Advertisement
E-Paper

দার্জিলিঙে আটকে বহু পর্যটক, উদ্ধারের ব্যবস্থা করবে রাজ্য প্রশাসন! ‘টাকা চাইবেন না’, হোটেলগুলিকে বার্তা মমতার

পর্যটকদের সাবধানে থাকার পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাড়াহুড়ো করতে নিষেধ করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, সরকারের তরফে দায়িত্ব নিয়ে সকলকে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:২৬
দার্জিলিঙে আটকে পড়েছেন অনেক পর্যটক।

দার্জিলিঙে আটকে পড়েছেন অনেক পর্যটক। —নিজস্ব চিত্র।

পুজোর মরসুমে উত্তরবঙ্গে ঘুরতে গিয়ে বিপাকে বহু পর্যটক। এক রাতে দার্জিলিঙে যা বৃষ্টি হয়েছে, তাতে বিপর্যয় ঘটে গিয়েছে। তিস্তা, জলঢাকার মতো নদী ফুঁসছে। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে জল। জাতীয় সড়কের উপর তিস্তার জল উঠে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে পর্যটকদের সাবধানে থাকার পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাড়াহুড়ো করতে নিষেধ করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, সরকারের তরফে দায়িত্ব নিয়ে সকলকে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে।

রবিবার সকাল থেকে নবান্নের কন্ট্রোলরুমে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছেন এবং প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিচ্ছেন। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার— পাঁচটি জেলার প্রশাসনের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক করেছেন। সোমবার তিনি নিজে উত্তরবঙ্গে যাবেন। সঙ্গে থাকবেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থও। বিকেলের মধ্যে তিনি শিলিগুড়ি পৌঁছে যেতে পারেন বলে আশা করছেন।

শুধু দার্জিলিং নয়, আলিপুরদুয়ারের সিসামারা, জলদাপাড়া এলাকাতেও বহু পর্যটক আটকে পড়েছেন। ওই জেলায় রবিবার অতি ভারী বৃষ্টির লাল সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন। দার্জিলিং, কালিম্পং-সহ গোটা উত্তরবঙ্গে রয়েছে ভারী বর্ষণের কমলা সতর্কতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পর্যটকেরা অনেকে আটকে পড়েছেন। তাঁরা এখন যেন তাড়াহুড়ো না করেন। আপনারা যেখানে আছেন, থাকুন।’’ হোটেলগুলিতে যাতে পর্যটকদের থাকতে দেওয়া হয়, বাড়তি ভাড়া না-নেওয়া হয়, তা নিশ্চিত করতে বলেছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘হোটেলগুলোয় যেন পর্যটকদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া না-নেওয়া হয়। এটা আমাদের দায়িত্ব। প্রশাসন বিষয়টা দেখে নেবে।’’

দুর্গাপুজোয় যাঁরা কলকাতায় থাকতে পছন্দ করেন না, তাঁরা অনেকেই ছুটি কাটাতে এই সময় উত্তরবঙ্গে যান। ফলে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে দার্জিলিঙে পর্যটকের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি থাকে। শনিবার রাতের বৃষ্টিতে দার্জিলিং শহরেই অনেকে আটকে পড়েছেন। দিলারামে ধস নেমে দার্জিলিং পৌঁছোনোর প্রধান রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। বিপর্যয় দেখে আতঙ্কে অনেকে নেমে আসার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দার্জিলিং ছাড়তে পারেননি। প্রশাসনের তরফে পর্যটকদের ফেরানোর বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কয়েক জনকে ঘুরপথে বার করে আনার চেষ্টা চলছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, এনবিএসটিসি অতিরিক্ত বাসের ব্যবস্থা করছে। নামার পর যাতে পর্যটকদের ফিরতে অসুবিধা না হয়।

১০ নম্বর জাতীয় সড়কে তিস্তার জল উঠে পড়ায় ওই রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মিরিক এবং দুধিয়ার মাঝে একটি লোহার সেতুর অংশ রাতে ভেঙে পড়ে। এর ফলে মিরিকের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। সিকিম ও কালিম্পঙের দিকে যাওয়ার রাস্তাও ক্ষতিগ্রস্ত। স্থানীয় সূত্রে খবর, রোহিণী রোডের একাংশ ভেঙে নদীর দিকে নেমে গিয়েছে। ফলে ওই রাস্তাও বন্ধ। জিটিএ-র তরফে রবিবার রক গার্ডেন এবং টাইগার হিল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টিতে বিপর্যন্ত পাহাড়ের পশুরাও। জঙ্গল থেকে অনেক পশু গ্রামে ঢুকে পড়ছে। জলে ভাসতে দেখা গিয়েছে গন্ডার। উদ্ধার করা হয়েছে কিছু হরিণকে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্যের পাশাপাশি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও হাত লাগিয়েছে। যে সমস্ত রাস্তা ধসে গিয়েছে, সেখানে দড়ি ঝুলিয়ে যাতায়াত করছেন উদ্ধারকারীরা। বিভিন্ন গ্রাম থেকে বাসিন্দাদের উদ্ধার করা হচ্ছে।

Darjeeling North Bengal Weather landslides Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy