হাওড়ার বালিতে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান দেবব্রত মণ্ডলকে (বাবু) লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনায় সিন্ডিকেট সংক্রান্ত বিবাদ রয়েছে বলে মনে করছেন বিরোধীরা। বিরোধীদের দাবি, সাঁপুইপাড়া-বসুকাটী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দেবব্রত এলাকায় বালি-সিমেন্টের ব্যবসা করতেন। তাঁর দাপটে অন্য ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারতেন না বলে অভিযোগ। বিজেপির অভিযোগ, ওই এলাকার দুষ্কৃতী বাসু চৌধুরী বালি-সিমেন্টের ব্যবসায় নামতে চাইলে দেবব্রত বাধা দিচ্ছিলেন। সেই বিবাদের কারণেই বৃহস্পতিবার রাতের ওই ঘটনা বলে দাবি পদ্মশিবিরের।
তৃণমূলের অবশ্য অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধানের উপর হামলার নেপথ্যে বিরোধীরা রয়েছে। হাওড়া সদর তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সভাপতি কৈলাশ মিশ্রের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বিজেপি। তবে এই অভিযোগ মানতে নারাজ পদ্মশিবিরের নেতারা। তাঁদের পাল্টা দাবি, সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও বাসুকে গুলি চালাতে দেখা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘটনার সময়কার একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে (যদিও এটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)। সেখানে দেখা যাচ্ছে এক জনের বাইকে চেপে আসছেন দেবব্রত। আগে থেকেই অপেক্ষা করা আততায়ী সামনে এগিয়ে গুলি করছেন পঞ্চায়েত সদস্যকে লক্ষ্য করে। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর বাইক থেকে রাস্তায় পড়ে যাওয়ার পরেও অভিযুক্তকে আটকানোর চেষ্টা করছেন পঞ্চায়েত প্রধান। দু’জনকে ধস্তাধস্তি করতেও দেখা যাচ্ছে। অন্য দিকে, গুলি চলার পরেই বাইকের গতি বাড়িয়ে চলে যাচ্ছেন প্রধানের সঙ্গী।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ১০টা নাগাদ বাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন ওই পঞ্চায়েত প্রধান। নিশ্চিন্দা এলাকার বুড়ো শিবতলার কাছে তাঁর উপর হামলা চালানো হয়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে অভিযুক্তের মুখ স্পষ্ট ভাবে বোঝা না-গেলেও বিরোধী দলগুলির দাবি, গুলি চালিয়েছেন বাসুই। অতীতেও নানা অপরাধমূলক কাজকর্মে নাম জড়িয়েছে বাসুর। বৃহস্পতিবার রাত থেকে তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, বাসু একসময় দেবব্রত-ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন। কিন্তু তিনি নিজে ব্যবসা করতে গেলে পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে তাঁর বিবাদ শুরু হয় বলে দাবি। এলাকা দখল এবং ইমারতি ব্যবসার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিবাদের জেরেই এই ঘটনা বলে অভিযোগ বিরোধীদের।