নির্দিষ্ট বয়ঃসীমার পরে সরকারি চাকরি পাওয়া তো দূরের কথা, নিয়োগ পরীক্ষাতেই বসা যায় না। কিন্তু এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশন সেই বয়স পেরিয়ে যাওয়া প্রার্থীদেরও নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষকপদে চাকরির সুযোগ দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ১৯৩ জন চাকরিপ্রার্থী। গত সোমবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে মামলাটি উঠেছিল। উচ্চ আদালত সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহে মামলাটি শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হতে পারে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, আবেদনকারীরা ওই মামলার নথিতে এমন অন্তত ১২ জনের নাম দিয়েছেন, বয়স পেরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও যাঁরা স্কুলে নিয়োগের জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছেন। মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত ও বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, স্কুলশিক্ষকের চাকরির জন্য পরীক্ষায় বসার সর্বাধিক বয়স ৪০ বছর। অভিযোগ, ২০১৬ সালে পরীক্ষায় বসার সময় ওই ১২ জন প্রার্থীর বয়স ৪০ পেরিয়ে গিয়েছিল। তাঁদের কারও কারও বয়স তখন ছিল ৪৩-এরও বেশি।
সুদীপ্ত বলেন, ‘‘বয়স পেরিয়ে যাওয়ায় ওই ১২ জনের আবেদন গ্রাহ্য হওয়ার নয়। অথচ তাঁদের আবেদন গৃহীত হয়েছিল, তাঁরা পরীক্ষাও দেন, পাশ করেন। এবং তার পরে তাঁদের নিয়োগের তালিকাভুক্ত করা হয়!’’
নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষকপদে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সিবিআইয়ের তদন্ত চলছে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে (অন্য একটি মামলায়) মঙ্গলবারেই অবৈধ ভাবে নিযুক্ত ৪০ জন শিক্ষকের নাম, রোল নম্বর এবং ‘ওএমআর শিট’ বা উত্তরপত্র প্রকাশ করেছে এসএসসি। সেখানেও দেখা গিয়েছে, অনেকে কার্যত ফাঁকা উত্তরপত্র জমা দেওয়া সত্ত্বেও চাকরি পেয়ে গিয়েছেন! এমনকি, ভুল পদ্ধতিতে ওএমআর শিট পূরণ করেও মিলেছে চাকরি। সেই সূত্র ধরেই প্রশ্ন উঠেছে, বয়স পেরিয়ে যাওয়ায় যেখানে আবেদন বাতিল করে দেওয়ার কথা, সেখানে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হল কী করে? চাকরিই বা মিলল কী ভাবে?