বিকাশ ভবনের ওয়্যারহাউসে (গুদাম ঘর) ডাঁই করা ৩০টি বস্তা। যা ঘেঁটে বিবিধ নথি যাচাই করেই প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে প্রভাবশালী সাংসদ, বিধায়কদের সুপারিশপত্র মিলেছে বলে দাবি সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের।
তদন্তকারীদের কথায়, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশের পর একাধিক বার বিকাশ ভবনের ওয়্যারহাউসে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছিল। তখনই বস্তার নথিতে নজর পড়ে।
তবে তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, ওই ঘরে প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ বস্তা বোঝাই নথি রাখা ছিল। কিন্তু ৩০টি বস্তা ঘরের এক দিকে আলাদা করে রাখা হয়েছিল। মামলার এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, ‘‘প্রথমে এত বস্তা দেখে অথৈ সাগরে পড়েছিলাম। আমাদের তো খড়ের গাদায় ছুঁচ খোঁজার দশা হয়েছিল। খুঁজে নেওয়ার মতন অবস্থা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ৩০টি বস্তা এক দিকে আলাদা ভাবে রাখায় চোখে পড়ছিল। পরে বোঝা গেল, তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ নথি ওই সব বস্তার ভিতরেই ঢোকানো।’’ বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের কোনও এক জন কর্তার উপস্থিতিতে তল্লাশি অভিযানটি চালানো হয়েছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে দাবি করা হচ্ছে। ক্রমশ ধাপে ধাপে প্রতিটি বস্তা থেকে নথিপত্র যাচাই করা শুরু হয় বলে তদন্তকারীদের সূত্রের খবর।
তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, বিকাশ ভবনে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য ও শিক্ষা দফতরের নির্দিষ্ট কয়েক জন আধিকারিক নিয়মিত বৈঠক করতেন। আর ওই সব বৈঠকে নানা সুপারিশ অনুযায়ী প্যানেল বহির্ভূত প্রার্থী তালিকা তৈরি করে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে। দাবি, ফোনের ‘টেক্সট মেসেজ’ এবং ‘ওয়টস্যাপ চ্যাটের’ মাধ্যমেও প্রার্থী তালিকা তৈরি করা হয়েছিল বলে সূত্র মিলেছে।
প্রসঙ্গত, সাংসদ বিধায়কদের তালিকা অনুযায়ী ৩২৪ জনের সুপারিশপত্র নথি আকারে আদালতে জমা দিয়েছে সিবিআই। তার মধ্যে ১৩৪ জনের প্রাথমিকে চাকরি হয়েছে। সিবিআই কর্তাদের কথায়, ওই সব সুপারিশ পত্রের ভিত্তিতে আরও তদন্ত করা হচ্ছে। প্রয়োজনে আরও তথ্য আদালতে পেশ করা হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)