E-Paper

সরকারি হাসপাতালে কর্কট রোগের চিকিৎসাও স্বাস্থ্যসাথীর আওতায়

থ্যালাসেমিয়া এবং অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়ার চিকিৎসায় অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের খরচও সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের টাকাতেই মেটানো হবে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৫ ০৯:২৮
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প থেকে কর্কট রোগের চিকিৎসা এবং অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের টাকা এলে ওষুধ কেনায় বিলম্ব হবে না।

স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প থেকে কর্কট রোগের চিকিৎসা এবং অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের টাকা এলে ওষুধ কেনায় বিলম্ব হবে না। —প্রতীকী চিত্র।

সরকারি হাসপাতালে কর্কট রোগীদের (ক্যানসার আক্রান্ত) কেমোথেরাপি, রেডিয়োথেরাপির যাবতীয় ওষুধের খরচ এ বার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প থেকে দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি রক্তজনিত কর্কট রোগ, থ্যালাসেমিয়া এবং অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়ার চিকিৎসায় অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের খরচও সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের টাকাতেই মেটানো হবে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। এই সংক্রান্ত ফাইল ইতিমধ্যে সই হয়ে গিয়েছে এবং কয়েক দিনের মধ্যেই চালু হতে চলেছে।

প্রশ্ন উঠতেই পারে যে, পশ্চিমবঙ্গে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা তো এমনিতেই সম্পূর্ণ নিখরচায় পাওয়া যায়। তা হলে কেন আলাদা ভাবে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পকে এখানে ব্যবহার করা হচ্ছে? স্বাস্থ্য বিভাগের এক শীর্ষ কর্তার ব্যাখ্যা, সরকারি হাসপাতালে ওষুধপত্র, যন্ত্রপাতি কেনাকাটার জন্য রাজ্য বাজেট থেকে অর্থ বরাদ্দ হয়। বিপুল সংখ্যক রোগীর প্রয়োজন মেটাতে যে সব ওষুধ বা চিকিৎসা সামগ্রী সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, কেনাকাটার ক্ষেত্রে সেগুলি প্রাধান্য পায়। বেশির ভাগ টাকা সেখানেই বেরিয়ে যায়।

কেমোথেরাপি, রেডিয়োথেরাপি বা অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের অধিকাংশ ওষুধের দাম এত বেশি (কয়েক লক্ষ টাকা দামের একাধিক ওষুধ রয়েছে) যে, সরকারি বাজেট থেকে সব সময়ে তা কেনা বা জোগান ঠিক রাখা সম্ভব হয় না। সরকারের থেকে সময় মতো টাকা না পেলে, ওষুধ সরবরাহকারীরাও তা দিতে চান না। ফলে বহু কর্কট রোগীকে কেমো বা রেডিয়োথেরাপির ওষুধ এবং তারিখের জন্য হা-পিত্যেশ করে মাসের পর মাস বসে থাকতে হয়। বাধ্য হয়ে অনেকে বাজার থেকে ওষুধ কেনেন। টাকার অভাবে অনেকেই তা পারেন না। তাঁদের চিকিৎসায় দেরি হয়, মাঝপথে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে রোগীর মৃত্যুও হয়।

স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প থেকে কর্কট রোগের চিকিৎসা এবং অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের টাকা এলে ওষুধ কেনায় এই বিলম্ব আর থাকবে না বলে স্বাস্থ্য দফতরের দাবি। ওষুধের জোগানও যথেষ্ট থাকবে। ইতিমধ্যে সরকারি হাসপাতালে অর্থোপেডিক ইমপ্লান্ট এবং হৃদ্‌রোগের চিকিৎসার যন্ত্রপাতির খরচ স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। তার পর থেকেই এই দুই ধরনের অস্ত্রোপচার সরকারি হাসপাতালে অনেক বেড়েছে।

এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘বেসরকারি হাসপাতালে কর্কট রোগের চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে প্রতি বছর রাজ্য সরকারের প্রায় ৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়। অথচ, সরকারি হাসপাতালে এর অর্ধেক টাকায় একই চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচার করা সম্ভব। তাই সরকারি ক্ষেত্রে রেডিয়োথেরাপি, কেমোথেরাপির ওষুধ স্বাস্থ্যসাথীতে কিনে পরিষেবা দিলে সরকারের খরচও কমবে।’’

নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক তুফানকান্তি দলুইয়ের কথায়, ‘‘‘বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেরওষুধপত্রের খরচ অত্যন্ত বেশি হওয়ায় খুব বেশি করা যেত না। কিন্তু আমাদের জানানো হয়েছে, কর্কট রোগের পাশাপাশি বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টের খরচও এ বার থেকে স্বাস্থ্যসাথীতে মেটানো হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Swasthya Sathi Scheme Government Schemes

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy