পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে দুই বিজেপি কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরকে নতুন মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করতে বলল কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরকে আবার নতুন মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লিখিত আঘাতগুলি নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে। আদালতকে জানাতে হবে, কোন আঘাত মৃত্যুর কারণ হতে পারে। পাশাপাশি, পুরো রিপোর্ট নিয়ে পূর্ণাঙ্গ মতামত দিতে হবে মেডিক্যাল বোর্ডকে।
ওই দুই মৃত্যুর ঘটনায় দু’টি হাসপাতালের পৃথক ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। তমলুকের মেডিক্যাল হাসপাতাল জানিয়েছিল, বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে। উল্টো দিকে, এসএসকেএম হাসপাতালের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উঠে আসে অত্যাচারের ঘটনা। সেখানে বলা হয়, এক জনের দেহে ২৪টি এবং অন্য জনের দেহে বেশ কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। এ বার ওই আঘাতের চিহ্নগুলি নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্ট চাইল হাই কোর্ট। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
প্রসঙ্গত, গত ১১ জুলাই মহরম উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল খেজুরি থানার ভাঙনমারি গ্রামে। পর দিন সকালে অনুষ্ঠানস্থলের কিছু দূরেই দুই যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। মৃতদের এক জনের নাম সুধীর পাইক, অন্য জন সুজিত দাস। পরিবারের দাবি, দু’জনের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। যদিও অনুষ্ঠানের আয়োজকেরা দাবি করেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। একই দাবি করে শাসকদল তৃণমূলও। তবে বিজেপির তরফে অভিযোগ তোলা হয়, ধর্মীয় কারণে খুন হয়েছেন ওই দুই যুবক। জোড়া মৃত্যু নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতর। বিতর্ক শুরু হয় ময়নাতদন্ত রিপোর্ট নিয়েও। অভিযোগ, প্রথমে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখে পুলিশ জানায়, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তা মানতে না চেয়ে দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্তের দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন মৃতদের পরিজনেরা। পরের বার ময়নাতদন্তে জানা যায়, দু’জনের দেহেই আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। একই দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দু’বার দু’রকম আসে কী করে, তা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। গোটা তদন্তের মোড়ও ঘুরে যায় ভিন্ন দিকে।