পাহাড়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এসএসসির নিয়ম কাজ করে কি না, সোমবার তা জানতে চাইল কলকাতা হাই কোর্ট। সমতলের সঙ্গে পাহাড়ের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মিল নেই। সে কারণে এই প্রশ্ন তুলেছে আদালত। গোর্খা টেরিটোরিয়াল প্রশাসন (জিটিএ)-র শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্তের উদ্দেশে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি দেখেছি পাহাড়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও প্রক্রিয়া মানা হয় না। সারা রাজ্যে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। কিন্তু পাহাড়ে কেন হয় না? পাহাড়ে কি এসএসসি রয়েছে? তারা কি কাজ করে?’’
পাহাড়ে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই মন্তব্য করেন বিচারপতি বসু। হাই কোর্ট এ-ও জানায়, প্রয়োজনে এক জন আদালত বান্ধব নিয়োগ করা হবে। পাহাড়ের নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়ে তাঁর কাছে জানতে চাইবে আদালত।
রাজ্যের এজি আদালতে জানান, বিচারপতি বসু এখন পাহাড়ে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি করতে পারবেন না। ওই মামলায় বিচারপতির এজলাস পরিবর্তন হয়েছে। বিচারপতি বসু জানান, পাহাড়ে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলায় এই আদালত সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। এখন ওই একই ধরনের মামলা ওই বেঞ্চ শুনতে পারবে কি না, তা নিয়ে রাজ্যকে বক্তব্য জানাতে হবে। আগামী মার্চ মাসে এই মামলার পরবর্তী শুনানি। প্রসঙ্গত, জিটিএ নিয়োগ দুর্নীতির একটি মামলায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি বসু। সেই তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে সন্তুষ্ট নয় আদালত। বিচারপতি জানান, আদালত বান্ধব নিয়োগ করে ওই বিষয়টি দেখতে বলা হবে।
আরও পড়ুন:
জিটিএ মামলায় রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের অভিযোগের ভিত্তিতে বিধাননগর উত্তর থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়। সেখানে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জিটিএ নেতা বিনয় তামাং, তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের নেতা তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য-সহ একাধিক নাম ছিল। সেই অভিযোগে সিবিআইকে অনুসন্ধান করে দেখার নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্টের বিচারপতি বসুর সিঙ্গল বেঞ্চ। এই সংক্রান্ত রিপোর্ট আদালতে দিতে বলা হয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্থাকে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চতর বেঞ্চে যায় রাজ্য। কিন্তু সেখানে ধাক্কা খেতে হয় রাজ্য সরকারকে। ২০২৪ সালের ১৯ এপ্রিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি হরিশ টন্ডন ও বিচারপতি মধুরেশ প্রসাদের ডিভিশন বেঞ্চ সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ বহাল রাখে। যদিও রাজ্য পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে বলে ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি গবইয়ের বেঞ্চ রাজ্যের যুক্তি মেনে নিয়ে জানিয়েছিল, হাই কোর্ট তাড়াহুড়ো করে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। এ বার এই মামলায় পাহাড়ে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে আবার ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিচারপতি বসু। আদালত বান্ধব নিয়োগের কথাও জানালেন।