আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষেদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রয়েছে, তা অত্যন্ত গুরুতর। মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। বিচারপতির মন্তব্য, এই ধরনের দুর্নীতি প্রশাসনের অভ্যন্তরে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং প্রশাসনকেও তা দূষিত করে তোলে বলে মনে করছেন তিনি।
আরজি করের আর্থিক দুর্নীতির মামলা সংক্রান্ত নথি তদন্তকারী সংস্থার থেকে পেতে সমস্যা হচ্ছে। এই অভিযোগ নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন সন্দীপ এবং অন্য অভিযুক্তেরা। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চে। তাতে দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, আদালত মনে করছে এই অভিযোগে আইন মেনে দ্রুত বিচার হলে সাধারণ মানুষের মনে বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা বৃদ্ধি পাবে। হাই কোর্ট আরও জানায়, এই মামলায় সরকারি আধিকারিকেরা যুক্ত রয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগের দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিচার (ট্রায়াল) শুরু করা উচিত।
মঙ্গলবার সন্দীপের আইনজীবী আদালতে জানান, ৪৬২টি নথির মধ্যে সিবিআইয়ের থেকে ২১৬টি নথি তাঁরা পেয়েছেন। বিচারপতি বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, বুধবারের মধ্যে সিবিআইকে এই সংক্রান্ত বাকি নথি দিতে হবে। নথি পাওয়ার পরে অভিযুক্তরা নিজেদের বক্তব্য নিম্ন আদালতে জানাতে পারবেন। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
আরও পড়ুন:
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্দীপদের মামলার শুনানি ছিল হাই কোর্টে। গত শুনানিতে হাই কোর্ট জানিয়েছিল, আরজি করে আর্থিক দুর্নীতি মামলার চার্জশিট সিবিআই দফতর থেকে আনিয়ে পড়ে দেখতে পারবেন সন্দীপ ঘোষ-সহ অন্য অভিযুক্তেরা। তাঁদের সেই সময় দেওয়া হবে। আদালত গত শুক্রবার জানায়, সন্দীপদের চার্জশিট সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথি দিতে হবে সিবিআইকে।
বস্তুত, আরজি করে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ প্রকাশ্যে আনেন হাসপাতালের প্রাক্তন অতিরিক্ত সুপার আখতার আলি। তিনি এই ঘটনায় ইডি এবং সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করাতে চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। প্রাক্তন ডেপুটি সুপারের অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসার সরঞ্জাম কেনার নামে টেন্ডার দুর্নীতি হয়েছিল আরজি করে। হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনিই ‘ঘনিষ্ঠ’দের টেন্ডার পাইয়ে দিয়েছিলেন।
আরজি করে আর্থিক দুর্নীতির মামলায় প্রথম গ্রেফতার হন সন্দীপ। টানা কয়েক দিন সিবিআই দফতরে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে এই মামলার সূত্র ধরে বিপ্লব সিংহ, আফসার আলি এবং সুমন হাজরাকেও গ্রেফতার করেছিলেন তদন্তকারীরা। এই মামলায় শেষ গ্রেফতার আশিস পাণ্ডে। প্রত্যেকেই বর্তমানে জেলবন্দি।