Advertisement
E-Paper

‘প্রত্যয়ী’ মমতা, বিদায়ী বিধানসভায় ‘আক্ষেপ’ও

নবান্নে পৌঁছনোর দৌড় শুরু হয়ে গিয়েছে। যদিও বিধানসভা ভোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনও হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৮:৩৩
ষোড়শ বিধানসভার শেষ দিনে মুখ্যমন্ত্রীকে শুভেচ্ছাবার্তা বিধানসভার কর্মীদের। সোমবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

ষোড়শ বিধানসভার শেষ দিনে মুখ্যমন্ত্রীকে শুভেচ্ছাবার্তা বিধানসভার কর্মীদের। সোমবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

নবান্নে পৌঁছনোর দৌড় শুরু হয়ে গিয়েছে। যদিও বিধানসভা ভোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনও হয়নি। এই অবস্থায় বিধানসভায় দাঁড়িয়ে দু’আঙুলে ‘ভি’ চিহ্ন দেখিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করলেন, একুশের ভোটে জিতে রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরবেন তাঁরাই। আবার কবি নজরুল ইসলামের গান উদ্ধৃত করে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান মনে করিয়ে দিলেন, ‘‘চির দিন কাহারও সমান নাহি যায়!’’ যা তাঁর নিজের মোবাইলের রিংটোন।

ষোড়শ বিধানসভার শেষ দিন ছিল সোমবার। অন্তর্বর্তী বাজেটের উপরে বিতর্ক এবং জবাবি বক্তৃতার মধ্যে ঘুরে-ফিরেই এসেছে বিদায়ের সুর এবং প্রত্যাবর্তনের ভাবনা। রেওয়াজ মাফিক বিধানসভার পোর্টিকোয় গ্রুপ ছবি তোলার ব্যবস্থা হয়েছিল বিদায়ী বিধায়কদের জন্য। বিরোধীদের প্রতি ধারাবাহিক অমর্যাদা এবং গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ছবি-পর্বে শামিল হননি বাম ও কংগ্রেস বিধায়কেরা। ছবি তোলার আসরেই ‘ভি’ দেখিয়ে প্রত্যয় বুঝিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূলের কর্মচারী ফেডারেশনের তরফে তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয় একুশের ভোটে জিতে ফিরে আসার জন্য। সেই ফুল নিয়ে নিজের ঘরে ফিয়ে যাওয়ার পথে করিডরে মমতা বলেন, ‘‘আমরা সব সময়েই প্রত্যয়ী।’’

বাজেট-বিতর্কেও এসে পড়েছিল একুশের ভোটের অনুষঙ্গ। বিরোধীদের মূল সুর, ভোটের দিকে তাকিয়েই অন্তর্বর্তী বাজেটের নামে নির্বাচনী ইস্তাহার হয়েছে এ বার। মুখ্যমন্ত্রীও তাঁর জবাবি ভাষণে বিরোধীদের এক হাত নিয়ে বলেছেন, ‘‘কেউ কেউ বলছেন, আমরা কিছু দিন আছি। একুশে এমন জয় লাভ করব যে, ভোট জোট ঘোঁট সকলেই টের পাবে!’’

অধিবেশনের একেবারে অন্তিম লগ্নে ছিল ধন্যবাদ-জ্ঞাপন পর্ব। মুখ্যমন্ত্রী তখন ছিলেন না। তবে সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর বসার জায়গার দিকে ইঙ্গিত করে মন্তব্য করেন, ‘‘ওই আসনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই আবার দেখতে চাই।’’ সেই সূত্র ধরেই বিরোধী দলনেতা মান্নান চির দিন সকলের সমান না যাওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘কারা বিদায় নেবেন, কারা আবার আসবেন, সে সব ঠিক করবেন বাংলার মানুষ। তবে ধন্যবাদ জানিয়েও আমাদের যন্ত্রণার কথা এখানে বলে যাচ্ছি। গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর পর্ব দিনের পর দিন হয়নি। শেষ অধিবেশনে এমন একটা নজির তৈরি করা হল, যা ভবিষ্যতে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।’’ রাজ্যপালকে না ডাকার প্রসঙ্গই বুঝিয়েছেন তিনি। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর ‘আক্ষেপ’, টানা ১৪ দিনের বেশি অধিবেশন প্রায় পাওয়াই গেল না। পাওয়া গেলে আরও অনেক কিছু উত্থাপন করা যেত। ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক আলি ইমরান (ভিক্টর) রাম্জের আফশোস, তাঁর ছোটবেলায় ঘটে যাওয়া পারিবারিক ট্র্যাজেডির প্রসঙ্গ তুলে তাঁকে বিধানসভায় ‘ব্যক্তিগত আক্রমণ’ করা হলেও তা ঠেকানো হয়নি। সব শুনে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘মনে হচ্ছে, স্পিকারকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত কি না, তা-ই নিয়েই বিতর্কসভা বসালে ভাল হয়!’’

শেষ পর্বেই শাসক বেঞ্চের একাধিক বিধায়কের মুখে শোনা গিয়েছে ‘খেলা হবে’। যা নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অন্যত্র বলেছেন, ‘‘আমরা ক্রিকেট, ফুটবল সব খেলাই জানি। তবে ডিফেন্ডার, স্ট্রাইকার সব আমাদের দিকে চলে এসেছে। ভয়ঙ্কর খেলার কথা ওরা বললে আমরাও বলছি, প্রয়োজন হকি স্টিক নিয়েও নামতে পারি!’’ আর এ সবের ফাঁকেই কিঞ্চিৎ লঘু সুর আমদানি করে বর্ষীয়ান মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বিজেপির পরিষদীয় নেতা মনোজ টিগ্গাকে বলেছেন, ‘‘একটু জয় শ্রী রাম বলে দাও!’’ মনোজও হাসি মুখে উত্তর দিয়েছেন, ‘‘আপনিই তো আমার হয়ে বলে দিলেন দাদা!’’

mamata banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy