জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
চিনে লোহাচুর রফতানি করার জন্য ২৩২ কোটি টাকা ধার করেছিল রাজ্যের অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সরবরাহ নিগম (ইসিএসসি)। কিন্তু তাদের সরবরাহ করা লোহাচুর নিম্নমানের হওয়ায় তা নিতে অস্বীকার করে চিনা সংস্থা। ফলে নিগমের ক্ষতি হয় ২১৩ কোটি টাকা। ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কাছ থেকে নেওয়া ধারও শোধ হয়নি এখনও।
২০০৫-এর সেই ‘পাপ’ ২০১৭-তেও তাড়া করছে ইসিএসসি-কে। ঋণ শুধতে না পারায় নিগমের সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয় ব্যাঙ্ক। যা নজিরবিহীন। কারণ, ধার শোধ করতে না পারা বেসরকারি সংস্থার সম্পত্তি ব্যাঙ্ক দখল করেছে এ কথা শোনা গেলেও সরকারি সংস্থার অ্যাকাউন্টে তালার ঘটনা মনে করতে পারছেন না নবান্নের কর্তারা।
এখন উপায়? খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কথায়, ‘‘বিরাট সমস্যায় পড়েছি। ব্যাঙ্ক যখন সমস্ত অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে, তখন চাষিদের ধান কেনার জন্য প্রায় হাজার কোটি টাকা নিগমের অ্যাকাউন্টে ছিল। অনুরোধ করে ছ’মাসের মধ্যে চাষিদের টাকা বিলির অনুমতি দিয়েছে ব্যাঙ্ক। আমরাও বলেছি, বকেয়া টাকা কয়েক কিস্তিতে মিটিয়ে দেওয়া হবে।’’
যদিও কী ভাবে টাকা মেটানো হবে তা ভেবে দিশাহারা খাদ্য দফতরের কর্তারা। জানা গিয়েছে, ধার করা ২৩২ কোটি টাকার মধ্যে শোধ করা হয় মাত্র ৭৫ কোটি। এর পর সুদ-সহ বকেয়া ২৫৮ কোটি টাকা দাবি করে মামলা করে ব্যাঙ্কগুলি। তাদের বকেয়া ২৮ কোটি টাকা না পেয়ে ব্যাঙ্ক অব মহারাষ্ট্র ইসিএসসির সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের দখল নেয়। বাকি ৮টি ব্যাঙ্কও একই পথ নেবে বলে মনে করছেন খাদ্য দফতরের কর্তারা। বাধ্য হয়ে এক প্রকার ব্যাঙ্কের হাতে পায়ে ধরে টাকা মেটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে খাদ্য দফতর। ব্যাঙ্কও সুদ মকুব করে আসলটুকু ছ’মাসের মধ্যে ফিরে পাওয়ার শর্তে রাজি হয়েছে ব্যাঙ্ক। তত দিন নিগমের অ্যাকাউন্ট খোলা রাখার ব্যাপারে বোঝাপড়া হয়েছে বলেও খাদ্য দফতরের দাবি।
খাদ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘এই চুরির ঘটনা বাম জমানায়। কিন্তু দায় নিতে হচ্ছে আমাদের।’’ পাশাপাশি নিগমের এতটাই বদনাম হয়েছে যে সরকার নিগমটাই তুলে দিতে চাইছে। বদলে সিভিল সাপ্লাই কর্পোরেশন নামে নতুন সংস্থা তৈরির প্রস্তাব করেছে খাদ্য দফতর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy