করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানকে ফোন করে তাঁর খোঁজ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’জনের মধ্যে ফোনে কয়েক মিনিট কথা হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। দার্জিলিং সফর থেকে ফিরে মান্নান অসুস্থ হয়ে পড়েন। গত বুধবার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মান্নানের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রের খবর, আপাতত তিনি ভাল আছেন। ওই হাসপাতালের একটি কেবিনে তাঁকে কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে।
ঘটনাচক্রে, মান্নানের সুহৃদ রাজ্যসভার সিপিএম সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্যেরও করোনা হয়েছে। তিনি অবশ্য বাড়িতেই আইসোলেশনে রয়েছেন। গত কয়েক বছরে বিভিন্ন মামলার সূত্রে পেশায় আইনজীবী বিকাশের সঙ্গে মান্নানের ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। বিশেষত, সুপ্রিম কোর্টে সারদা মামলায় বিকাশ মান্নানকে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করেছেন। মান্নানের এক ঘনিষ্ঠের কথায়, ‘‘বিকাশবাবুর করোনা হয়েছে খবর পেয়ে দাদা (মান্নান) তাঁকে ফোনে বলছিলেন, এই হাসপাতালে চলে আসুন। জগাই-মাধাই দু’জনে একসঙ্গে ভর্তি থাকি। তবে বিকাশবাবু জানিয়েছেন, তিনি আপাতত বাড়িতেই থাকছেন।’’
তার মধ্যেই শুক্রবার সকালে বিরোধী দলনেতাকে ফোন করেন মমতা। প্রসঙ্গত, রাজ্য রাজনীতির ইতিহাসে একসময় মান্নান-মমতা সম্পর্ক ভাল থাকলেও আপাতত দু’জনে একেবারেই বিপরীত মেরুর রাজনীতিক। বিরোধী দলনেতা হিসাবে মান্নান প্রায়শই মুখ্যমন্ত্রীর মমতাকে নানা সমালোচনা মূলক চিঠি লিখে থাকেন। বস্তুত, বৃহস্পতিবারও তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়েছেন। তার পরেও অবশ্য রাজনৈতিক মতানৈক্য সরিয়ে রেখে মুখ্যমন্ত্রী বিরোধী দলনেতাকে ফোন করেছেন। তবে মমতা বরাবরই তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সঙ্গে ব্যক্তিগত পর্যায়ে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অসুস্থতার খবর পেয়ে তাঁকে নিজে দেখতে গিয়েছিলেন মমতা। ফোনেও প্রায়শই মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্যের কাছ থেকে বুদ্ধদেবের শরীরের খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর ‘সৌজন্যে’ তিনি খুশি বলে মান্নান ঘনিষ্ঠদের জানিয়েছেন।