সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত কয়েক দিন ধরেই গন্তব্যে পৌঁছতে গিয়ে যান যন্ত্রণায় নাজেহাল রাজ্যবাসী। বিশেষ করে অফিসে যাওয়া-আসার সময় রাস্তায় কম বাস থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন কর্মচারীরা। দুর্ভোগ কমাতে এ বার সরকারি কর্মীদের অফিসে কাজের সময় দু’ভাগে ভেঙে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার তিনি নবান্নে সাংবাদিকদের বলেন, “সাধারণ কর্মচারী থেকে ডেপুটি সেক্রেটারি পদমর্যাদা পর্যন্ত অফিসারেরা দুই শিফ্টে কাজে আসবেন। একটি শিফ্ট হবে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর আড়াইটে, আর একটি শিফ্ট হবে সাড়ে ১২টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত।”
রাস্তায় বেরিয়ে সমস্যায় যাতে না পড়তে হয়, সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত বলে এ দিন জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, “ভিড় বাসে চাপাচাপি করে কাজে এলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই দুই শিফ্টে কাজে এলে সমস্যা কমবে।” পরিবহণ দফতরকে এই সময়সূচি মাথায় রেখে বেশি করে বাস নামানোর নির্দেশও দেন তিনি।
শুধু সরকারি নয়, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্দেশে মমতা বলেন, “ওয়ার্ক ফর্ম হোম-এর উপরে জোর দেওয়া যেতে পারে। ৫০ বা ৭০ শতাংশ কর্মী এনে করানো যেতে পারে কাজ। তবে এ বিষয়টি আপনাদের উপরেই ছেড়ে দিলাম। প্রয়োজনে সময় ভাগাভাগি করে নেওয়া যেতে পারে।”
আরও পড়ুন: আর্টিস্ট ফোরাম কি ঠিক করল? আড়াআড়ি ভাগ শিল্পীমহলেই
অফিস, রেস্তরাঁ খুললেও, এখনও খোলেনি স্কুল-কলেজ। বাসে যাতে ভিড় না হয়, সাইকেলেও ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্য। বাইলেন দিয়ে সাইকেল চালিয়ে অফিস যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে কলকাতা পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পরিস্থিতি বিবেচনা করে ৩০ থেকে কোথাও কোথাও ৭০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বিয়ে বাড়িতে ২৫ জন, ধর্মীয়স্থানে ২৫ জনের বেশি যাওয়া যাবে না।’’ তিনি আরও বলেন, “বেশি ভিড় হলে লোকের সমস্যা হয়। ট্রেন বন্ধ রয়েছে, কারণ করোনা বাড়তে পারেন। কিন্তু বাইরে না বেরলে অনাহারে মরতে হবে। আমরা সরকারি কর্মচারীদের মাইনে দিচ্ছি। বেসরকারি কর্মচারীরা আছেন। বাইরে না বেরলে কী খাবেন, তাঁরা?”
আরও পড়ুন: ভারতে এই প্রথম সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যা পেরিয়ে গেল সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যাকে
অফিস খুললেও, এখনই স্কুল-কলেজ খোলার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, ৩০ জুন পর্যন্ত সব বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জুলাই মাস অবধি তা হয়ে যেতে পারে। উচ্চ মাধ্যমিকের বাকি পরীক্ষা জুলাইয়ে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি শিক্ষা দফতর ভাল করে বলতে পারবে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা সব রকম ভাবে সাহায্য করছেন।’’ বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনাদের অনুরোধ করছি, এ বার আর ফি বাড়াবেন না। বাড়তি টাকা দয়া করে নেবেন না। কারণ, মানুষের হাতে পয়সা নেই। নোটবন্দি-ঘরবন্দি দেখলাম। হাতে নোট নেই। ঘরবন্দিতে ঘরে থেকেও খাবার জোগাড় করা মুশকিল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy