বছর শেষ হল। জিইয়ে রইল হুগলির তৃণমূল সাংসদ এবং চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়কের বিবাদ। বুধবার বিধায়ক অসিত মজুমদারের প্রসঙ্গ উঠতেই বিরক্ত হলেন সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, আগামিদিনে ওই বিধায়কের কোনও কর্মসূচিকে তাঁকে দেখা যাবে না। তিনি তাঁর মতো কাজ করবেন। বিধায়ক তাঁর মতো।
তৃণমূলের দুই সাংসদ এবং বিধায়কের সংঘাতের সূত্রপাত একটি স্কুলের ক্লাসঘর তৈরি নিয়ে। দু’জনেই দু’জনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দেন। পরে অসিত রচনাকে ‘বোনের মতো’, ‘মায়ের মতো’ বলেও বরফ গলাতে পারেননি। অন্য দিকে, গত বছর থেকে বিধায়ক অসিত চুঁচুড়া বিধানসভা উৎসব শুরু করেছেন। গত বার সেই মেলায় শাড়ির স্টল দিয়েছিলেন সাংসদ। দ্বিতীয় বর্ষের মেলা শুরু আগামী ২১ জানুয়ারি থেকে। বুধবারই তাঁর খুঁটিপুজো করেছেন অসিত। হুগলিতে থাকলেও তিনি কেন সেখানে নেই, এই প্রশ্ন করতেই বিরক্ত হন রচনা। তিনি বলেন, ‘‘উনি যেটা ভাল মনে করেন। সেটাই করুন। ওঁকে ওঁর মতো থাকতে দাও। আমাকে আমার মতো থাকতে দাও।’’ সাংসদ আরও বলেন, ‘‘বিধায়কের কোনও অনুষ্ঠানে আমি যাই না। আগামিদিনেও যাওয়ার ইচ্ছা নেই।’’
এখানেই শেষ নয়, দলের বিধায়কের সঙ্গে তাঁর ‘দ্বন্দ্ব’ প্রসঙ্গে রচনা এ-ও বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওঁকে ভোটের টিকিট দিয়েছেন। আমাকেও টিকিট দিয়েছেন। আমি আমার লোকসভায় যাবতীয় অনুষ্ঠানে (কর্মসূচি) ডাকব। উনি আসবেন কি না, সেটা ওঁর ব্যাপার। আমি তো ওঁর মনের ভিতরে ঢুকে নেই। ওঁর কথা উনি বলছেন, আমি আমার কথা বলছি। আমার অনুষ্ঠানে ওঁর নাম থাকে। কিন্তু উনি আসেন না। না এলে আমি কী করব?’’
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, চুঁচুড়ার যে মাঠে মেলার খুঁটিপুজো করেছেন অসিত, সেখান থেকে খানিক দূরেই তৃণমূলের শহর সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে কম্বল বিতরণের কর্মসূচি করেছেন রচনা। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘চুঁচুড়া পুরসভার অনেক কাউন্সিলর আছেন, যাঁদের ঠিক মতো কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এ নিয়ে ওঁদের প্রচুর ক্ষোভ আছে। আমি মনে করি, আমার এখানে যাঁরা (দলের) শহর সভাপতি আছেন, কাউন্সিলর আছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই খুব ভাল কাজ করেন। আমার একটাই লক্ষ্য, মানুষের পাশে থাকার, মানুষের জন্য কাজ করার। আমি আশা করব, দলের নির্দেশ অনুযায়ী, বিধায়ক কাজ করবেন।’’
‘তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে’ চুঁচুড়ার প্রাক্তন চেয়ারম্যান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় ছিলেন রচনার সঙ্গে। অতীতে অসিতের ‘ছায়াসঙ্গী’ গৌরী ইদানীং বিধায়ককে এড়িয়ে চলেন। চুঁচুড়ার বালিকা বিদ্যালয়ের ক্লাসঘর তৈরি বিতর্কেও অসিতের পক্ষ নিয়েছিলেন গৌরী। তাঁদের প্রসঙ্গ উঠতে রচনা বা গোরীর কারও নাম করেননি অসিত। তাঁর সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, ‘‘দম থাকলে নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়াক।’’