Advertisement
E-Paper

ধামাচাপা দিতে চাইছে রাজ্য, নালিশ কেন্দ্রের

ঘটনা যত গুরুতরই হোক, তাকে তুচ্ছ প্রতিপন্ন করার সরকারি প্রচেষ্টা বর্ধমান শহরের উপকণ্ঠে খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণ কাণ্ডেও অব্যাহত। অস্ত্র ও বিস্ফোরকের একটি ছোটখাটো গবেষণাগারে ভয়ানক বিস্ফোরণে দু’জনের ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া ও এক জন গুরুতর জখম হওয়ার পরেও রাজ্য পুলিশ বিষয়টিকে লঘু করে দেখানোর প্রাথমিক চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। আর কেউ নয়, রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ এনেছে খোদ এনআইএ (জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা)। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে দেওয়া রিপোর্টে তারা বলেছে, অপরাধস্থল ঘেঁটে যেতে পারে এই যুক্তিতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ও কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদেরও বিস্ফোরণস্থলে ঢুকতে বাধা দিয়েছেন রাজ্য পুলিশ ও গোয়েন্দারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:৩২
বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া শাকিল আহমেদের দেহ নামিয়ে আনছে পুলিশ। ছবি: উদিত সিংহ

বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া শাকিল আহমেদের দেহ নামিয়ে আনছে পুলিশ। ছবি: উদিত সিংহ

ঘটনা যত গুরুতরই হোক, তাকে তুচ্ছ প্রতিপন্ন করার সরকারি প্রচেষ্টা বর্ধমান শহরের উপকণ্ঠে খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণ কাণ্ডেও অব্যাহত।

অস্ত্র ও বিস্ফোরকের একটি ছোটখাটো গবেষণাগারে ভয়ানক বিস্ফোরণে দু’জনের ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া ও এক জন গুরুতর জখম হওয়ার পরেও রাজ্য পুলিশ বিষয়টিকে লঘু করে দেখানোর প্রাথমিক চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। আর কেউ নয়, রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ এনেছে খোদ এনআইএ (জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা)। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে দেওয়া রিপোর্টে তারা বলেছে, অপরাধস্থল ঘেঁটে যেতে পারে এই যুক্তিতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ও কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদেরও বিস্ফোরণস্থলে ঢুকতে বাধা দিয়েছেন রাজ্য পুলিশ ও গোয়েন্দারা।

পুলিশ কেন ইউএপিএ (বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন)-তে মামলা রুজু করল না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এমনকী, দেশদ্রোহের মামলাটুকুও রুজু করেনি পুলিশ। অথচ বিস্ফোরণের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া স্লোগানের অডিও সিডি-তে রয়েছে‘চাই জেহাদ, চাই জেহাদ/ বাংলা থেকে বাগদাদ/ আল জিহাদ, আল জিহাদ।’ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের একাংশের দাবি, জেলা পুলিশের কয়েক জন পদস্থ অফিসার প্রথম থেকেই ঘটনাটিকে বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণে উড়ে যাওয়ার মতো মামুলি বিষয় বলে দেখাতে চেয়েছিলেন।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরের ওই ভয়াবহ বিস্ফোরণের দু’দিন পরে শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে প্রাথমিক রিপোর্ট দিয়েছে এনআইএ। এনআইএ সূত্রের খবর, ওই রিপোর্টে বিস্ফোরণ ও সেই সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য পেশ করার পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের অসহযোগিতার বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। রাজ্য পুলিশের কাছ থেকে সহযোগিতা পাওয়া তো দূরস্থান, উল্টে তাদের অফিসারেরা অপমানিত হয়েছেন বলে রিপোর্ট দিয়েছে এনআইএ। তাদের দাবি, সিআইডি-র এক অফিসার শনিবার দুপুরে এনআইএ-র দলের সামনেই সেই ঘরটি তালাবন্ধ করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘বাইরের আজেবাজে লোক যেন ঢুকতে না পারে।’ আহত ব্যক্তির সঙ্গেও প্রথমে এনআইএ কিংবা আইবি-কে কথা বলতে দেওয়া হয়নি এমন অভিযোগ উঠেছে।

বিস্ফোরণের পরে চলছে পাহারা। খাগড়াগড়ে।

রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য রবিবার দাবি করেন, “অসহযোগিতার অভিযোগ ঠিক নয়। আমাদের অফিসারেরা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।” এমনকী, জেলার পুলিশ সুপারের সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি বলে এনআইএ সূত্রে দাবি করা হয়েছে। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার অবশ্য দাবি, তাঁর সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি।

বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্ত বুধবার থেকে করছিল সিআইডি। অবশ্য তদন্তের ব্যাপারে বর্ধমান জেলা পুলিশ, কলকাতা পুলিশ, রাজ্য গোয়েন্দা শাখা (আইবি) ও সিআইডি-র বাছাই অফিসারদের নিয়ে একটি যৌথ টাস্ক ফোর্স গড়ার কথা রবিবার ঘোষণা করেছেন স্বরাষ্ট্র সচিব বাসুদেববাবু। তবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইনটেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) সূত্রের খবর, এনআইএ-র রিপোর্ট পাওয়ার পর তদন্তের দায়িত্ব তাদের হাতেই তুলে দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। আজ, সোমবার দিল্লি থেকে এসে বর্ধমানের ওই ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা এনআইএ-র একটি দলের।

গোয়েন্দারা প্রমাণ পেয়েছেন, ওই জায়গায় আইইডি (ইম্প্রোভাইজ্ড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) তো বটেই, বন্দুকের বুলেট পর্যন্ত তৈরি করা হতো। তাঁদের বক্তব্য, কোনও জঙ্গি সংগঠন ঘরোয়া মেশিনে গুলি তৈরি করছে, এমন নজির নেই বললেই চলে। আর এটাই সব চেয়ে ভয়াবহ দিক। ঘটনাস্থল থেকে ৫৫টি দেশি হ্যান্ড গ্রেনেড উদ্ধার করার পাশাপাশি বিস্ফোরক তৈরির জন্য কাচের জারে রাখা অন্তত ৩০ রকমের রাসায়নিক, বারুদ, ডিটোনেটর, টাইমার ডিভাইস ও লেদ মেশিন এবং রকেট লঞ্চার, বুলেট ও আইইডি তৈরির নির্দেশ সম্বলিত বিভিন্ন কাগজপত্র মিলেছে। ওই সব কাগজপত্রের বেশির ভাগই ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করা হয়েছে। সেই সঙ্গে মিলেছে বাংলা, উর্দু ও আরবিতে ছাপানো বিভিন্ন পুস্তিকা যেখানে আফগানিস্তান, বাগদাদ ও কাশ্মীরের জেহাদকে সমর্থন করার ডাক দেওয়া হয়েছে। পুস্তিকাগুলি বাংলাদেশে ছাপানো বলে গোয়েন্দাদের সন্দেহ। আল-কায়দার বর্তমান প্রধান আল জাওয়াহিরির নাম ও তাঁর বক্তৃতার বাংলা অনুবাদও মিলেছে ঘটনাস্থলে। উদ্ধার করা হয়েছে আত্মঘাতী মহিলা জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ ও জঙ্গিদের হাতে অপহৃতের শিরচ্ছেদের ভিডিও সিডি-ও। জঙ্গিডেরায় হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটল কেন? পুলিশের ধারণা, অসতর্কতাই এর জন্য দায়ী। সকেট বোমা থেকে দেশি হ্যান্ড গ্রেনেড তৈরির সময় কোনও ভুলের দরুণ রাসায়নিক বিক্রিয়ায় বিস্ফোরণ ঘটেছে।

আইবি-র এক অফিসার মনে করছেন, বর্ধমানের ঘটনা থেকে স্পষ্ট যে জঙ্গিরা প্রচার পাওয়ার জন্য জনবহুল স্থানে বিস্ফোরণ ঘটানোর চক্রান্ত আঁটছে। সেই জায়গাটা কলকাতা হওয়া খুবই সম্ভব। তাঁর কথায়, “বর্ধমান থেকে কলকাতা বেশি দূরে নয়। কলকাতায় নাশকতা ঘটালে প্রচারও বেশি পাওয়া যাবে। তা ছাড়া, ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের মতো জঙ্গি সংগঠনের অন্যতম নিশানা যে কলকাতা, সেই খবর ২০০৭ সালেই জানা গিয়েছিল।” ওই অফিসারের কথায়, “সামনে কালীপুজো-দীপাবলি। আমাদের চূড়ান্ত সতর্ক থাকতে হবে।” বর্ধমানের ঘটনাটি যে মাপের, তার উপযুক্ত তদন্ত করার ক্ষমতা, দক্ষতা ও বিশেষ ধরনের জ্ঞান এই মুহূর্তে এনআইএ ছাড়া আর কারও নেই বলে দাবি আইবি-র ওই অফিসারের। গোয়েন্দাদের একাংশের ধারণা, আল কায়দা-র শাখা সংগঠন আল জিহাদের জন্য বর্ধমানের ওই জায়গায় আইইডি ও বুলেট তৈরি করা হচ্ছিল। আবার গোয়েন্দাদের আর একটি অংশ মনে করেন, জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর মতো পড়শি দেশের একটি জঙ্গি সংগঠনের মদতে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন-ই গোটা ব্যাপারটায় জড়িত। এর পিছনে সিমি-র কয়েক জন প্রাক্তন চাঁইয়ের হাতও রয়েছে।

ঠিক কী হয়েছিল সে দিন?

বর্ধমান শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে খাগড়াগড়ের একটি জনবহুল এলাকার একটি বাড়ির দোতলা থেকে বিকট শব্দ পেয়ে চমকে ওঠেন এলাকার মানুষ। তখন প্রায় দুপুর ১২টা। ওই বাড়ির একতলার একটি ঘর গত কয়েক বছর ধরে তৃণমূলের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ভোট ছাড়া অন্য সময়েও শাসক দলের ফেস্টুন-ব্যানার সেখানে রাখা থাকে, নেতা-কর্মীরা বৈঠকও করেন। বিস্ফোরণের শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন ওই বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে দেখেন, নালা থেকে গড়িয়ে পড়ছে তাজা রক্ত। কিন্তু দোতলা থেকে দু’জন মহিলা স্থানীয় বাসিন্দাদের হুমকির সুরে জানিয়ে দেন, কারও ভিতরে ঢোকার দরকার নেই। খবর পেয়ে পুলিশ ও দমকলকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাঁদেরও ওই মহিলারা বাধা দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।


সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন...

পুলিশ সূত্রের খবর, কোলে শিশু নিয়ে দুই মহিলা রীতিমতো আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে পথ আটকাতে যান। ঘরের কোণে তখনও বিস্ফোরণের আগুন জ্বলছে। আর ওই আগুনেই দু’টি মোবাইল ফোন, ভোটার আইডি কার্ড-সহ কিছু নথিপত্র ফেলে দেন ওই দুই মহিলা। শেষমেশ পুলিশ ওই ঘরে ঢুকে জেহাদ সংক্রান্ত আধপোড়া কিছু কাগজপত্র উদ্ধার করে। মেঝেতে তখন দু’জনের নিথর দেহ পড়ে। আর এক জন যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে।

পুলিশ জানায়, নিহতদের নাম শাকিল আহমেদ ওরফে নইম ওরফে আফজল গাজি (৩২) ও স্বপন মণ্ডল ওরফে সুবহান (২২)।

পুলিশ সূত্রের খবর, শাকিল আদতে ঢাকার বাসিন্দা ও সেখানকার জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন (জেএমবি)-এর সঙ্গে জড়িত। তদন্তকারীরা জেনেছেন, তার সঙ্গে ঢাকার একাধিক লোকের নিয়মিত মোবাইলে কথা হত। সিমকার্ড-সহ দু’টি মোবাইল ফোন পুড়িয়ে দেওয়া হলেও গোয়েন্দারা আরও তিনটি মোবাইল ফোন ওই ঘর থেকে উদ্ধার করেছেন। শাকিল ব্যবহার করত, এমন কয়েকটি নম্বরও তাদের হাতে এসেছে। সেগুলির ‘কল ডিটেলস রেকর্ড’ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শাকিল ও ওই বাড়ির দোতলার বাসিন্দাদের নিয়মিত ফোন করত, এমন এক ব্যক্তিকে রবিবার সন্ধ্যায় বর্ধমানের পূর্বস্থলীর খড়দত্তপাড়া থেকে পুলিশ আটক করেছে। পুলিশ জানায়, তার নাম হাসেম মোল্লা। তা ছাড়া, ওই বাড়ি থেকে যে ব্যক্তি মোটর সাইকেলে করে নিয়মিত ‘মালপত্র’ নিয়ে যেতএমনকী বিস্ফোরণের আগের দিনও নিয়ে গিয়েছে কাওসার নামে সেই ব্যক্তির ছবি আঁকিয়ে আশপাশের থানা ও বিভিন্ন এলাকায় ছড়ানো হয়েছে।

গোয়েন্দারা জেনেছেন, বছর পাঁচেক আগে পশ্চিমবঙ্গে এসে শাকিল কিছু দিন কলকাতার মেটিয়াবুরুজে ছিল। পরে কাপড়ের ব্যবসার সূত্রে সে যায় নদিয়ার করিমপুরের বারবাকপুর গ্রামে। সেখানে তার সঙ্গে পরিচয় হয় রাজিয়া বিবি ওরফে রুমি শামিমের। পরে শাকিল ওই মহিলাকে বিয়ে করে। তদন্তকারীরা জেনেছেন, শ্বশুরকে নিজের বাবা বলে পরিচয় দিয়ে করিমপুরের ঠিকানায় নিজের ভোটার আইডি কার্ড-ও শাকিল হাসিল করেছিল। তার পর মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় একটি ডেরা তৈরি করে সেখানে শাকিল অস্ত্র ও বিস্ফোরকের গবেষণাগার চালাচ্ছিল বলে গোয়েন্দাদের সন্দেহ। তিন মাস আগে বর্ধমানের খাগড়াগড়ের ওই বাড়ির দোতলার অংশটি মাসিক হাজার চারেক টাকায় ভাড়া নিয়েছিল সে। মাস দেড়েক আগে শাকিলের স্ত্রী এবং আরও এক দম্পতি সেখানে এসে ওঠে। বেলডাঙার আস্তানা ছেড়ে শাকিল কেন বর্ধমানে চলে এল, গোয়েন্দারা তা খতিয়ে দেখছেন।

নিহত অন্য জন, স্বপন ওরফে সুবহানের বাড়ি কোথায়, সেই ব্যাপারে পুলিশ নিশ্চিত নয়। একটি সূত্র পেয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের কয়েকটি জায়গায় এই ব্যাপারে খোঁজ চলছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আব্দুল হাকিম ওরফে হাসান সাহেবের বাড়ি বীরভূমের মহম্মদবাজারের দেউচা গ্রামে।

শাকিলের স্ত্রী রাজিয়া বিবি ওরফে রুমি এবং হাসানের স্ত্রী আলিমা বিবিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ওই দুই মহিলাই আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে পুলিশ ও দমকলকর্মীদের ঘটনাস্থলে ঢুকতে বাধা দেন বলে অভিযোগ। আলিমা বিবির বাড়ি মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের উকরডিহা গ্রামে। ওই দুই মহিলার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, খুনের চেষ্টা, মারাত্মক অস্ত্র দিয়ে আঘাত, বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহারের অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। রবিবার বর্ধমান আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ওই দু’জনকে ন’দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। পুলিশ সুপার এসএমএইচ মির্জা বলেন, “খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণ-কাণ্ডে দু’জন মহিলাকে আমরা হেফাজতে নিয়েছি। ঘটনার সঙ্গে কোনও জঙ্গি সংগঠনের যোগ রয়েছে কি না, সে সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” এক গোয়েন্দা-অফিসারের বক্তব্য, “অদ্ভুত কঠিন মহিলা ওই রাজিয়া বিবি। স্বামী শাকিল মারা গেলেও স্ত্রীর চোখে এক ফোঁটা জল দেখলাম না। মনে হচ্ছে জেহাদি ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ ওই মহিলা, হয়তো প্রশিক্ষণও পেয়েছেন।”

কিন্তু কোন জঙ্গি সংগঠনের হাত এতে থাকতে পারে? তদন্তকারীদের বক্তব্য, জখম হাসান সাহেবের অবস্থা গুরুতর, শুধু তার মুখ দিয়ে ‘আল জিহাদ’ কথাটি শোনা গিয়েছে। আধপোড়া নথিপত্র থেকেও মিলেছে আল জিহাদ শব্দবন্ধ। তবে এরা আল জিহাদ নাকি ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের কোনও শাখা, সেই ব্যাপারে গোয়েন্দারা এখনও নিশ্চিত নন।

burdwan blast nia khagragadh al jihad
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy