Advertisement
E-Paper

গ্রুপ সি এবং ডি কর্মীদের ভাতা: রায়দান স্থগিত রাখল হাই কোর্ট, বিচারপতির প্রশ্ন টাকার অঙ্ক নিয়ে, কোন পক্ষ কী কী বলল?

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরিহারা গ্রুপ সি এবং ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়া নিয়ে শুনানি শেষ হল হাই কোর্টে। তবে রায় ঘোষণা স্থগিত রাখলেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২৫ ১৬:৫২
কলকাতা হাই কোর্ট।

কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

চাকরিহারা গ্রুপ সি এবং ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়া নিয়ে শুনানি শেষ হল হাই কোর্টে। তবে রায় ঘোষণা স্থগিত রাখলেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ।

২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলে থাকা প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এই ২৬ হাজার জনের মধ্যে রয়েছেন গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীরাও। গত মে মাসে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেয় যে চাকরিহারা গ্রুপ সি কর্মীদের প্রতি মাসে ২০ হাজার এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের ১৫ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে মামলা করেন অপেক্ষমান তালিকা বা ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরিপ্রার্থীরা। সোমবার সকালেই এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি সিংহ রাজ্যের উদ্দেশে প্রশ্ন তোলেন যে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর কোনও রকম আলোচনা বা স্ক্রুটিনি ছাড়াই কেন তড়িঘড়ি এই ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল?

দুপুরে এই মামলার শুনানিতে ভাতার অঙ্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। রাজ্যের উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, “টাকার পরিমাণ ১৫ হাজার এবং ২০ হাজার হল কেন? কিসের ভিত্তিতে এই অঙ্ক নির্ধারণ করলেন?”

রাজ্যের তরফে আদালতে সওয়াল করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত। তিনি মামলাটির গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন। তাঁর বক্তব্য, মামলা করেছেন অপেক্ষমান তালিকায় প্রার্থীরা। কিন্তু রাজ্যের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তে তাঁদের কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয় বলে জানান এজি। ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা জনস্বার্থ সংক্রান্ত বেঞ্চ না শুনে রিট কোর্ট কেন শুনবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। এজি আদালতে আরও দু’টি যুক্তি দেন। তিনি জানান, যাঁরা ভাতা পাচ্ছেন, তাঁদের মামলায় যুক্ত করা হয়নি। তা ছাড়া শীর্ষ আদালতের নির্দেশের অবমাননা হলে সেটা সুপ্রিম কোর্টই দেখবে বলে জানান এজি। রাজ্যের তরফে এজি জানান, মানবিকতার খাতিরে গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এজির সওয়ালের পর বিচারপতির প্রশ্ন, অতীতে আদালতের নির্দেশে যাঁদের চাকরি গিয়েছে, মানবিকতার খাতিরে রাজ্য তাঁদের জন্য কী পদক্ষেপ করেছে। রাজ্যের তরফে আদালতে জানানো হয়েছিল, সুপ্রিম কোর্টের রায় পুনর্বিবেচনার জন্য ‘রিভিউ পিটিশন’ করা হয়েছে। তাই আদালতের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করা হোক। রাজ্যের উদ্দেশে বিচারপতির প্রশ্ন, সুপ্রিম কোর্টে ‘রিভিউ পিটিশন’ দায়ের হয়েছে বলে কত দিন ভাতা দেওয়া চলবে? কোনও কাজ না-করেই গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীরা ভাতা পেতে থাকবেন কি না, তা-ও রাজ্যের কাছে জানতে চান বিচারপতি।

সওয়াল পর্বে মামলাকারীদের আইনজীবী বলেন, “কে মামলা করবে, তা রাজ্য স্থির করে দিতে পারে না।” বিকাশ জানান যে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পুরো প্যানেল বাতিল হয়েছে। তাই এ ক্ষেত্রে অপেক্ষমান তালিকায় থাকা প্রার্থীরাও মামলা করার দাবিদার। রাজ্যের রিভিউ পিটিশনের আবেদন এখনও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের চেম্বারে পৌঁছোয়নি বলেও আদালতে জানান বিকাশ। এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, “দুর্নীতিগ্রস্তদের বাঁচাতে জনগণের টাকা খরচ করা হচ্ছে।” মামলাকারীদের আর এক আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যাঁরা বেকার, তাঁরা ভাতা পাচ্ছেন না। অথচ সুপ্রিম কোর্ট যাঁদের দাগি বলে চিহ্নিত করে চাকরি বাতিল করেছে, তাঁদের ভাতা দেওয়া হচ্ছে। এটা বেআইনি।”

রাজ্যের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ চান মামলাকারীদের আইনজীবী। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে রায় ঘোষণা স্থগিত রাখেন বিচারপতি সিংহ।

Calcutta High Court Justice Amrita Sinha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy