ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) সঙ্গে কি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর কোনও সম্পর্ক রয়েছে? অনেকের মনেই প্রশ্ন, এসআইআরে যদি তাঁদের নাম বাদ যায়, তবে কি তাঁদের নাগরিকত্ব থাকবে? পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূলের দাবি, কেন্দ্র এসআইআর দিয়েই সিএএ করতে চাইছে! তবে বিজেপি বার বার দাবি করে আসছে, দুয়ের মধ্যে কোনও সম্পর্ক নেই। যদিও অনেকের মনে এখনও সেই ধোঁয়াশা রয়েছে। তার মধ্যেই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের বক্তব্য নিয়ে মতুয়াদের মনেই ধন্দ দেখা গিয়েছে।
সিএএ, এসআইআর নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার এক সভায় ঠাকুরবাড়ির সদস্য শান্তনুর বক্তব্যে আবার দিশাহারা তাঁরই সম্প্রদায়— মতুয়ারা! তাঁর দাবি, এসআইআরে যদি কারও নাম বাদ যায়, তাতে কোনও অসুবিধা নেই! শান্তনুর কথায়, ‘‘এসআইআর আমাদের কোনও সমস্যা নয়। কেন্দ্রীয় সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য আমাদের যদি এসআইআরের সমস্যা পোহাতে হয়, তা পোহাব।’’ তার পরেই শান্তনু বলেন, ‘‘৫০ লক্ষ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশি মুসলিম, পাকিস্তানি মুসলিমকে বাদ দিতে যদি আমার সম্প্রদায়ের এক লক্ষ মানুষকে ভোটদান থেকে বিরত থাকতে হয় তাতে কোনটা লাভ?’’
বাগদার সভা থেকেও সিএএ নিয়ে আওয়াজ তোলেন শান্তনু। তাঁর দাবি, ‘‘সিএএ অত্যন্ত একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সিএএ করা মানে কেন্দ্রীয় সরকারকে সহযোগিতা করা। সিএএ কারা করবেন, যাঁরা বাংলাদেশ থেকে এসেছেন তাঁদের সিএএ করতে হবে। আপনার নাম কেন্দ্রের খাতায় নেই। ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড থাকলেই নাগরিক হওয়া যায় না। সেই কারণে সিএএ বানানো হয়েছে।’’
আরও পড়ুন:
তবে এসআইআরে নাম বাদ যাওয়া নিয়ে শান্তনুর বক্তব্যকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বনগাঁ জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি প্রসেনজিৎ ঘোষ এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতাকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘সিএএ-তে আবেদন করা মানেই শান্তনু ঠাকুর আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন। সেই কারণেই তিনি আবেদন করতে বলছেন।’’ তার পরেই তিনি বলেন, ‘‘প্রলাপ বকছেন শান্তনু ঠাকুর। কোনও রোহিঙ্গা পশ্চিমবঙ্গে নেই।’’
অতীতে এসআইআরে মতুয়াদের নাম বাদ যাওয়া নিয়ে শান্তনুর মন্তব্যে ধন্দ ছড়ায়। এক সময়ে তিনি বলেছিলেন, এসআইআরে যদি কোনও মতুয়ার নাম বাদ যায়, তা হলে এক-দু’বার ভোট দিতে না পারলেও পরে সব ঠিক হয়ে যাবে।