Advertisement
E-Paper

সিপি-র বাসভবনে কেন রবিবারেই সিবিআই, অনুমতি দেখাতে অসুবিধা কী

প্রশ্ন যে উঠছে, তার কারণ, প্রথমত, ব্যক্তি রাজীব কুমার নন, এটা কলকাতা পুলিশের মতো বিশাল এক পুলিশবাহিনীর প্রধানের সরকারি বাসভবন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫২
রাজীব কুমারের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই।

রাজীব কুমারের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই।

সপ্তাহে তো সাত-সাতটা দিন। রবিবারটা ছুটি। তা, সেই ছুটির দিনের সন্ধ্যাতেই আগাম কোনও খবর না-দিয়ে সিবিআই আচমকা কলকাতা পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে হানা দিল কেন, প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।

প্রশ্ন যে উঠছে, তার কারণ, প্রথমত, ব্যক্তি রাজীব কুমার নন, এটা কলকাতা পুলিশের মতো বিশাল এক পুলিশবাহিনীর প্রধানের সরকারি বাসভবন। দ্বিতীয়ত, সিবিআইয়ের যুক্তি, বারবার নোটিস দেওয়া সত্ত্বেও রাজীব তাদের দফতরে হাজির হননি। তাঁকে জেরা করার প্রয়োজন ছিল। ছিলই যদি, সেটা সোমবারেও তো করা যেত। রবিবার কেন? রবিবারেই বা কেন? সোমবার সকালে রাজীবের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁর কর্মস্থল লালবাজারেও যাওয়া যেত।

সিবিআই অফিসারদের যুক্তি, এত দিন ধরে এত বার নোটিস পাঠিয়েও রাজীবকে পাওয়া যায়নি। প্রতি বারেই কোনও না-কোনও অজুহাত দেখিয়ে তিনি পাশ কাটিয়ে গিয়েছেন। তা-ই...।

আরও পড়ুন: রাজীব চোর? আমি চোর? পুলিশের উপর রাজনৈতিক আক্রমণ হলে ছাড়ব না: মমতা

কিন্তু তার পরেও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, রাজীব কুমারের মতো এডিজি পদমর্যাদার অফিসারকে জেরা করার জন্য ডিএসপি পদের এক জন অফিসারকে পাঠানোর অর্থ কি ইচ্ছা করে অপমান করার চেষ্টা নয়?

রবিবার সন্ধ্যায় সিবিআইয়ের সেই ডিএসপি তথাগত বর্ধন দলবল নিয়ে যখন লাউডন স্ট্রিটে কমিশনারের বাড়ির সামনে পৌঁছন, তাঁর কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চান ঘটনাস্থলে উপস্থিত কলকাতার দক্ষিণ শাখার ডেপুটি কমিশনার মিরাজ খালিদ। আইনজীবীদের বক্তব্য, মামলার মুখ্য তদন্তকারী অফিসার প্রয়োজনে যে-কাউকে জেরা করতে যেতেই পারেন। কিন্তু সে-ক্ষেত্রে তাঁর কাছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতিপত্র থাকা জরুরি। প্রশ্ন উঠছে, মিরাজ দেখতে চাওয়া সত্ত্বেও তথাগত সেই নথি দেখাতে পারলেন না কেন?

প্রশ্ন উঠছে, বারবার ডাকা সত্ত্বেও রাজীব যদি তদন্তকারীদের সঙ্গে দেখা না-করে থাকেন, তা হলে সে-কথা তো আদালতকেও জানাতে পারত সিবিআই। তারা সেই রাস্তা নিল না কেন? কলকাতার পুলিশ কমিশনারের মতো এক জন অফিসারের বাড়িতে এ ভাবে ঢুকতে গেলে যে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে, ওই কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা কি তা জানত না? নাকি, পুরোটাই বিশেষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত?

রবিবার ছিল সিবিআইয়ের অস্থায়ী ডিরেক্টর হিসেবে নাগেশ্বর রাওয়ের কাজের শেষ দিন। সোমবার ওই সংস্থার ডিরেক্টর-পদে যোগ দেন ঋষিকুমার শুক্ল। সিবিআই সূত্রের খবর, এত দিন ধরে বারবার ডাকার পরেও রাজীব হাজির না-হওয়ায় শনিবার রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে চিঠি লেখেন নাগেশ্বর। ফোনেও কথা হয় তাঁদের। নাগেশ্বর অনুরোধ করেন, রাজীব যাতে অবিলম্বে সিবিআই অফিসে গিয়ে দেখা করেন, সেই বিষয়ে উদ্যোগী হোন ডিজি। সিবিআইয়ের দাবি, রবিবার সকালে রাজীব সল্টলেকে সিজিও কমপ্লেক্সে যাবেন বলে কথা দেন ডিজি। সেই অনুযায়ী কলকাতায় নতুন যোগ দেওয়া সিবিআইয়ের এসপি পিসি কল্যাণ অন্য অফিসারদের নিয়ে রবিবার সকালে হাজির হন সিজিও কমপ্লেক্সে। সারা দিন অপেক্ষা করেন। সিবিআইয়ের দাবি, বিকেলের পরে রাজীবের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন তাঁরা। জবাব না-পেয়ে সন্ধ্যায় ঠিক হয়, সিপি-র বাড়িতে যাওয়া হবে।

ডিজি কথা দেওয়ার পরেও রাজীব সিবিআই অফিসে গেলেন না কেন?

নবান্ন সূত্রের খবর, ডিজি সিবিআই অফিসে রাজীবকে পাঠানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেও উপর মহল থেকে চাপ আসে। তাঁকে বলা হয়, কোনও অবস্থাতেই সিবিআইয়ের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন না রাজীব।

CBI vs Kolkata Police CBI Rajeev Kumar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy