(বাঁ দিকে) ‘অপহরণের’ সিসিটিভি ফুটেজ। তদন্তে কলকাতা পুলিশ (ডান দিকে)। ছবি: ভিডিয়ো এবং সংগৃহীত।
কলকাতার অতিথিশালা থেকে মথুরাপুরের চার জন জয়ী প্রার্থীকে অপহরণ করার যে অভিযোগ উঠেছিল, পুলিশ তা উড়িয়ে দিল শনিবার। পুলিশ সূত্রে দাবি, আদৌ ওই প্রার্থীদের অপহরণ করা হয়নি। তাঁরা নিজেরাই সুরক্ষার জন্য আত্মগোপন করেছেন। চার প্রার্থী নিজে থেকেই পুলিশকে এ কথা জানিয়েছেন বলে দাবি পুলিশের।
মথুরাপুরের জয়ী তিন বিজেপি প্রার্থী এবং বাম সমর্থিত এক নির্দল প্রার্থীকে পঞ্চসায়র থানা এলাকার একটি অতিথিশালা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগের তির ছিল শাসক তৃণমূলের দিকে। কিন্তু পুলিশ সূত্রে খবর, ওই চার প্রার্থীর সঙ্গে পুলিশের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তাঁরাই জানিয়েছেন, তাঁদের অপহরণ করা হয়নি। চার জনই স্বেচ্ছায় আত্মগোপন করেছেন।
পুলিশ সূত্রে এ-ও দাবি করা হয়েছে, ওই চার জয়ী প্রার্থী বোর্ড গঠনের পর প্রকাশ্যে আসতে চান বলে জানিয়েছেন। নির্বাচনের পরের দিনই তাঁরা মথুরাপুর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন। গত ২৫ জুলাই থেকে পঞ্চসায়রে থাকছিলেন। পুলিশকে তাঁরা জানিয়েছেন, বর্তমানে কলকাতা সংলগ্ন এলাকাতেই আশ্রয় নিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চসায়র থানায় ওসির নামে একটি চিঠি এসেছিল শুক্রবার। ‘অপহৃত’ চার জনের ‘স্বাক্ষর’ থাকা ওই চিঠিতে লেখা ছিল— ‘‘আমাদের কেউ অপহরণ করেনি। আমরা স্বেচ্ছায় গিয়েছি। আমাদের নিয়ে যেন কোনও গুজব না ছড়ানো হয়।’’ যদিও চিঠি ‘অপহৃতেরা’ই লিখেছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। এর পরেই পুলিশ ওই প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ তুলে শুক্রবারেই পঞ্চসায়র থানায় লিখিত ভাবে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন কান্তি। তিনি জানিয়েছিলেন, জয়ী প্রার্থীদের আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে অপহরণ করা হচ্ছে, তার সিসিটিভি ফুটেজও রয়েছে। যদিও সেই ফুটেজের সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। কান্তির অভিযোগ, মথুরাপুর ব্লকের কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের জন্য বিরোধীদের উপর চাপ সৃষ্টি করছিল তৃণমূল। শাসকদলের শাসানি, হুমকিতে মাথা নত না করে মঙ্গলবার রাতে পঞ্চসায়রের অতিথিশালায় আশ্রয় নেন জয়ী প্রার্থীরা। সেখান থেকেই তাঁদের অপহরণ করা হয়েছে।
কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন ১৫টি। এই পঞ্চায়েত ভোটে সেখানে তৃণমূল জেতে চারটি আসনে। সিপিএম পায় তিনটি এবং বিজেপি ছ’টি। দু’টি আসনে জেতেন নির্দল প্রার্থীরা। কান্তির অভিযোগ, শুক্রবার নিরাপত্তার দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ছিল ওই বিরোধী প্রার্থীদের। তার আগে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কান্তির অভিযোগ আগেই উড়িয়ে দিয়েছিল তৃণমূল। শনিবার পুলিশের সূত্রে পাওয়া খবরেও অপহরণের তত্ত্ব খারিজ করে দেওয়া হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy