Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রানাঘাট ধর্ষণে মূল চক্রী মিলন ধৃত

রাত ১০টা ৪০। শিয়ালদহ স্টেশনের ছয় নম্বর প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়ায় ডাউন বনগাঁ লোকাল। ট্রেনের মাঝামাঝি কামরা থেকে ব্যাগ হাতে নেমে দু’জন হনহন করে হেঁটে বাইরে টিকিট কাউন্টারের সামনে চলে আসে। আর সঙ্গে-সঙ্গেই সাত-আট জন তাদের ঘিরে ফেলে গাড়িতে তুলে উধাও। রানাঘাটের গাংনাপুরে কনভেন্টে ডাকাতি ও বৃদ্ধা সন্ন্যাসিনীকে ধর্ষণের মামলায় মূল অভিযুক্ত মিলন সরকার বৃহস্পতিবার রাতে এ ভাবেই ধরা পড়েছে বলে দাবি সিআইডির। সঙ্গে ধরা পড়েছে ওহিদুল ইসলাম ওরফে বাবু নামে অন্য অভিযুক্ত। দু’জনেই বাংলাদেশের যশোহরের বাসিন্দা। এই নিয়ে গাংনাপুর-কাণ্ডে পাঁচ জন ধরা পড়ল। তবে তারা কেউ ধর্ষণ করেনি বলে জেরায় দাবি করেছে।

শুক্রবার ভবানী ভবনে মিলন সরকার।—নিজস্ব চিত্র।

শুক্রবার ভবানী ভবনে মিলন সরকার।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৫ ০৩:১৯
Share: Save:

রাত ১০টা ৪০। শিয়ালদহ স্টেশনের ছয় নম্বর প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়ায় ডাউন বনগাঁ লোকাল। ট্রেনের মাঝামাঝি কামরা থেকে ব্যাগ হাতে নেমে দু’জন হনহন করে হেঁটে বাইরে টিকিট কাউন্টারের সামনে চলে আসে। আর সঙ্গে-সঙ্গেই সাত-আট জন তাদের ঘিরে ফেলে গাড়িতে তুলে উধাও।

রানাঘাটের গাংনাপুরে কনভেন্টে ডাকাতি ও বৃদ্ধা সন্ন্যাসিনীকে ধর্ষণের মামলায় মূল অভিযুক্ত মিলন সরকার বৃহস্পতিবার রাতে এ ভাবেই ধরা পড়েছে বলে দাবি সিআইডির। সঙ্গে ধরা পড়েছে ওহিদুল ইসলাম ওরফে বাবু নামে অন্য অভিযুক্ত। দু’জনেই বাংলাদেশের যশোহরের বাসিন্দা। এই নিয়ে গাংনাপুর-কাণ্ডে পাঁচ জন ধরা পড়ল। তবে তারা কেউ ধর্ষণ করেনি বলে জেরায় দাবি করেছে।

গোয়েন্দাদের দাবি, বৃহস্পতিবারই বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে রাজ্যে ঢুকেছিল মিলন ও বাবু। ধরা পড়ার পরে রাতে তাদের বিরুদ্ধে শিয়ালদহ জিআরপি-তে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা হয়। শুক্রবার রানাঘাট আদালতে তোলা হলে এসিজেএম পাপিয়া দাস তাদের ১৪ দিন সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন। আগে থেকে সিআইডি হেফাজতে থাকা খালেদার রহমান মিন্টু ওরফে ফারুখকেও এ দিন আদালতে তোলা হয়। তাকে ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গাংনাপুরের ওই স্কুলে ১৩ মার্চ হানা দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। সিআইডির এসএস (সদর) চিরন্তন নাগের দাবি, ‘‘রানাঘাট কাণ্ডে মিলন সরকারই মূল অভিযুক্ত ও চক্রান্তকারী। ওই দিন তারা ঘটনাস্থলে ছিল। ঘটনার পরেই রাজ্য ছেড়ে চলে যায় তারা।’’ এর আগে হাবরা থেকে মিলনের আত্মীয় গোপাল সরকার, মুম্বই থেকে সালিম শেখ, বনগাঁ থেকে ফারুখকে গ্রেফতার করে সিআইডি। কিন্তু মিলন ধরা পড়েনি।

সিআইডি জানতে পারে, উত্তর ২৪ পরগনার হাবরায় গোপালের বাড়িতেই ঘাঁটি গেড়েছিল বাংলাদেশি দুষ্কৃতী মিলন ও তার সাঙ্গোপাঙ্গ। সেখানেই তারা ডাকাতির পরিকল্পনা করে। রানাঘাটের ওই স্কুলে এক সময় নির্মাণকর্মী হিসেবে কাজ করেছিল গোপাল। তার কাছে অনেক খবর ছিল।

ভবানী ভবন সূত্রের দাবি, মিলন জানিয়েছে, ডাকাতি করতেই তারা কনভেন্টে হানা দেয়। ধর্ষণের উদ্দেশ্য ছিল না। নানা সূত্র থেকে গোয়েন্দারা জেনেছেন, হামলার পর সাত দুষ্কৃতী স্কুলের পাঁচিল টপকে বেরিয়ে হেঁটে কাছেই রানাঘাট স্টেশনে যায়। সেখান থেকে ট্রেন ধরে বনগাঁ হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে যায় তারা।

তা হলে ফের মিলন সীমান্ত পেরিয়ে এল কেন?

সিআইডির দাবি, ডাকাতির বখরা নিয়ে বাংলাদেশের দুষ্কৃতীদের সঙ্গে মিলন ও বাবুর বিরোধ বেধেছিল। মিলনকে মারধরও করা হয়। তার পরেই সে এ রাজ্যে পালিয়ে আসে। সিআইডির এক কর্তা জানান, মিলন আগেও অপরাধ করে সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়েছে। সেখানে গিয়ে অপরাধ করে ফের কিছু দিন পরে রাজ্যে ফিরে এসেছে। শিয়ালদহ হয়ে তারা কোথায় যাচ্ছিল, সিআইডি তা খতিয়ে দেখছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ranaghat nun rape police cid school sealdah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE