Advertisement
০২ মে ২০২৪
C V Ananda Bose appoints new VC

আবার মধ্যরাতে নিয়োগ! মমতার হুঁশিয়ারির পরেও কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্যকে দায়িত্ব বোসের

মঙ্গলবার গভীর রাতে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, কৃষ্ণনগরের কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করলেন রাজ্যপাল। অধ্যাপক কাজল দে-কে উপাচার্য পদে নিয়োগ করা হয়েছে।

নতুন উপাচার্যকে নিয়োগপত্র দিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।

নতুন উপাচার্যকে নিয়োগপত্র দিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০১:৪৭
Share: Save:

আবারও মধ্যরাতে অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য নিয়োগ করলেন আচার্য সিভি আনন্দ বোস। মঙ্গলবার মধ্যরাতে রাজভবনের পক্ষে জানানো হয়েছে, রাজ্যপাল কৃষ্ণনগরের কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য হিসাবে অধ্যাপক কাজল দে-কে নিয়োগ করছেন। রাজ্যপাল নিয়োগনামায় সই করছেন, তেমন একটি ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। ঘটনাচক্রে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবারই শিক্ষক দিবসের এক অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের নাম না-করে তাঁর এই সাম্প্রতিক কালের উপাচার্য নিয়োগ এবং একাধিক নির্দেশনামা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এমনকি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি যদি বোসের নির্দেশ মেনে চলে, তবে রাজ্য তাদের ক্ষেত্রে ‘আর্থিক অবরোধ’ করবে, তেমন হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যপাল যদিও সেই হুঁশিয়ারি ‘উড়িয়ে’ পূর্বের মতোই মঙ্গলবার মধ্যরাতে আবার উপাচার্য নিয়োগ করেছেন। এর ফলে রাজ্য এবং রাজভবনের সংঘাত আরও তীব্র হল বলেই মনে করা হচ্ছে।

রাজভবন ও বিকাশ ভবনের দ্বন্দ্ব দীর্ঘ সময় ধরে চললেও সম্প্রতি তা বড় আকার নেয়। গত ৩১ অগস্ট রাজ্যপাল ঘোষণা করেছিলেন, নতুন করে অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য নিয়োগ না-হওয়া পর্যন্ত আচার্য হিসাবে তিনি নিজেই রাজ্যের ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বতিকালীন উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন। বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হয় বিস্তর। রবিবার রাতে ওই ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়-সহ কল্যাণী বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেলগাছিয়ার পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্যের মনোনয়ন করেন রাজ্যপাল। সোমবার তাঁদের নিয়োগ করা হয়। রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না-করে এই ধরনের পদক্ষেপ আগেও করেছেন রাজ্যপাল বোস। তার আগে, গত ২ সেপ্টেম্বর রাজভবনের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছিল, আচার্যের পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সার্বভৌম অধিকর্তা হলেন উপাচার্যই। তাঁর অধীনস্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা আচার্যের নির্দেশ মেনেই কাজ করবেন। সরকার তাঁদের নির্দেশ দিতেই পারে। কিন্তু সেই নির্দেশ তাঁরা মানতে বাধ্য নন।

মঙ্গলবার রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ধন ধান্য প্রেক্ষাগৃহে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান থেকে এই আবহে রাজ্যপালের নাম না-করেই তাঁকে বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির বিরুদ্ধে ‘আর্থিক অবরোধ’ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যপাল পদাধিকার বলে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হলেও অর্থ বরাদ্দ করে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, কোনও বিশ্ববিদ্যালয় যদি রাজ্যপালের নির্দেশ মেনে চলে তা হলে আর্থিক বাধা তৈরি করা হবে। রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার স্বার্থে তিনি রাজভবনের সামনে ধর্নায় বসতে পারেন বলেও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

এই আবহে রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে বৈঠকে ডেকেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টোয় বিকাশ ভবনে ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সঙ্গে বৈঠক করবেন শিক্ষামন্ত্রী। ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রেজিস্টারদের সঙ্গে ব্রাত্য আলোচনা করবেন বলে খবর।

তার মধ্যেই মঙ্গলবার গভীর রাতে ফের রাজ্যপাল বোস নতুন উপাচার্য নিয়োগ করলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE