়ে অনায়াসে সীমান্ত পার হয়ে যায়। যেমন ভাবে সিনেমায় পাকিস্তান যেতে দেখা গিয়েছিল সলমন খানকে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তে এমন সুড়ঙ্গ বেনজির বলেই মনে করা হচ্ছে।
চোপড়ার আরুয়াগছ গ্রামে চা বাগানের মধ্যের সুড়ঙ্গটি মুখের কাছে প্রায় ৪ ফুট লম্বা ও ২ ফুট চওড়া। ভিতরটিও প্রশস্ত। বেশ পোক্ত হাতেই খোঁড়া। মাটির বেশ গভীরে নেমে কাঁটাতারের অনেকটা নীচে দিয়ে গিয়ে উঠেছে বাংলাদেশের পুরাতন আটওয়াড়ি গ্রামে ফাঁকা মাঠে। তবে সুড়ঙ্গের মধ্যে তেমন ভাবে পায়ের ছাপ বা জিনিসপত্র কিছু মেলেনি।
বিএসএফের সন্দেহ, সুড়ঙ্গটি অন্তত সাড়ে তিন মাস পুরনো। কিন্তু তা দিয়ে নিয়মিত পাচার সম্ভবত হত না। তবে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে বুধবার বিকেলের মধ্যেই বিএসএফের উত্তরবঙ্গের সব চৌকিগুলিকে সতর্ক করা হয়। বিশেষ করে, চা বাগান লাগোয়া সীমান্ত থাকলে বাগানের নর্দমা, ঝোপঝাড় পরীক্ষা করে দেখতে বলা হয়েছে। এই জেলায় সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় একাধিক ছোট চা বাগান রয়েছে। অন্য চা বাগানগুলিতেও তাই খোঁজ
শুরু হয়েছে।
প্রশ্ন উঠেছে, এতদিন সুড়ঙ্গটির খোঁজ পাওয়া গেল না কেন? চা বাগান সূত্রে জানা গিয়েছে, সীমান্তবর্তী এলাকা বলে ওই বাগানে রাতে কাজ হয় না। দিনের বেলাতেই শ্রমিকেরা কাজ করে চলে যান। এলাকাটিতে কোনও জনবসতিও সে ভাবে নেই। পাশেই সীমান্তের পথ। তাতেও সাধারণত লোকজন কমই থাকেন। তাই রাতের বেলা মাটি খুঁড়ে সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয়েছে বলেই প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা।
জেলার পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর জানিয়েছেন, বিএসএফের ১৩৯ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা ওই সুড়ঙ্গের হদিস পান। আপাতত ওই এলাকাটি বিএসএফ ঘিরে রেখেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy