Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
CBI vs Kolkata Police

সিবিআই জেরায় ছাড় নেই, জমা রাখতে হবে পাসপোর্টও, তবে আপাতত বহাল রাজীবের রক্ষাকবচ

তবে তিনি কলকাতা ছেড়ে কোথাও যেতে পারবেন না। তাঁর পাসপোর্টও জমা রাখতে হবে। অর্থাৎ রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করা যাবে না বলে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি প্রতীক প্রকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশ কর্তার আইনি রক্ষাকবচ বজায় রাখলেন।

কলকাতা হাইকোর্টে রক্ষাকবচ বহাল রাজীব কুমারের।

কলকাতা হাইকোর্টে রক্ষাকবচ বহাল রাজীব কুমারের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৯ ১৭:০৬
Share: Save:

সিবিআই জেরার মুখোমুখি হতেই হবে কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে তদন্তে সব রকম সহযোগিতাও করতে হবে তাঁকে। রাজীবের করা মামলার শুনানির শেষে বৃহস্পতিবার এমন নির্দেশই দিল কলকাতা হাইকোর্ট।

তবে হাইকোর্ট এ দিন এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে এখনই রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করা যাবে না। আগামী ১২ জুন হাইকোর্টের ছুটি শেষ হলে রেগুলার বেঞ্চ এই মামলা ফের শুনবে। অন্তত সেই সময় পর্যন্ত গ্রেফতার করা যাবে না তাঁকে। যদিও এ দিন বিচারপতি প্রতীকপ্রকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজীবের রক্ষাকবচ এ দিন থেকেই বহাল থাকছে। হাইকোর্ট খোলার পর আরও একমাস রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করা যাবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু আইনজীবীদের একাংশ মতে, ১২ তারিখ রেগুলার বেঞ্চ অন্য কোনও রায়ও দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে এটা বলাই যায় আগামী ১২ তারিখ পর্যন্ত রাজীবের গ্রেফতারির সম্ভবনা নেই।

এ দিন রাজীব কুমার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে আবেদন করেন যে, সিবিআইয়ের পাঠানো সমন আইনগত দিক থেকে ত্রুটিপূর্ণ। আদালত ওই সমনকে খারিজ করুক। সেই মামলার শুনানিতেই রাজীবের রক্ষাকবচ বহাল রাখলেন বিচারপতি। রক্ষাকবচ বহাল রাখার পাশাপাশি এ দিন বিচারপতি একগুচ্ছ নির্দেশ দেন। আদালত এ দিন স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে যে, কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার কলকাতা ছেড়ে কোথাও যেতে পারবেন না। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর পাসপোর্টও জমা দিতে হবে। সিবিআইকে জানাতে হবে কোন ঠিকানায় এবং কোন ফোন নম্বরে তাঁকে পাওয়া যাবে। তাঁকে জেরার জন্য সিবিআই ডাকলে অবশ্যই তাঁকে যেতে হবে, তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে।

আরও পড়ুন: অর্ণবকে জেরা করতেই সারদার ২ ট্রাঙ্ক নথির হদিশ! কোথায় ছিল এত নথি, উঠছে প্রশ্ন

কলকাতায় রাজীবের উপস্থিতি নিয়ে যথেষ্ট কড়া বিচারপতি। তিনি নির্দেশ দেন, প্রতি দিন বিকেলে সিবিআইয়ের আধিকারিকরা তাঁর বাড়িতে গিয়ে তাঁর উপস্থিতি নথিভুক্ত করবেন। তাঁর কোনও চিকিৎসার প্রয়োজন হলেও তা কলকাতার হাসপাতালেই করতে হবে।

বিচারপতি এ দিন বলেন, জেরার সময় একাই যেতে হবে রাজীব কুমারকে, কোনও তৃতীয় পক্ষ উপস্থিত থাকতে পারবে না। এ দিন রাজীব কুমারের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী সুদীপ্ত মৈত্র। তিনি বলেন, ‘‘রাজীব কুমারকে ৩৯ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট ইতিমধ্যেই জেরা করা হয়েছে।” তিনি সওয়াল করেন, ২০১৩ সালের সারদা মামলায় তাঁর নাম এফআইআরে নেই। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও চার্জশিটও নেই। সেই কারণেই তাঁকে আইনি রক্ষাকবচ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। এ দিন সিবিআইয়ের হয়ে সওয়াল করেন ওয়াই জে দস্তুর। তিনি বলেন, ‘‘রাজীব কুমার সিবিআইয়ের নোটিস মেনে হাজিরা দেননি।’’ সুদীপ্ত মৈত্র সওয়াল করেন সিবিআই রাজীব কুমারকে মামলার সাক্ষী হিসাবে সমন করেছে। এর আগে তিনি সিবিআইকে তদন্তে সহযোগিতা করেছিলেন। তার পরেও সিবিআই তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চাইছে।

দু’পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে বিচারপতি এ দিন রাজীবকে আপাতত গ্রেফতারি থেকে ছাড় দিয়ে কিছুটা হলেও ওই পুলিশ কর্তাকে স্বস্তি দিয়েছেন। হাইকোর্টের আইনজীবী পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করতে হাইকোর্ট নিষেধ করলেও, কার্যত তাঁকে নজরবন্দি করার নির্দেশ দিয়েছে। হাইকোর্ট যে যে বিধি নিষেধ আরোপ করেছে তা নজরবন্দিরই সমান।” যদিও আইনজীবীদের অন্য একটি অংশ আইনত নজরবন্দি বলতে নারাজ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rajeev Kumar Calcutta High court CBI Sarada scam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE