Advertisement
২৫ মে ২০২৪
Calcutta High Court

অভিষেক অভিযুক্ত না সাক্ষী? ভবিষ্যতে কি মামলায় জড়াতে পারেন? ইডির কাছে জানতে চাইল কোর্ট

অভিষেক-মামলার শুনানিতে হাই কোর্টে ইডি জানায়, তদন্ত এগোলে অভিষেকের জড়িত থাকার বিষয়টি স্পষ্ট হবে। অভিষেকের আইনজীবীর প্রশ্ন, অনুমানের ভিত্তিতেই কি অভিষেককে অপরাধী মনে করছে ইডি?

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৩ ২০:১৯
Share: Save:

অভিষেক অভিযুক্ত না সাক্ষী, ভবিষ্যতে নিয়োগ দুর্নীতিতে কোনও ভাবে জড়িত থাকতে পারেন কি না, ইডির কাছে তা জানতে চাইল কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার অভিষেকের রক্ষাকবচের আবেদন সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে ইডি অবশ্য জানিয়েছে, তদন্তের অগ্রগতি হলে অভিষেকের জড়িত থাকার বিষয়টি স্পষ্ট হবে। অভিষেকের আইনজীবী আবার প্রশ্ন তোলেন যে, নিছক অনুমানের ভিত্তিতেই কি ইডি মনে করছে অভিষেক অপরাধ করেছেন?

বৃহস্পতিবার অভিষেকের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। সওয়াল-জবাব পর্বে তিনি বলেন, “২০১৯ সাল থেকে নিয়োগ মামলার তদন্ত চলছে। অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এত দিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম আসেনি। এখন হঠাৎ একটি স্টেটমেন্টের ভিত্তিতে কী করে অভিষেকের নাম এই মামলায় জড়াতে পারে? এখন কি শুধু অনুমানের ভিত্তিতে অভিষেক অপরাধ করেছে— এমনটা মনে করছে ইডি?”

বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে চলছিল এই মামলার শুনানি। বিচারপতি ঘোষ ইডির উদ্দেশে বলেন, “অভিষেক সাক্ষী না অভিযুক্ত? ভবিষ্যতে তিনি কি কোনও ভাবে এতে জড়িত হতে পারেন?” বিচারপতির প্রশ্নের জবাবে ইডির আইনজীবী বলেন, “তদন্ত চলছে। তদন্ত একটি পর্যায়ে আছে। তদন্তের অগ্রগতি হলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।” নিয়োগ মামলায় ধৃত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র সঙ্গে অভিষেকের যোগাযোগ ছিল, এ কথা জানিয়ে ইডির আইনজীবী বলেন, “সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে যে আমরা গ্রেফতার করেছি, তার সঙ্গে অভিষেকের যোগাযোগ ছিল। তদন্তে তার প্রমাণ আমরা পেয়েছি।” দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি বলেন, “এর পরেও মামলার কোনও পক্ষের যদি আরও কিছু বক্তব্য থাকে, তবে সোমবার আদালতে তা লিখিত আকারে জানাতে হবে।”

এর আগে স্কুলের নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকে নিষ্কৃতি এবং রক্ষাকবচের আবেদন জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিষেক। গত ৩ অগস্ট তাঁর আইনজীবী সিঙ্ঘভি তাঁর সওয়ালে জানান, তাঁর মক্কেল এই মামলার সঙ্গে কোনও ভাবে যুক্ত নন। অভিযুক্তের তালিকায় নাম নেই অভিষেকের। তা সত্ত্বেও আদালতের নির্দেশ মেনে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দফতরে হাজিরা দিয়েছেন তিনি। তদন্তে সহযোগিতা করেছেন। সিঙ্ঘভির যুক্তি, প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত চলছে। কিন্তু কিছুতেই তদন্ত শেষ হচ্ছে না। এই অবস্থায় অভিষেককে তদন্ত থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক। নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তল ঘোষের চিঠির প্রেক্ষিতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এর পরে তাঁর আর কোনও ভূমিকা থাকতে পারে না। সিঙ্ঘভির আবেদন, আদালত তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের রক্ষাকবচ বহাল রাখুক।

অভিষেকের আবেদনের তীব্র বিরোধিতা করে ইডির আইনজীবী এসভি রাজু তাঁর সওয়ালে জানান, নিয়োগ মামলায় ধৃত সুজয়কৃষ্ণ কখনও শিক্ষা দফতরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তাঁর সঙ্গে অভিষেকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। সেই ‘লিঙ্ক’ পাওয়া গিয়েছে। তাই এই অবস্থায় অভিষেকের বিরুদ্ধে তদন্ত কোনও ভাবে বন্ধ করা যায় না। কুন্তলের চিঠি বা অভিষেকের বক্তব্যের সঙ্গে এই তদন্তের কোনও যোগ নেই। নিয়োগ দুর্নীতিতে বিশাল অঙ্কের টাকা লেনদেনের হদিস পেতেই অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল। অর্থের বিনিময়ে চাকরি হয়েছে। এখন তদন্তকারী সংস্থাকে আটকানো উচিত নয়। কিছু না পাওয়া গেলে ‘ক্লিনচিট’ দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court Abhishek Banerjee ED
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE