Advertisement
২১ মে ২০২৪

জাটুয়ার পাতে অভিযোগের মেনু 

শনিবার ‘দিদিকে বলো’ জনসংযোগ কর্মসূচিতে বিজেপি কর্মী তপন কপাটের বাড়িতে যান জাটুয়া।

রায়দিঘিতে বিজেপি কর্মীর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারছেন তৃণমূল সাংসদ চৌধুরী মোহন জাটুয়া (বাঁ দিকে)। শনিবার। ছবি: দিলীপ নস্কর

রায়দিঘিতে বিজেপি কর্মীর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারছেন তৃণমূল সাংসদ চৌধুরী মোহন জাটুয়া (বাঁ দিকে)। শনিবার। ছবি: দিলীপ নস্কর

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৯ ০২:৩২
Share: Save:

দুপুরে খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল স্থানীয় এক বিজেপি কর্মীর বাড়িতে। গৃহস্থের স্ত্রী সেখানেই মথুরাপুরের তৃণমূল সাংসদ চৌধুরী মোহন জাটুয়াকে প্রশ্ন করে বসেন, ‘‘রায়দিঘি গ্রামীণ হাসপাতালে শয্যার অভাবে মেঝেতে রোগী থাকতে হয় কেন?’’

এ ঘটনা দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘিতে। শনিবার ‘দিদিকে বলো’ জনসংযোগ কর্মসূচিতে বিজেপি কর্মী তপন কপাটের বাড়িতে যান জাটুয়া। তপনবাবুর স্ত্রীর অভিযোগের জবাবে জাটুয়া ব্যাখ্যা দেন, চিকিৎসকের সংখ্যা কম থাকায় ‘রেফার’ করার প্রবণতা বেশি। সে জন্যই এই সমস্যা।

শনিবার দিনভর রায়দিঘির দাসপাড়ায় ১৯০ নম্বর বুথ এলাকায় জাটুয়াকে জনসংযোগে যাঁদের বাড়িতে যেতে হয়েছে, প্রত্যেকেই বিজেপি-সমর্থক। লোকসভা ভোটে এই বুথে বিজেপি ৩৪২টি ভোটে তৃণমূলের থেকে এগিয়ে ছিল। তার উপর স্থানীয় বিধায়ক দেবশ্রী রায়ও নিয়মিত এলাকায় আসেন না বলেই অভিযোগ। এ দিন সে ক্ষোভের আঁচও পোহাতে হয়েছে জাটুয়াকে। কেন বিধায়ক আসেননি, তা নিয়ে স্থানীয়দের প্রশ্নের মুখে জাটুয়া অবশ্য বলেন, দেবশ্রী আসতে না পারায় তিনি নিজে এসেছেন। শীর্ষ নেতৃত্বের সে রকমই নির্দেশ আছে বলে জানান তিনি।

সাংসদকে সামনে পেয়ে তপনের পড়শি আরতি হালদার সেখানেই অভিযোগ করেন, গ্রামের রাস্তায় ধস নেমেছে। বিষয়টি নিয়ে একাধিক বার পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হলেও সুরাহা হয়নি। রায়দিঘি থেকে দক্ষিণ বিষ্ণুপুর পর্যন্ত রাস্তাটিও বেহাল। সাংসদ তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, পঞ্চায়েতের তহবিল না থাকায় হয় তো কাজ হচ্ছে না। রায়দিঘি থেকে দক্ষিণ বিষ্ণুপুর রোড সংস্কারের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

সমর দাসের বাড়িতে গিয়ে জাটুয়াকে শুনতে হল, ‘‘আমার মাটির দেওয়ালের খড়ের চালের ঘর। বৃষ্টির সময়ে ভিতরে জল পড়ে।’’ জাটুয়া নিজের চোখে তা দেখে ব্যক্তিগত রক্ষীকে সমরের নাম-ঠিকানা লিখে নিতে বলেন।

জনসংযোগের জন্য কেন বিজেপি কর্মীদের বাড়ি বেছে নিলেন? জাটুয়া বলেন, ‘‘আমি এক জন জননেতা। এলাকার যে কোনও মানুষের বাড়িতেই যেতে পারি। এখানে রাজনীতি কোনও বিষয় নয়।’’ আসলে ভোটের অঙ্কে ‘দুর্বল’ এলাকাগুলিতে বিরোধী শিবিরের বাড়িতে জনসংযোগে বেশি গুরুত্ব দিতে ফরমান জারি হয়েছে তৃণমূলে। ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের তত্ত্বাবধানে বিধায়ক

ও জনপ্রতিনিধিদের অনেককে বিরোধী কর্মীদের বাড়িতে রাতও কাটাতে হচ্ছে।

এ দিনই বারাসত পুরসভার ৩২ নম্বর ওয়ার্ড রামকৃষ্ণ পল্লিতে গিয়ে বিপাকে পড়লেন বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। স্থানীয়রা পুর পরিষেবা সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে গেলে বিধায়ক ‘শুনবেন না’ বলে এড়িয়ে যান। যদিও চিরঞ্জিতের বক্তব্য, অনেক মানুষের ভিড়ে কোনও কথাই সঠিক ভাবে শোনা যাচ্ছিল না। তাই তিনি এড়িয়ে যান।

দলীয় নেতার বাড়িতে বসে মানুষের অভাব-অভিযোগের কথা শুনলেন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের মন্ত্রী আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা। শুক্রবার সন্ধ্যায় ভাঙড়ের কাশীপুর থানার নাংলা গ্রামে মোজাফ্‌ফর আহমেদের বাড়িতে আসেন ভাঙড়ের বিধায়ক রেজ্জাক। রাস্তাঘাট, পানীয় জল, বিদ্যুৎ ও স্বাস্থ্য পরিষেবার অবস্থা নিয়ে অভিযোগ শোনেন স্থানীয়দের কাছ থেকে। রেজ্জাক বলেন, ‘‘আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী আমরা হয়তো সব কাজ করতে পারিনি। এ জন্য আপনাদের পরামর্শ দরকার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Choudhury Mohan Jatua BJP TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE