Advertisement
E-Paper

ভোর থেকে লাইনে, ফর্ম না পেয়ে বাড়ছে ক্ষোভ

গত বার বিশৃঙ্খলা হয়েছিল পরীক্ষার দিন। এ বার গোড়া থেকেই চূড়ান্ত ভোগান্তি হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের টেট পরীক্ষায় বসতে ইচ্ছুকদের। ভোর থেকে লাইন দিয়ে ফর্ম পেতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৫ ০৩:৫১
বিশৃঙ্খলার ছবি। এক সঙ্গে গেট দিয়ে ঢোকার সময় আবেদনকারীদের বাধা দিচ্ছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ায় অভি়জিৎ সিংহের তোলা ছবি।

বিশৃঙ্খলার ছবি। এক সঙ্গে গেট দিয়ে ঢোকার সময় আবেদনকারীদের বাধা দিচ্ছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ায় অভি়জিৎ সিংহের তোলা ছবি।

গত বার বিশৃঙ্খলা হয়েছিল পরীক্ষার দিন। এ বার গোড়া থেকেই চূড়ান্ত ভোগান্তি হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের টেট পরীক্ষায় বসতে ইচ্ছুকদের।

ভোর থেকে লাইন দিয়ে ফর্ম পেতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বাড়ছে ক্ষোভ। হচ্ছে অবরোধ। পরিস্থিতি সামলাতে তেড়ে যাচ্ছে পুলিশ। জেলায় জেলায় ফর্ম বিলি ঘিরে নানা অব্যবস্থার মাসুল দিচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা।

বাঁকুড়া জেলায় শুধু বাঁকুড়া শহরে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের দফতর থেকে ফর্ম বিলি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে সেখানে ছিল লম্বা লাইন। এক সঙ্গে অনেকে গেট ঠেলে দফতরের ভিতরে ঢুকতে গেলে ঝামেলা বাধে। অবস্থা সামাল দিতে পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যায়। হুড়োহুড়ি পড়ে। পাথরে পড়ে ফর্ম তুলতে আসা এক মহিলার হাত কাটে। পুলিশের ভয়ে ছুটতে গিয়ে কিছু যুবক মাঝরাস্তায় চলে গেলে যানজট হয়।

ফর্ম বিলি ঘিরে এ দিন ধুন্ধুমার বাধে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরেও। চিড়িয়ামোড়ে যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা থেকে ফর্ম বিলি হচ্ছিল সেখানে রটে যায়, বুধবার যে ১৮০ জন ফর্ম পাননি, শুধু তাঁদেরই ফর্ম দেওয়া হবে। এর পরেই ক্ষুব্ধ আবেদনকারীরা রাস্তায় নেমে আসেন। ব্যারাকপুর স্টেশনে যাওয়ার এস এন ব্যানার্জী রোডে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি সামলায়। ব্যাঙ্কও অতিরিক্ত ফর্ম বিলির কথা ঘোষণা করে।

হুগলির আরামবাগে এ দিন সন্ধ্যার পরেও ফর্ম তোলার লাইনে ছিলেন অনেকে। এ দিনের মতো ফর্ম দেওয়া শেষ হয়েছে জেনে তাঁরা খেপে ওঠেন। লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যায় পুলিশ। দু’পক্ষের ধস্তাধস্তিতে এক মহিলা-সহ দুই চাকরিপ্রার্থ়ী আহত হন। আবার ফর্ম তোলায় হয়রানির অভিযোগে চাকরিপ্রার্থীরা এ দিন প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পথ অবরোধ করেন উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে। ইসলামপুরে ভিড় সামলাতে নামে র‌্যাফ। হাওড়া ময়দান ও কদমতলাতে টেটের

লাইনে বিক্ষিপ্ত গোলমাল হয়। উলুবেড়িয়ায় দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তোতন মণ্ডল নামে এক যুবক।

গত ২৯ জুন থেকে জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে টেট পরীক্ষার ফর্ম বিলি। চলবে ৪ জুলাই পর্যন্ত। এ বার এমনিতেই পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বিপুল হওয়ার কথা। কারণ, আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ৪০ বছর। আর উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০ শতাংশ নম্বর পেলেই আবেদন করা যাবে। তার উপরে অনলাইনে ফর্ম পূরণের ব্যবস্থা চালু হয়নি। পরীক্ষার্থী সংখ্যার অনুপাতে ফর্ম বিলি করার কেন্দ্রও যথেষ্ট নয়। যেমন বর্ধমান, বাঁকুড়ার মতো জেলায় ফর্ম বিলির একটি মাত্র কেন্দ্র হয়েছে। সব মিলিয়েই অবস্থা জটিল হচ্ছে।

কেন অনলাইন-ব্যবস্থা চালু করা হল না? পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের যুক্তি, অনলাইনে অ্যাডমিট-কার্ড পেতে বিস্তর সময় লাগত। এ ক্ষেত্রে ফর্ম জমা দিলেই হাতেহাতে অ্যাডমিট-কার্ড পাচ্ছেন পরীক্ষার্থীরা।

যদিও টেট-এর ফর্ম পেতে আবেদনকারীদের যে সমস্যা হচ্ছে, তা নিয়ে এ দিন বিধানসভার স্থায়ী কমিটিতেও আলোচনা হয়। আরও বেশি জায়গা থেকে ফর্ম বিলি এবং ফর্ম জমা দেওয়ার দিন আরও বাড়ানোর জন্য স্কুলশিক্ষা দফতরের কাছে আর্জি জানিয়েছে কমিটি।


টেট পরীক্ষার ফর্ম তুলতে লম্বা লাইন জিটি রোডে। ছবি: উদিত সিংহ।

ভোগান্তির কথা মানছেন পর্ষদ কর্তৃপক্ষও। পর্যদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কিছু জেলার সমস্যার কথা জেনেছি। পরিস্থিতি অনুযায়ী, ফর্ম বিলি কেন্দ্রের সংখ্যা এবং সময়সীমাও বাড়ানো হচ্ছে।’’ পুলিশের সঙ্গে এ দিন আবেদনকারীদের ধস্তাধস্তি হয় বসিরহাটে। জামরুলতলার কাছে অবস্থা সামাল দিতে পুলিশ রিভলভার ও লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। তবে তা মানেনি পুলিশ। বারুইপুরে আবার বিকেল ৪টের পরে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক ফর্ম বিলি বন্ধ করে দিলে চাকরিপ্রার্থীরা রাস্তা অবরোধ করেন। আলিপুরদুয়ারে আবার অন্য সমস্যা। অভিযোগ, ফর্মে নবগঠিত আলিপুরদুয়ার জেলার নাম বা কোড নেই। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রের দাবি, ফর্ম ছাপানোর পরে জলপাইগুড়ি জেলা ভাগ হয়ে আলিপুরদুয়ার নতুন জেলা হয়েছে। তাই এ বার ফর্মে জলপাইগুড়ির কোড দিতে হচ্ছে।

tet candidates fume candidates fume tet candidates queue hoogly tet problem bankura tet problem tet form lines tet form collection lines birbhum tet lines malda tet form lines
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy