Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Unskilled Labour

‘অদক্ষদের’ দক্ষতা বাড়ানোই চ্যালেঞ্জ প্রশাসনের

এ বার পরিযায়ীদের ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা হবে, তা-ই এখন পরিকল্পনা স্তরে রয়েছে। বস্তুত, রাজ্যে পরিকাঠামো উন্নয়নের যে কাজ চলছে, তাতে দক্ষ শ্রমিকদের চাহিদা অত্যন্ত বেশি।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২০ ০৪:৪৯
Share: Save:

‘অদক্ষ’ (আনস্কিলড) পরিযায়ী শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়াতে পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার। প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, পরিযায়ী-তথ্যভাণ্ডার অনুযায়ী লকডাউন পর্বে রাজ্যে প্রায় ১৫ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছিলেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ১১ লক্ষ পরিযায়ীই ‘অদক্ষ’। এত সংখ্যায় ‘অদক্ষ’ শ্রমিকের নিয়মিত কাজের ব্যবস্থা করা বেশ কঠিন। ফলে যত বেশি সম্ভব পরিযায়ীর কাজের দক্ষতাবৃদ্ধিতে এখন পরিকল্পনা তৈরি করতে হচ্ছে প্রশাসনের শীর্ষমহলকে।

সংশ্লিষ্ট মহলের নির্দেশে সম্প্রতি শ্রম দফতরের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে কারিগরি শিক্ষা দফতর। পরিযায়ীদের দক্ষতা রাতারাতি বাড়ানো যে মুশকিল, তা মানছেন দফতরের কর্তারা। কারিগরি শিক্ষা দফতর সূত্রের দাবি, সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে কমবেশি ২৫০টি আইটিআই রয়েছে রাজ্যে। পলিটেকনিকের সংখ্যা ১৬০টির মতো। সেগুলিকে কী ভাবে এ কাজে ব্যবহার করা যায়, তার রূপরেখা তৈরি হচ্ছে। এখন সাধারণ ছাত্রদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে মারুতি, স্যামসাং, এনফিল্ড, গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স, মেটাল-সিমেন্টের মতো অনেক কারখানা-সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে দফতর। শিল্পমহলের চাহিদা বুঝে ছাত্রদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

এ বার পরিযায়ীদের ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা হবে, তা-ই এখন পরিকল্পনা স্তরে রয়েছে। বস্তুত, রাজ্যে পরিকাঠামো উন্নয়নের যে কাজ চলছে, তাতে দক্ষ শ্রমিকদের চাহিদা অত্যন্ত বেশি। রাজ্যজুড়ে চলা বিভিন্ন পরিকাঠামো প্রকল্পে ভিন রাজ্য থেকে দক্ষ শ্রমিকেরা নানা ধরনের কাজ করেন। নিজেদের রাজ্যে দক্ষ শ্রমিকদের সংখ্যাবৃদ্ধি হলে তাতে প্রশসন এবং শ্রমিক—উভয়ের লাভ হবে বলে মনে করেন আধিকারিকদের অনেকে।

দফতরের এক কর্তার কথায়, “ফেরত আসা স্কিলড পরিযায়ীদের অনেকেই কখনও না কখনও নিজের কাজের রাজ্যে ফিরে যাবেন। যাঁরা থাকবেন, শিল্পমহলের সঙ্গে আলোচনা করে চাহিদার নিরিখে তাঁদের দক্ষতা অনুযায়ী কাজের পরিকল্পনা চলছে।” দফতরের মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু বলেন, “শুধু পরিযায়ীরাই নন, গরীব ঘরের ছেলে-মেয়েরা যাতে কাজ পেতে পারেন, তার ব্যবস্থা সরকার করার চেষ্টা করছে।”

সরকারের অন্দরের ব্যাখ্যা, লকডাউন পর্বে ফেরা পরিযায়ীদের কাজের ব্যবস্থা সরকারকেই করতে হত। তাই সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্টদের কাজ দিতে একশো দিনের প্রকল্পকেই বেছে নিতে হয়েছে। সে কারণে কমবেশি সাত লক্ষ নতুন জবকার্ড দেওয়া হয়েছে পরিযায়ীদের। কিন্তু এই প্রকল্পে কর্মদিবস তৈরির নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা থাকে। আগে থেকে জবকার্ডধারী শ্রমিকের সংখ্যাও রাজ্যে কম নয়। তাই এর মধ্যে কর্মদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে গিয়েছে রাজ্যে। পরিযায়ী-স্বার্থে এ বছর কেন্দ্র অতিরিক্ত কর্মদিবসের জন্য রাজ্যকে টাকা দিলেও, আগামী আর্থিক বছরে তা পাওয়া যাবে কি না, তা বলা মুশকিল। তাই বিকল্প ভাবনা রাজ্যকে করতে হচ্ছে। সরকার এ-ও মনে করছে, ফেতর আসা অদক্ষ পরিযায়ীদের অনেকেই থেকে যাবেন রাজ্যে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Unskilled Labour Labour Unskilled migrants
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE