Advertisement
E-Paper

ক্ষতিপূরণ না দিয়ে গ্রেফতারির মুখে প্রোমোটার

চুক্তি মতো কাজ না করায় আবাসন নির্মাতা সংস্থাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। তা না মেনে প্রথমে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত, পরে জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে যায় সংস্থাটি। কিন্তু নির্দেশ বহাল থাকে।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:১৩

চুক্তি মতো কাজ না করায় আবাসন নির্মাতা সংস্থাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। তা না মেনে প্রথমে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত, পরে জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে যায় সংস্থাটি। কিন্তু নির্দেশ বহাল থাকে। তার পরেও ক্ষতিপূরণ না দেওয়ায় সংস্থার কর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করল বর্ধমান জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত।

অভিযোগকারী আবাসিকদের আইনজীবী রামেন্দ্রসুন্দর মণ্ডল বলেন, ‘‘মাস দেড়েক আগে ওই প্রোমোটিং সংস্থার কর্ণধার তাপস দে-সহ দু’জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। কিন্তু পুলিশ তাঁদের ধরেনি। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে ২৯ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজির করার জন্য ফের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।’’ অভিযুক্তদের আইনজীবী দেবদাস রুদ্রের অবশ্য দাবি, “কাজ করতে গেলে আবাসনের বাসিন্দারা বাধা দেন। তা আদালতকে জানিয়েছিলাম। আমার মক্কেলরা এখনও আদালতের নির্দেশ মেনে কাজ করতে রাজি।”

২০০৩ সালে আসানসোল (দক্ষিণ) থানার লোয়ার চেলিডাঙার বাসিন্দা প্রবীর চক্রবর্তীর জমিতে ১৫টি ফ্ল্যাটের বহুতল তৈরির জন্য চুক্তি করে ওই নির্মাণ সংস্থা। ২০০৭ সালের মধ্যে সব ফ্ল্যাট বিক্রি হয়ে যায়। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, চুক্তি মতো লিফ্‌ট বা পানীয় জলের ব্যবস্থা হয়নি। আবাসনের চার দিকে পাঁচিল ও একটি সাধারণ শৌচাগার তৈরি করা হয়নি। বহুতলের জন্য যে আলাদা ট্রান্সফর্মার বসানোর কথা ছিল, তা-ও হয়নি। বাসিন্দারা জানান, সংস্থার কর্তাদের বছরখানেক ধরে বলেও সুরাহা হয়নি। তাই ২০০৮-এর ২৮ মে অমিয় বিশ্বাস-সহ ১৫ জন ফ্ল্যাট মালিক বর্ধমান ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন। ক্ষতিপূরণ বাবদ ১১ লক্ষ টাকা দাবি করেন তাঁরা।

আদালত নিযুক্ত এক বিশেষজ্ঞ দল ওই আবাসন ঘুরে রিপোর্ট দেয়, অভিযোগের সারবত্তা রয়েছে। তবে ১১ লক্ষ টাকা নয়, ক্ষতিপূরণ হওয়া উচিত ৭ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। ২০০৮-এর ১৫ ডিসেম্বর জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত ওই প্রোমোটার সংস্থাকে ক্ষতিপূরণ ও মামলার খরচ বাবদ মোট ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া অথবা দু’মাসের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী সব কাজ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সংস্থাটি ক্ষতিপূরণ না দিয়ে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হয়। কিন্তু সেখানেও আগের রায় বহাল থাকলে তারা জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে আবেদন করে। অভিযোগকারীদের আইনজীবী রামেন্দ্রসুন্দরবাবু বলেন, “হেরে যাবে বুঝে পরে সেই মামলা তুলে নিতে গেলে জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়িয়ে ৭ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা দিতে বলে।’’ এর পরে ওই সংস্থা জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের কাছে আরও বেশি সময় চেয়ে আবেদন করে। আদালত তা খারিজ করে দেয়।

কিন্তু তাতেও ক্ষতিপূরণ মেলেনি। গত ২৩ জুলাই জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত ওই সংস্থার মালিকদের গ্রেফতার করে ৪ অগস্ট আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু তাঁদের ধরতে পারেনি পুলিশ। সম্প্রতি ফের গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কেন অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়নি, আসানসোল (দক্ষিণ) থানা সূত্রে সদুত্তর মেলেনি। অভিযুক্তদের আইনজীবী দেবদাসবাবু বলেন, “পাঁচিল ও শৌচাগার তৈরি করে দিয়েছে আমার মক্কেল। আইনি জটিলতায় আদালতের নির্দেশ মানা যায়নি বলে আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।”

soumen dutta saumen dutta burdwan promoter consumer forum arrest consumer forum verdict promoter arrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy