Advertisement
E-Paper

খেজুরিতে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নিতে নির্দেশ কলকাতা হাই কোর্টের

খেজুরি-২ পঞ্চায়েত সমিতির ১৫টি আসনের মধ্যে ১০টিতে একক ভাবে জয়ী হয়েছে বিজেপি। তৃণমূল জিতেছে পাঁচটি আসনে। কিন্তু বোর্ড গঠনের আগেই বিজেপির মণ্ডল সভাপতি এবং তাঁর অনুগামীরা তৃণমূলে যোগ দেন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:৫৭
Calcutta High Court

কলকাতা হাই কোর্ট —ফাইল চিত্র।

এ বার পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনেও পুলিশকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নিতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের নির্দেশ, গত ৫ সেপ্টেম্বর পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনে গন্ডগোলের ঘটনায় যে তিনটি এফআইআর হয়েছে, তার তদন্ত করবেন জেলা পুলিশ সুপার নিজে।

গত ৫ সেপ্টেম্বর পঞ্চায়েত সমিতিতে স্থায়ী সমিতি গঠনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয় খেজুরি-২। জনকায় বিডিওর দফতর লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। আহত হন বিডিও নিজে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিরাট পুলিশ বাহিনী। তার পরেও বোমা-গুলি বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ। ওই দিন ভোট দিতে হাজির হন কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী। সেই সময় বিডিও অফিসে চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। বোমাবাজি, গন্ডগোলে ভোটপর্ব মুলতুবি হয়ে যায়। অন্য দিকে, বিডিও অফিস থেকে বেরিয়ে কাঁথি যাওয়ার পথে সাংসদ শিশিরের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয় তেঁতুলতলা বাজার এলাকায়। বোর্ড গঠন যাতে সুষ্ঠু ভাবে হয়, এই আর্জি নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন জনৈক খুকুমণি মণ্ডল-সহ কয়েক জন। ওই মামলার শুনানি ছিল শুক্রবার।

রাজ্যের তরফে জানানো হয়, সে দিন অশান্তি হওয়ায় বোর্ড গঠন করা সম্ভব হয়নি। আদালত প্রশ্ন করে, ওই দিন নজরদারিতে কত পুলিশ ছিল? রাজ্য জানায় মোটামুটি ২৫০ পুলিশ ছিল। কিন্তু তার পরেও কেন গন্ডগোল এড়ানো গেল না, হাই কোর্টের এই প্রশ্নে রাজ্যের তরফে বলা হয়, বিডিও অফিসের বাইরে পুলিশ মোতায়েন হয়েছিল। কিন্তু ভোটপ্রক্রিয়া চলাকালীন বিডিও অফিসের ভিতরে গন্ডগোল হয়। সে ক্ষেত্রে পুলিশের কিছু করার ছিল না। পাল্টা আদালতের প্রশ্ন, ‘‘কী ভাবে এমন একটা ঘটনা লঘু করে দেখছে পুলিশ! বোমাবাজি হয়েছে। তাতে প্রাণহানি ঘটার আশঙ্কা ছিল।’’ বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘‘এত পুলিশ থাকার পরেও যদি অশান্তি হয়, তবে তা দুর্ভাগ্যজনক।’’

রাজ্য অবশ্য জানায়, সে দিনের ঘটনায় মোট ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দু’টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। পাশাপাশি, সাংসদের গাড়িতে হামলার অভিযোগের ঘটনায় একটি এফআইআর দায়ের হয়েছে। এর পর হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, খেজুরিতে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের সময় আরও বেশি পুলিশ মোতায়েন করতে হবে। পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ভোটাভুটির সময় কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নিতে হবে। সদস্যদের নিরাপত্তার ভার পুলিশকে নিতে হবে। পাশাপাশি যে তিনটি এফআইআর দায়ের হয়েছে, সেগুলির তদন্ত করবেন পুলিশ সুপার নিজে। এ ছাড়া আর বিডিও অফিস নয়, জেলাশাসকের দফতরে বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া হবে বলে নির্দেশ দিল হাই কোর্ট। যদিও বোর্ড গঠনের দিন এখনও ধার্য হয়নি।

উল্লেখ্য, খেজুরি-২ পঞ্চায়েত সমিতির ১৫টি আসনের মধ্যে ১০টিতে একক ভাবে জয়ী হয়েছে বিজেপি। তৃণমূল জিতেছে পাঁচটি আসনে। কিন্তু বোর্ড গঠনের আগেই বিজেপির মণ্ডল সভাপতি এবং তাঁর অনুগামীরা তৃণমূলে যোগ দেন। ওই আট সদস্যের সমর্থনে তৃণমূল বোর্ড গঠন করে। গত মঙ্গলবার সেখানে স্থায়ী সমিতি গঠন ছিল। অঙ্কের হিসাবে বিধায়ক, জেলা পরিষদ সদস্য, পঞ্চায়েত প্রধান মিলিয়ে বিজেপির পাল্লা ভারী ছিল। বিজেপির দাবি, সে কারণেই হামলা করেছে তৃণমূল। অন্য দিকে, শাসকদলের দাবি, এই হামলার নেপথ্যে রয়েছে বিজেপি। তারা বিডিও-কেও হেনস্থা করেছে।

Calcutta High Court Khejuri Panchayat Board Formation TMC BJP West Bengal Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy