একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষার ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়েছিল বলে আদালতে এক সাক্ষীর লিখিত বয়ান পেশ করল সিবিআই। সোমবার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় আলিপুর সিবিআই বিশেষ আদালতে এসএসসি-র ডেটা অপারেটর শঙ্করপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।
এ দিন সিবিআইয়ের তরফে শঙ্করকে ওই মামলায় তৃতীয় সাক্ষী হিসেবে আদালতে পেশ করা হল। পাশাপাশি তাঁর লিখিত বয়ান বিচারকের কাছে পেশ করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। আদালত সূত্রে খবর, ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে এসএসসি-র ডেটা অপারেটর পদে যোগ দিয়েছিলেন শঙ্কর। সিবিআইয়ের তরফে ২০২২-এর জুলাই এবং ২০২৩-এর জানুয়ারিতে শঙ্করের বয়ান লিপিবদ্ধ করা হয়। লিখিত বয়ানে শঙ্করের দাবি, ২০১৯-এ একটি বেসরকারি সংস্থা মারফত নিয়োগের সমস্ত ওএমআর শিট নষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। এসএসসি-র তৎকালীন সচিব অশোক সাহা এবং প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিংহ সব জানতেন এবং ওএমআর নষ্ট করার সময়ে এসএসসি-র কোনও কর্মীকে রাখা হয়নি বলেও দাবি।
শঙ্কর লিখিত বয়ানে জানিয়েছেন, ২০২০ সালের লকডাউনের সময়ে এসএসসি-র ২৫ শতাংশ কর্মীকে কাজে লাগিয়ে জরুরি ভিত্তিতে নানা পরীক্ষার প্রার্থীদের জন্য নিয়োগপত্র তৈরি করে বিলি করে দেওয়া হয়। শঙ্কর-সহ পাঁচ জন ডেটা অপারেটরকে নিয়োগপত্র বিলি করে প্রার্থীদের সই করিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন শান্তিপ্রসাদ। তৎকালীন সচিব পুরো বিষয়টি দেখাশোনা করেছিলেন। আলাদা একটি ছোট অফিস থেকে নিয়োগপত্র বিলি করা হয়েছে বলেও শঙ্কর জানান।
শঙ্করের বয়ান, ওই সময়ে তিনি এসএসসি অফিসে অনেকগুলি ফাঁকা ওএমআর শিট দেখেছিলেন। শান্তিপ্রসাদের নির্দেশ অনুযায়ী, প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করে নিয়োগপত্র বিলি করা হয়েছিল বলে জানান তিনি। এ দিন তাঁর লিখিত বয়ানের প্রেক্ষিতে আদালতে সাক্ষ্য দেন শঙ্কর।
শান্তিপ্রসাদের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত বলেন, “ডেটা অপারেটরের লিখিত বয়ান ভিত্তিহীন।” শঙ্করের বয়ানের কোনও প্রামাণ্য নথি আছে কি না, জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেন তিনি। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী আদালতে বলেন, “ডেটা অপারেটরের লিখিত বয়ানে আমার মক্কেল প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর কোনও উল্লেখ নেই। আমার মক্কেল নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত নন বলে দাবি করছেন। ধীরে ধীরে ওই দাবি স্পষ্ট হচ্ছে।” পরের সাক্ষ্যগ্রহণ ২৭, ২৮ ও ২৯ অক্টোবর।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)