Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কুণাল কি তৃণমূলে? প্রশ্ন এবং বিড়ম্বনা

সম্প্রতি শিলংয়ে রাজীব কুমারকে সিবিআই-এর জিজ্ঞাসাবাদের সময়েও ডাক পেয়ে সেখানে হাজির ছিলেন কুণাল। তিনি ওই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে সেখানে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:২১
Share: Save:

তিনি তৃণমূলের বিভিন্ন মঞ্চে থাকছেন। আবার সিবিআইয়ের জেরার মুখে অভিযোগ করছেন, ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থা নিয়ে তদন্তের জন্য রাজ্য সরকার-গঠিত সিট-এর দায়িত্বে থাকাকালীন আইপিএস অফিসার রাজীব কুমার নিরপেক্ষ ভূমিকা নেননি। বর্তমানে কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার, যাঁর বাড়িতে সিবিআই হানার বিরুদ্ধে ধর্নায় বসেছিলেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ভাবেই নিজের ভূমিকাকে ক্রমশ বিতর্কের কেন্দ্রে নিয়ে এসেছেন তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ।

সম্প্রতি শিলংয়ে রাজীব কুমারকে সিবিআই-এর জিজ্ঞাসাবাদের সময়েও ডাক পেয়ে সেখানে হাজির ছিলেন কুণাল। তিনি ওই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে সেখানে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছেন। কুণালের বক্তব্য, ওই অফিসার সিট-এর প্রধান থাকাকালীন তাঁকে সারদা-তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে ‘অন্যায়ভাবে’ হেনস্থা করেছেন। তার সঙ্গে দলীয় রাজনীতির যোগ নেই।

তৃণমূল সূত্রের খবর, কুণালের এ হেন ‘দ্বিচারিতা’য় দল নানা ভাবে অস্বস্তিতে পড়ছে। যদিও দ্বিচারিতার প্রশ্নে কুণালের যুক্তি, ‘‘আমি তৃণমূলেই আছি। দলের বিরুদ্ধে কখনও কোনও কথা বলিনি। দলনেত্রীর অনুগত সৈনিক আমি। আমার আইনি লড়াই আর রাজনীতি সম্পূর্ণ আলাদা।’’ যুক্তি নস্যাৎ করে তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘‘যাঁদের কার্যকলাপে দল অসুবিধায় পড়ে, তাঁরা দলের কেউ হতে পারেন না।’’ তা হলে গত বছর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে তাঁকে দেখা গেল কেন? মাসখানেক আগে শ্যামবাজারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি সভাতেও তিনি মঞ্চে উঠলেন কী ভাবে? দলের ওই নেতার ব্যাখ্যা, ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে অনেকেই যান। শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী অনেকেই থাকেন। তবে শ্যামবাজারের সভামঞ্চে তিনি কী ভাবে পৌঁছলেন, তার স্পষ্ট জবাব দলের কাছে মেলেনি।

আরও পড়ুন: আত্মঘাতী হয়েছেন তিনশোরও বেশি মানুষ

সারদা-কাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে কুণাল গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন জেলে ছিলেন। সেই সময় তিনি তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ। পরে দল তাঁকে সাসপেন্ড করে। যদিও কুণালের দাবি, তিনি এ ব্যাপারে এখনও কোনও চিঠি পাননি। বরং ৩৪ মাসে জেলে থাকাকালীন দলকে ১০ হাজার টাকা করে মাসিক চাঁদা দিয়েছেন। তাঁর আরও দাবি, দলের ‘অগোচরে’ তিনি কোনও পদক্ষেপ করেন না।

শিলংয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘‘আমার জামিনের শর্ত হল, সিবিআই ডাকলেই যেতে হবে। ডেকেছে, তাই গিয়েছি।’’

দলনেত্রী মমতাকে গ্রেফতারের দাবি তুলে আলোড়ন ফেলেন তিনি। এটা কি দলের ‘অনুগত’ সৈনিকের কাজ? কুণালের সাফাই, ‘‘ও সব দু’বছর আগের কথা। তখন হয়তো কিছু ক্ষোভ ছিল। তাকেই খাড়া করে এখন আমার বিরুদ্ধে কাজে লাগানো হলে তা দুর্ভাগ্যের।’’ তৃণমূলের অন্দরের খবর, কুণাল যাতে কোনও ভাবেই দলের কর্মসূচিতে যোগ দিতে না পারেন, সে দিকে সতর্ক নজর রাখা হবে। দলের দৃষ্টিতে কুণালের ‘বিশ্বাসযোগ্যতা’ এবং ‘গ্রহণযোগ্যতা’ কোনওটাই নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kunal Ghosh CBI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE