রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় সিবিআইকে প্রাথমিক অনুসন্ধানের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। সিবিআই এখনও ওই মামলায় তদন্ত শুরু না করায় ধমকও দেয় আদালত। সোমবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের মন্তব্য, ‘‘ব্যাঙ্কের টাকা তছরুপে সরকারি অফিসারেরা যুক্ত। রাজ্যের অনুমোদনের অপেক্ষায় বসে না থেকে সিবিআইয়ের এখনই তদন্ত শুরু করা উচিত। এ ক্ষেত্রেও যদি অনুমতি চাইতে হয়, তবে বিষয়টি ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়ার মতো হবে।’’ হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ওই ঘটনায় সিবিআই প্রাথমিক অনুসন্ধান করবে। তাতে ব্যাঙ্কের আপত্তি না থাকলে দ্রুত এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করতে হবে সিবিআইকে। বিচারপতি এ-ও জানান, কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মী, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে হলে রাজ্যের অনুমোদনের প্রয়োজন নেই।
২০২২ সালে দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে কয়েক কোটি টাকার তছরুপের অভিযোগ ওঠে। আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তদন্ত চেয়ে সিবিআইয়ের দ্বারস্থ হয় ওই ব্যাঙ্ক। তাদের বক্তব্য, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার নিয়ম মোতাবেক ৬ কোটি বা তার বেশি টাকার আর্থিক দুর্নীতির ক্ষেত্রে দেশের অন্যতম ‘প্রিমিয়াম’ তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের দ্বারস্থ হতে পারবে ব্যাঙ্ক। সেই মতো ওই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে যথাযথ তদন্ত চেয়ে আবেদন করা হয়। ব্যাঙ্কের দাবি, প্রায় দু’বছর সময় নেওয়ার পরে সিবিআই জানায়, তারা ওই ঘটনায় তদন্ত করতে পারবে না। কারণ, সরকারি অফিসারদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে গেলে রাজ্যের অনুমতির প্রয়োজন। সিবিআইয়ের দাবি, রাজ্য সরকার তাদের কাছ থেকে সেই অনুমতি প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
আরও পড়ুন:
সিবিআইয়ের ওই বক্তব্য শুনে বিচারপতি ঘোষের পর্যবেক্ষণ, এই যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। এই মামলার ক্ষেত্রে কেন সিবিআইকে অনুমতি নিতে হবে? ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে তদন্ত করতে রাজ্যের অনুমতি লাগে না। সিবিআই নিজের বুদ্ধি প্রয়োগ করে কাজ করুক। তথ্য নথির উপর ভিত্তি করে তদন্ত করা উচিত। তিনি আরও বলেন, ‘‘ স্পষ্ট করে বলছি, কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মী, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে হলে রাজ্যের অনুমোদনের প্রয়োজন নেই।’’ হাই কোর্টের ওই পর্যবেক্ষণের পরে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, আদালতের নির্দেশ মেনে কাজ করবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।