কোচবিহারের হরিণচৌরা এলাকায় পুলিশের মারধরে এক মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশকেই মামলা দায়ের করে তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার এই নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এ-ও বলেছেন, আগামী বৃহস্পতিবার তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে হবে পুলিশকে। সে দিনই এই মামলার পরবর্তী শুনানি। এ দিন রাজ্যের উদ্দেশে বিচারপতির মন্তব্য, “মহিলার মৃত্যু যে কারণেই হোক, এফআইআর রুজু করে তদন্ত করা দরকার পুলিশের।” বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, “স্বাভাবিক কারণে হোক, পুলিশের অত্যাচারে হোক বা অন্য দলের সঙ্গে ঝামেলায় হোক, ঘটনার প্রয়োজনীয় তদন্ত করতেই হবে।”
কোর্টের খবর, আমজাদ আলি নামে এক অভিযুক্তকে ধরতে তাঁর বাড়িতে হানা দিয়েছিল কোচবিহার কোতোয়ালি থানার পুলিশ। অভিযোগ, সে সময় আমজাদের মা আম্বিয়া বিবিকে মারধর করে পুলিশ। আম্বিয়ার পরিবারের কৌঁসুলি শামিম আহমেদ কোর্টে জানান, মাঝরাতে পুলিশের ২০-২২ জনের দল হানা দিয়েছিল। কোনও কারণ ছাড়াই বাড়ির সব পুরুষকে গ্রেফতারের বিরোধিতা করেন আম্বিয়া। তাই পুলিশ মারধর করেছিল। মাথায় আঘাত লেগে মৃত্যু হয় তাঁর। আইনজীবীর অভিযোগ, ঘটনার তথ্যপ্রমাণ পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে পুলিশ ও পরিবারকে ভয় দেখানো হচ্ছে। পরিবারের আবেদন পুলিশি অত্যাচারের নিরপেক্ষ তদন্ত করার ও পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিক কোর্ট।
এ দিন রাজ্য কোর্টে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট জমা দেয়। রিপোর্ট দেখে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ রাজ্যের থেকে মৃতার শরীরে আঘাতের বিশ্লেষণ চান। তাঁর পর্যবেক্ষণ, “ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে যে ক্ষতচিহ্ন সব টাটকা, কোন আঘাতের জেরে এই ক্ষত?” রাজ্যের কৌঁসুলি পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, মারধরের ঘটনা ঘটেনি। আকস্মিক হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় আম্বিয়ার। তাঁর দাবি, সম্প্রতি অন্য বাসিন্দাদের সঙ্গে অভিযুক্তের পরিবারের বচসা হয়েছিল। তখন হাতাহাতিও হয়েছিল। তাতেই আহত হয়েছিলেন আম্বিয়া।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)