Advertisement
E-Paper

বিচারপতির ছবি মাড়িয়ে হাই কোর্টে বিক্ষোভ কেন? এটা হতাশার নমুনা? চাকরিপ্রার্থীদের তুলোধনা আদালতের

উচ্চ প্রাথমিকের একটি মামলা কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে বিচারাধীন ছিল। দীর্ঘ দিন কেটে যাওয়ায় মামলাকারীদের মধ্যে তা নিয়ে হতাশা তৈরি হয়েছিল বলে দাবি আইনজীবীর।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৫ ১৯:৪৭
Calcutta High court slams candidates who protested inside court premises

হাই কোর্ট চত্বরে উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ নিয়ে আদালত অবমাননার মামলা। —ফাইল চিত্র।

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতির ছবি পা দিয়ে মাড়িয়ে বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগ উঠেছিল উচ্চ প্রাথমিকের একদল চাকরিপ্রার্থীর বিরুদ্ধে। আদালত অবমাননার সেই মামলায় চাকরিপ্রার্থীদের ভর্ৎসনা করল হাই কোর্ট। শুধুমাত্র মামলার হতাশার কারণে এই ধরনের বিক্ষোভ কি সম্ভব? প্রশ্ন তুলেছে তিন সদস্যের বেঞ্চ। বিচারপতি এবং বিচারব্যবস্থার প্রতি চাকরিপ্রার্থীদের কতটা সম্মান রয়েছে, সেই প্রশ্নও তোলা হয়েছে। চাকরিপ্রার্থীদের তরফে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন তাঁদের আইনজীবী।

উচ্চ প্রাথমিকের একটি মামলা কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে বিচারাধীন ছিল। দীর্ঘ দিন কেটে যাওয়ায় মামলাকারীদের মধ্যে তা নিয়ে হতাশা তৈরি হয়েছিল বলে জানান আইনজীবী। সেই হতাশার বহিঃপ্রকাশ ঘটে আদালত চত্বরে। বিক্ষোভের সময়ে বিচারপতি বসুর ছবির উপর পা তুলে দেন কেউ কেউ। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ-সহ ওই চাকরিপ্রার্থীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা হয়েছিল। অভিযোগ, কুণাল তাঁদের উস্কানি দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার এই মামলা ওঠে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের তিন সদস্যের বিশেষ বেঞ্চে। তাদের প্রশ্ন, ‘‘বিক্ষোভে এক জন বিচারপতির ছবি রাখার অর্থ কী? তাঁর ছবির উপর পা তুলে দেওয়া হচ্ছে! এটা কি হতাশার নমুনা? বিচারপতিকে সম্মান জানাচ্ছিলেন না, এটা তো নিশ্চিত।’’

চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী জানান, দীর্ঘ দিন ধরে মামলা ঝুলে থাকায় তাঁর মক্কেলরা হতাশ। তাঁরা আশা করেছিলেন নিয়োগ হবে। রাজ্যও রাজি ছিল। কিন্তু আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে তাঁদের হতাশার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এটা তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল না। এর জন্য আদালতের কাছে তাঁরা হলফনামা দিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইছেন। যা ঘটেছে, তা দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, ভুল করে ক্ষমা চাইলেই সব মামলার সমাধান হয়ে যায় না। চাকরিপ্রার্থীদের উদ্দেশে বিচারপতি ভট্টাচার্যের মন্তব্য, ‘‘হতাশা থেকে কি এমন আচরণ করা যায়? বিচারপতিকে হুমকি দিচ্ছেন, শাসাচ্ছেন? বিচারপতির ছবি কি রাস্তা থেকে উড়ে এসেছিল?’’ বিচারপতির বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত কোনও আক্রোশ নেই, তবু কেন এই আচরণ করা হল, প্রশ্ন বিচারপতি ভট্টাচার্যের।

কুণালের তরফে এই মামলায় আইনজীবী ছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘রিকশার পিছনেও এখন বিচারপতির ছবি থাকে, এটা কলকাতা হাই কোর্টের সংস্কৃতি ছিল না। এক জন বিচারপতি সব ছেড়ে রাজনীতিতে যুক্ত হবেন, এটাও কি সংস্কৃতি ছিল আমাদের? আদর্শের প্রশ্ন যখন উঠছে, তখন সকলের কথাই বলা দরকার। যে সমস্ত আইনজীবী সে দিন ছিলেন, তাঁরা সকলে রাজনৈতিক দলের সমর্থক।’’ সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত জানিয়েছে, আগামী ৬ অগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।

contempt of court Calcutta High Court Kunal Ghosh Kalyan Banerjee upper primary recruitment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy