Advertisement
E-Paper

সিঙ্গুরের দিনেই বাগডোগরায় চেক বিলি

সিঙ্গুরে যে দিন কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করল রাজ্য সরকার, সে দিনই বাগডোগরায় উলটপুরাণ। বিমানবন্দর আধুনিকীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি সংশ্লিষ্ট মালিকদের কাছ থেকে সরাসরি কিনে নেওয়া শুরু বুধবার থেকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:২৯
বাগডোগরায় জমিদাতাদের চেক দিচ্ছেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং বাচ্চু হাঁসদা। —বিশ্বরূপ বসাক

বাগডোগরায় জমিদাতাদের চেক দিচ্ছেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং বাচ্চু হাঁসদা। —বিশ্বরূপ বসাক

সিঙ্গুরে যে দিন কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করল রাজ্য সরকার, সে দিনই বাগডোগরায় উলটপুরাণ। বিমানবন্দর আধুনিকীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি সংশ্লিষ্ট মালিকদের কাছ থেকে সরাসরি কিনে নেওয়া শুরু বুধবার থেকে।

পাঁচ বছর ধরে টানাপড়েনের পর বুধবার দুপুরে উত্তরকন্যায় জমিদাতাদের হাতে চেক তুলে দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। চলতি মাসের মধ্যেই এয়ারপোর্ট অথরিটির হাতে জমি তুলে দেওয়া হবে বলে ঘোষণাও করেন মন্ত্রী। রাতের বিমান ওঠানামা ছাড়াও ২৪ ঘণ্টার বিমানবন্দরের জন্য বাম আমলেই ইনস্ট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম (আইএলএস) বসানোর সিদ্ধান্ত হয়। তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসতেই এর জন্য প্রয়োজনীয় ১৯.৪১ একর জমি চায় এএআই। বায়ুসেনা-সহ এলাকার জমির মালিকদের কাছ থেকে ১৮.২৩ একর জমি অধিগ্রহণ করে সরকার। কাজও শুরু হয়। কিন্তু ১.১৮ একর জমি নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। এ দিন সেই জমি সরকার ১ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকায় কিনে নেওয়ার পরেই জট খুলল।

সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, বহু আলোচনার পর শেষ পর্যন্ত সরকারি দরেই ৩৪ জন জমির মালিক ও অংশীদার জমি দিতে রাজি হন। প্রতি কাঠা ৩ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে তাঁদের।

মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথবাবু সব চেক প্রাপকদের ডেকে তাঁরা স্বেচ্ছায় জমি বিক্রি করছেন কি না জানতে চেয়ে, তার পরে তাঁদের হাতে চেক তুলে দেন। মন্ত্রী বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গের জন্য এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ দিন। যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং উন্নয়নের জন্য বাগডোগরা বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণ অত্যন্ত প্রয়োজন। সেই সমস্যা মিটল।’’

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, জমির মালিকরা ৭ লক্ষ টাকা করে প্রতি কাঠা জমির দাম চেয়েছিলেন। তা নিয়েই জটিলতা দেখা দেয়। বাগডোগরা দিয়ে যাওয়া এশিয়ান হাইওয়ের জন্য কেন্দ্রের টাকায় ওই দাম মিলছে বলে মালিকরা নিজেদের দাবিতে অনড় ছিলেন। তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব তো বটেই, সরকারি অফিসাররাও তাঁদের বোঝানো শুরু করেন। ইতিমধ্যে পাশের ১৮ একর জায়গায় আইএলএসের কাজ শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছয়। তা ছাড়া অনিচ্ছুক জমিদাতাদের ১.১৮ একরে পাকা রাস্তা, পানীয় জল, বিদ্যুতের সমস্যা রয়েছে। মুখে না বললেও সরকার যে সে সব সমস্যার সমাধান করবে না, তা-ও বুঝে যান জমির মালিকেরা। তাই শেষ পর্যন্ত তাঁরা রাজি হন। উত্তরকন্যার বৈঠকে ছিলেন বাগডোগরা বিমানবন্দরের ডিরেক্টর রাকেশ সহায়ও। তিনি বলেন, ‘‘পুরনো জমিতে আইএলএসের কাজ ১০ অক্টোবর শেষ হচ্ছে। এ দিনের জমিটি পেলেই সেখানে সীমানা পাঁচিল দেওয়া হবে। তিন মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে। তার পরে ভোরবেলা ও রাতে বিমান ওঠানামা করতে পারবে।’’

জমির মালিক সোরেন সিংহ, নরেন সিংহ বা অনিল রায়রা বলেন, ‘‘আমরা স্বেচ্ছায় জমি দিলাম। তবে আর একটু টাকা পেলে ভাল হয়।’’ কয়েক জন জমিদাতার পরিবারের লোকজন বিমানবন্দরে অস্থায়ী কাজের আবেদনও জানান। মন্ত্রী সব দেখা হবে বলে আশ্বাস দেন।

Farmers Rabindranath Ghosh Cheque distribution Land owners
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy