Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Calcutta High Court vs ED on Sanjay Basu

সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে আসলে অভিযোগটা কী? ইডিকে প্রশ্ন করে বিচারপতির মুখে উঠে এল গান্ধীজির প্রসঙ্গ

আইনজীবী সঞ্জয়ের বাড়িতে দিল্লি থেকে এসে তল্লাশি চালিয়েছিলেন ইডির গোয়েন্দারা। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা নিজেই বলেছিলেন, সঞ্জয় তাঁর আইনজীবী বলেই ওঁকে হেনস্তা হতে হচ্ছে।

Calcutta High Court Asks ED what is the Allegation against lawyer Sanjay Basu

গ্রেফতারির আশঙ্কা করে রক্ষাকবচ চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আইনজীবী সঞ্জয়। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৩ ১৪:৫৮
Share: Save:

আইনজীবী সঞ্জয় বসুর রক্ষা কবচ দেওয়া হবে কি না তা নিয়ে ইডির সঙ্গে একরকম তর্কই হল কলকাতা হাই কোর্টের। বিচারপতিরা যখন বার বার ইডির কাছে জানতে চাইছেন, সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ কী? তখন সেই প্রশ্ন বার বার এড়িয়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বদলে তাঁদের প্রশ্ন এই মামলার বিচার কি আদৌ ডিভিশন বেঞ্চে হওয়া উচিত! এই প্রশ্ন আর তার পাল্টা প্রশ্ন নিয়েই হাই কোর্টে দীর্ঘ ক্ষণ চলল ডিভিশন বেঞ্চ বনাম ইডির তরজা। শেষটায় ইডিকে বিষয়টি বোঝাতে গান্ধীজির গ্রেফতারির প্রসঙ্গও টেনে আনল দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।

গত ১ মার্চ আইনজীবী সঞ্জয়ের আলিপুরের বাড়িতে দিল্লি থেকে এসে তল্লাশি চালিয়েছিলেন ইডির গোয়েন্দারা। ভুয়ো অর্থলগ্নির সংস্থার মামলায় তদন্ত সূত্রে প্রায় ২২ ঘণ্টা ধরে চলেছিল ম্যারাথন তল্লাশি। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তৃণমূল নেত্রী মমতা বলেছিলেন, ‘‘সঞ্জয় আমার আইনজীবী, তাই ওকে হেনস্থা করা হচ্ছে।’’ তার পরই গ্রেফতারের আশঙ্কা করে রক্ষাকবচ চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আইনজীবী সঞ্জয়। বুধবার সেই মামলারই শুনানি ছিল বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি বিশ্বরূপ ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানেই মামলাটির বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলে ইডি।

ইডির আইনজীবী— মামলাটি ডিভিশন বেঞ্চের বিচার্য নয়। চিটফান্ড মামলা বলা হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিষয়টি চিটফান্ড নয়। ইডি আসলে অর্থ তছরূপের তদন্ত করছে। ২০১৪ সালে চিটফান্ড সংস্থা পিনকন ৮৩ লাখ টাকা দিয়েছিল। দাবি করেছিল আইনি পরামর্শের অগ্রিম হিসাবে দেওয়া হয়েছে ওই অর্থ। সংস্থাটির অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য খুঁজে বার করতেই সঞ্জয় বসুকে তলব করা হয়। তাঁর বাড়িতে তল্লাশিও চালানো হয়।

বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়— কিন্তু কোন মামলায় তলব করা হল? সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ কী? কোন এফআইআরের ভিত্তিতে এই তদন্ত করা হচ্ছে? গান্ধীজিকে ব্রিটিশ গ্রেফতার করেছিল। প্রশ্ন উঠেছিল, কোন অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হল? আমারও প্রশ্ন, মামলকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগটা কী?

ইডির আইনজীবী— চিটফান্ডের মামলার সঙ্গে এটিকে জোড়া হচ্ছে। কিন্তু এর তদন্তের বিষয় আলাদা। এখানে শুধু মাত্র আর্থিক বিষয়টি নজরে আনা হবে। মামলাটি এই ডিভিশন বেঞ্চের পরিবর্তে সিঙ্গল বেঞ্চে শুনানি হওয়া উচিত।

বিচারপতির প্রশ্নের জবাব দিতে ইডির টালবাহানার মধ্যেই সঞ্জয়ের আইনজীবী আদালতকে জানান, ইডি নিজেই টুইট করে জানিয়েছে কোন মামলায় এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। টুইটে সঞ্জয়কে অর্থলগ্নি সংস্থার সুবিধাভোগী বলা হয়েছে। অতএব, ভুয়ো অর্থলগ্নি মামলার সঙ্গে এটি যুক্ত। তাই বিচার ডিভিশন বেঞ্চেই হওয়া উচিত। এর পরেই ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, মামলাটি এই বেঞ্চে শুনানি হবে কি না, তা ইডির কেস রেকর্ড দেখার পরই নির্ধারণ করা হবে। আগামী সোমবার ইডিকে এই মামলার কেস রেকর্ড নিয়ে আসতে হবে। একই সঙ্গে পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত ইডিকে সঞ্জয়ের বাড়িতে তল্লাশি চালানো, সঞ্জয়কে গ্রেফতার এমনকি, সঞ্জয়ের বাড়ি বা অফিস থেকে জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করা থেকে বিরত থাকতে বলেছে হাই কোর্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE