Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Justice Amrita Sinha’s Husband Case

‘হেনস্থা করা হয়নি, চা-জল খাইয়েছি’, বিচারপতির স্বামীর জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে কী হয়েছে, জানাল সিআইডি

একটি মামলার সূত্রে সিআইডি চলতি মাসে দু’বার বিচারপতি সিংহের স্বামী প্রতাপচন্দ্র দে-কে তলব করেছিল। সেখানেই মানসিক হেনস্থার অভিযোগ তোলেন প্রতাপ। চিঠি দেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীকেও।

CID dismisses allegations of Pratap Chandra Dey husband of Jusice Amrita Sinha

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৪:৩৪
Share: Save:

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহের স্বামী প্রতাপচন্দ্র দের যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিল সিআইডি। বিবৃতি দিয়ে তারা জানিয়েছে, প্রতাপকে কোনও রকম মানসিক হেনস্থা করা হয়নি। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের অডিয়ো এবং ভিডিয়ো রেকর্ড করা আছে বলেও জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা।

সিআইডি একটি বিবৃতি জারি করে প্রতাপের অভিযোগের ‘জবাব’ দিয়েছে। তাদের দাবি, প্রতাপকে জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে সময়মতো চা এবং জল খেতে দেওয়া হয়েছে। যখন তিনি চেয়েছেন, সময় দেওয়া হয়েছে ধূমপানের জন্যও।

বিচারপতি সিংহের স্বামী পেশায় আইনজীবী। একটি মামলার সূত্রে তাঁকে চলতি মাসেই পর পর দু’বার তলব করে রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা। ওই জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে তাঁকে মানসিক ভাবে হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন প্রতাপ। অভিযোগ, তাঁর বিচারপতি স্ত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা বয়ান লেখানোর জন্য চাপ দিয়েছে সিআইডি। নানা ভাবে তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে। সে সব ব্যাখ্যা করে তিনি কলকাতা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অ্যাসোসিয়েশনকে চিঠি দেন। তার পর একই অভিযোগ জানিয়ে চিঠি পাঠান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

প্রতাপের ওই চিঠির পর বৃহস্পতিবার বিবৃতি দিল সিআইডি। তারা জানিয়েছে, গত ১ ডিসেম্বর এবং ১৬ ডিসেম্বর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রতাপকে তলব করা হয়েছিল। প্রতি ক্ষেত্রেই তিনি নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশ কিছুটা দেরি করে হাজিরা দিয়েছেন। দেরি হওয়ার কোনও বার্তা আগে থেকে পৌঁছে দেননি সিআইডি দফতরে।

সিআইডির এক দল তদন্তকারী আধিকারিক প্রতাপকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন। তাঁকে টানা বসিয়ে রেখে প্রশ্ন করা হয়নি। পর্যাপ্ত বিরতি দেওয়া হয়েছে। তাঁর সঙ্গে যথাসম্ভব ভাল ব্যবহার করেছেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা, জানিয়েছে সিআইডি। গোটা প্রক্রিয়াটি রেকর্ড করা আছে সিসি ক্যামেরায়।

সিআইডির আরও দাবি, বিধাননগর দক্ষিণ থানায় যে অভিযোগ দায়ের হয়েছে, যার ভিত্তিতে প্রতাপকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, শুধু সেই মামলা সংক্রান্ত প্রশ্নই তাঁকে করা হয়েছিল। প্রতাপের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত রয়েছে, এমন প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন আধিকারিকেরা। তদন্তের স্বার্থে বিচারপতি সিংহের স্বামীকে ১৮ ডিসেম্বর মোবাইল ফোন জমা দিতে বলেছে সিআইডি। ২২ ডিসেম্বর আবার তাঁকে তলব করা হয়েছে। সিআইডির দাবি, উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

প্রতাপ চিঠিতে দাবি করেছিলেন, যে মামলার সাক্ষী হিসাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে দু’বার তলব করা হয়েছিল, তার সম্পর্কে প্রশ্ন করার বদলে বিচারপতি সিংহের বিষয়ে নানা তথ্য জানার চেষ্টা করেছেন সিআইডির আধিকারিকেরা। প্রতাপ যাতে স্ত্রীর বিরুদ্ধে নানা সাজানো বয়ান দেন, তার জন্যও তাঁকে কুকথা বলার পাশাপাশি তাঁর উপর মানসিক নিপীড়নও চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রতাপের অভিযোগ, সাজানো বয়ানের বিনিময়ে তাঁকে টাকা, বাড়ি, গাড়িরও টোপ দিয়েছেন তদন্তকারীরা।

সে সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সিআইডির পাল্টা দাবি, তাদের সংস্থার দুর্নাম এবং মর্যাদাহানি করতেই প্রতাপ এই ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছেন। একে তদন্তপ্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করার চেষ্টা বলেও মনে করছেন গোয়েন্দারা।

প্রসঙ্গত, ক্ষমতার অপব্যবহার করে একটি অপরাধের মামলায় অবৈধ ভাবে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ উঠেছিল বিচারপতি সিংহের স্বামী প্রতাপচন্দ্রের বিরুদ্ধে। ৬৪ বছরের এক বিধবা এবং তাঁর মেয়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। মামলার সূত্রে গত ১ ডিসেম্বর বিচারপতির স্বামীকে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সিআইডির সদর দফতর ভবানী ভবনে দ্বিতীয় দফার জিজ্ঞাসাবাদ-পর্ব হয়েছিল গত ২২ ডিসেম্বর। সে দিন রাত ১১টা পর্যন্ত তাঁকে আটকে রাখার অভিযোগ তুলেছিলেন প্রতাপ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Justice Amrita Sinha Calcutta High Court Husband
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE