১৯টি দেশের নাগরিকদের গ্রিন কার্ড পুনর্মূল্যায়ন করার নির্দেশ দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার আমেরিকার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষাকারী সংস্থা হোমল্যান্ড সিকিয়োরিটির তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে। বুধবার হোয়াইট হাউসের সামনে গুলি চলে। আহত হন আমেরিকার ন্যাশনাল গার্ডের দুই রক্ষী। তাঁদের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়েছে বৃহস্পতিবার। অপর রক্ষীর অবস্থাও সঙ্কটজনক। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প প্রশাসনের এই নির্দেশকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
আমেরিকার নাগরিকত্ব এবং অভিবাসন পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা ইউএসসিআইএস-এর ডিরেক্টর জোসেফ এডলো জানিয়েছেন, আধিকারিকেরা নির্দিষ্ট কয়েকটি দেশের নাগরিকদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সাবধানতার সঙ্গে কাজ করবেন। গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন করলে তো বটেই, যাঁদের কাছে আমেরিকায় স্থায়ী ভাবে বসবাস করার ওই ছাড়পত্র (গ্রিনকার্ড) রয়েছে, তাঁদেরও পরিচয়, জন্মস্থান, অতীতে করা অপরাধের তালিকা খতিয়ে দেখা হবে।
যে ১৯টি দেশের ক্ষেত্রে এই সংক্রান্ত নিয়মকানুন কড়া করা হচ্ছে, সেগুলি হল আফগানিস্তান, বার্মা (মায়ানমার), চাদ, কঙ্গো, ইকোয়াটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, ইয়েমেন, বরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিয়োন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান এবং ভেনেজ়ুয়েলা। গত জুন মাসে ট্রাম্প বেশ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের আমেরিকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে পুরোপুরি বা আংশিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন। সেই তালিকাতেও এই ১৯টি দেশের নাম ছিল।
ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে অভিবাসীদের পরিচয় যথাযথ ভাবে যাচাই না-করেই তাঁদের আমেরিকায় আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। বেশ কয়েকটি ‘বিপজ্জনক’ দেশের মানুষকেও আমেরিকায় আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। ট্রাম্প এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখতে বলেছেন।
হোয়াইট হাউসের কাছে দুই রক্ষীকে যিনি গুলি করেছেন, তিনি আদতে আফগানিস্তানের নাগরিক। তবে তিনি থাকতেন ওয়াশিংটনে। রহমানুল্লা লাকানওয়াল নামের ওই বন্দুকবাজ ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে আমেরিকায় এসেছিলেন। ওই বছরের ১৫ অগস্ট আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের দখল নিয়েছিল তালিবান। সেই সময় নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকি রয়েছে, এমন আফগান নাগরিকদের আমেরিকায় নিয়ে আসতে ‘অপারেশন অ্যালাইস ওয়েলকাম’ শুরু করেছিল জো বাইডেনের সরকার। ওই অভিযানে বিমানে চাপিয়ে আফগানিস্তান থেকে প্রায় ২০ হাজার আফগান নাগরিক, মার্কিন কূটনীতিককে আমেরিকায় ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। সেই সময়ই রহমানুল্লা আমেরিকার মাটিতে পা রাখেন।
‘অপারেশন অ্যালাইস ওয়েলকাম’ নিয়ে সেই সময়ও আমেরিকায় বিতর্ক দেখা গিয়েছিল। তাড়াহুড়ো করে প্রচুর মানুষকে আমেরিকায় নিয়ে এসে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হচ্ছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। তৎকালীন বাইডেন প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছিল, আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাকে সাহায্য করেছেন, তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, এমন ব্যক্তিদেরই আমেরিকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।