যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজের ক্যাম্পাসে প্রাক্তনীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। প্রাক্তনীদের প্রবেশ এবং প্রস্থানের জন্য নির্দিষ্ট নীতি স্থির করতে বলা হয়েছে। হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, যোগেশচন্দ্র চৌধুরী আইন এবং ডে কলেজের পরিচালন কমিটিকে এই সংক্রান্ত নীতি প্রণয়ন করতে হবে। চাইলেই সবসময় সব প্রাক্তনী কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারবেন না।
সরস্বতী পুজোয় বহিরাগতদের নিয়ে গোলমাল হয়েছিল যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজে। অভিযোগ, কলেজের ভিতরে পুজো করার জায়গা দেওয়া হয়নি যোগেশচন্দ্র ডে কলেজের পড়ুয়াদের। তাঁরা ক্যাম্পাসের বাইরে ইন্দ্রাণী পার্কের সামনে পুজো করতে বাধ্য হয়েছেন। ক্যাম্পাসের ভিতরে পুজো করেছেন যোগেশচন্দ্র আইন কলেজের পড়ুয়ারা। গোলমালের জেরে কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায় ব্যক্তিগত ভাবে ক্যাম্পাসের ভিতরে আলাদা পুজো করেন। রবিবার এই সমস্ত পুজো ঘিরে বিস্তর গোলমাল হয় কলেজে।
আরও পড়ুন:
বুধবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল হাই কোর্টে। বিচারপতি সেনগুপ্তের মন্তব্য, ‘‘একযোগে ১০ হাজার বা ২০ হাজার প্রাক্তনী ‘কলেজে ঢুকব’ বললেই তো আর ঢুকতে দেওয়া যায় না।’’ বিচারপতি জানিয়েছেন, বহিরাগত এবং প্রাক্তনী সমস্যা নিয়ে আলোচনায় বসতে হবে দুই কলেজের পরিচালন কমিটিকে। প্রাক্তনীরা কখন, কী ভাবে কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবেন, কখন বেরোবেন, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট নীতি (পলিসি) তৈরি করতে হবে। সেই নীতি অনুযায়ী প্রাক্তনীদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রিত হবে ক্যাম্পাসের ভিতর।
যোগেশচন্দ্র আইন কলেজ এবং যোগেশচন্দ্র ডে কলেজের ক্লাস হয় একই ক্যাম্পাসে। কলেজের ক্যাম্পাসের ভিতরে পুজো করা নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন যোগেশচন্দ্র আইন বিভাগের এক পড়ুয়া। মামলাকারী অভিযোগ করেছিলেন, যে জায়গায় তাঁরা এত দিন পুজো করে এসেছেন, তা দখল করেছে ডে কলেজ। আবার, ডে কলেজের তরফে আদালতে দাবি করা হয়, তাঁদের পুজোর জায়গায় অস্থায়ী নির্মাণ তৈরি করেছেন বহিরাগতেরা। এই বহিরাগতদের কলেজে প্রবেশের উপর আগেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল হাই কোর্ট। অভিযোগ, সম্প্রতি কলেজে বহিরাগতদের ‘উপদ্রব’ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিতর্কের মাঝেই পুলিশি প্রহরায় কলেজে সরস্বতী পুজো করার নির্দেশ দেয় আদালত। এই ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সরস্বতী পুজোর দিন কলেজে যান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল সাংসদ মালা রায়। সে দিনও কলেজে বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ঘটেছিল।