ভীমপুরের আনন্দনগর জঙ্গলে সেই কৌটো। নিজস্ব চিত্র
সামনে স্বাধীনতা দিবস। তার আগে জঙ্গলমহল থেকে প্রচুর কার্তুজ উদ্ধার হল। উদ্ধার হয়েছে ম্যাগাজিনও। শুক্রবার সকালে শালবনির ভীমপুরের কদমশোলের আনন্দনগর জঙ্গলে মাটি খুঁড়ে স্টিলের কৌটো বন্দি কার্তুজ, ম্যাগাজিন মিলেছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, সে সবই পুরনো। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “এক সূত্রের খবরের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়েছে। বেশ কিছু কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে। ম্যাগাজিনও উদ্ধার হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশের এক সূত্রে খবর, সব মিলিয়ে ১৮৭ রাউন্ড কার্তুজ ও ৬টি ম্যাগাজিন উদ্ধার হয়েছে। এর মধ্যে ২টি আবার ইএফআরের। মাওবাদীপর্বে ইএফআরের কিছু অস্ত্র খোওয়া গিয়েছিল। বিশেষ করে শিলদার ক্যাম্প থেকে। জেলা পুলিশ সুপার মানছেন, “যে ম্যাগাজিন উদ্ধার হয়েছে, তার মধ্যে ইএফআরের ম্যাগাজিনও রয়েছে।’’ সব মিলিয়ে ঘটনায় শোরগোল পড়েছে পুলিশের অন্দরে। জেলা পুলিশের এক কর্তার স্বীকারোক্তি, “এই সময়ে সতর্ক থাকতে হবে। বিষয়টিকে হালকা ভাবে নিলে ভুল হবে। এক সময় এই এলাকায় মাওবাদী ও জনগণের কমিটির বেশ ভাল প্রভাব ছিল। ফলে, পথঘাট সবই ওদের চেনা। প্রত্যাঘাতের আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’’
পুলিশের এক সূত্রে খবর, এক গোপন সূত্রের খবরের ভিত্তিতে এ দিন সকালে ভীমপুরের আনন্দনগর জঙ্গলে অভিযানে যায় পুলিশের একটি দল। পুলিশ খবর পেয়েছিল, এই জঙ্গলে একটি স্টিলের কৌটো পোঁতা রয়েছে। সেই কৌটোয় প্রচুর কার্তুজ এবং ম্যাগাজিন রয়েছে। সেই মতো তল্লাশি চালানো হয়। এক জায়গায় খানিক মাটি খুঁড়তেই ওই কৌটোর হদিস মেলে। কৌটো খুলতেই পুলিশ বুঝতে পারে, ওই সূত্রের খবর ভুল নয়।
কৌটো-বন্দি
ইনসাস ৫২ রাউন্ড*
এসএলআর ৫ রাউন্ড
৯ এমএম ২২ রাউন্ড
৮ এমএম ৬৭ রাউন্ড
৭.৬৫ এমএম ১৮ রাউন্ড
ইমপ্রোভাইসড্ ২৩ রাউন্ড
ম্যাগাজিন ৬টি
ভীমপুরের পাশেই লালগড়। এক সময়ে এই তল্লাটে মাওবাদীদের অবাধ আনাগোনা ছিল। ডেরাও ছিল। ভীমপুরে এখন আবার বিজেপির শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে। স্বাধীনতা দিবসের আগে জঙ্গলমহলে অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার প্রায় ফি বছরই হয়। বছর দুয়েক আগে এই অগষ্টের গোড়ায় কেন্দ্র ও রাজ্যের তরফে এক সতর্কবার্তা এসে পৌঁছেছিল জেলায়। যে সতর্কবার্তায় জানানো হয়, জঙ্গলমহলে বাহিনীর উপরে বড়সড় হামলা চালানোর ছক করেছে মাওবাদীরা। তারা ১৫ অগস্টের মধ্যে যে কোনও সময়ে জঙ্গলমহলের পুলিশ বা সিআরপি ক্যাম্পে হামলা চালাতে পারে।
পুলিশ অবশ্য মাওবাদী তৎপরতার কথা মানছে না। তাদের মতে, রাজ্যে পালাবদলের পরে ২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর মৃত্যু হয় হয় শীর্ষ মাওবাদী নেতা কিষেণজির। কিষেণজির মৃত্যুর পর এখনও পর্যন্ত রাজ্যে বড় ধরণের কোনও মাওবাদী নাশকতার ঘটনা ঘটেনি। তবে ঝাড়খণ্ড সীমান্তে যে মাওবাদী তৎপরতা রয়েছে এবং এ রাজ্যে ঢোকার চেষ্টা করছে, তা মানছে পুলিশের এক সূত্র। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “সীমানাবর্তী এলাকায় অতিরিক্ত সতর্কতা রয়েছে।’’ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কয়েকটি থানাকে বাড়তি সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy