বেহালার সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে পর পর দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতা গ্রেফতার। পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেলে। বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল সিবিআই হেফাজতে। তৃণমূলের আরও কয়েক জন নেতাকে সম্প্রতি বিভিন্ন অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে ইডি, সিবিআই। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সরাসরি পাল্টা আক্রমণের পথ নিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেহালায় দলীয় মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, ‘‘কতজনকে গ্রেফতার করবে? আমি সবাইকে নিয়ে জেল ভরো আন্দোলন করব।’’
ইতিমধ্যেই বিরোধী শিবির এই সব অভিযোগের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর যোগসূত্রের অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে। এমন এক পরিস্থিতিতে রবিবার বেহালায় দলের প্রাক স্বাধীনতা দিবস অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে মমতা কর্মী-সমর্থদের উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ‘‘কাল যদি আমার বাড়িতে যায়, কী করবেন? রাস্তায় নামবেন তো!’’ মুখ্যমন্ত্রী বাড়িতে কারা আসতে পারে তা তিনি স্পষ্ট করে না বললেও কর্মী, সমর্থকরা সমস্বরে আন্দোলনে নামার প্রতিশ্রুতি দেন। এর পরেই মমতা বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক ভাবে আন্দোলন করবেন তো? আমারটা আমি একাই লড়ে নেব। কিন্তু আপনাদেরটা আপনাদের লড়ে নিতে হবে তো!’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘যদি আমার কোনও সহকর্মীকে ইচ্ছা করে জেলে ধরে রেখে দেয়, তা হলে গণতান্ত্রিক ভাবে প্রতিবাদ করতে হবে।’’ বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকার কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন মমতা।
পার্থের গ্রেফতারের পরে দল দূরত্ব তৈরি করলেও পাশাপাশি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে তৃণমূল। সে কথা শোনা যায় মমতার মুখেও। অনুব্রতের গ্রেফতার পরে সিবিআই-ইডিকে ব্যবহার করে বিজেপি বিরোধীদের দমন করতে চাইছে— এই অভিযোগে পথেও নামে তৃণমূল। রবিবার ফের আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন মমতা। বলেন, ‘‘১৬ অগস্ট ‘খেলা হবে’ দিবস। ওই দিন থেকে খেলা শুরু হবে। মিছিল, সভা, প্রতিবাদ, প্রতিরোধ শুরু হবে।’’ চায়ের দোকান থেকে সাধারণ মানুষের বাড়িতে গিয়েও এ নিয়ে প্রচারের নির্দেশ দেন মমতা।
অনুব্রতকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে মমতার প্রশ্ন, ‘‘কী বলছে এখন? গরুর টাকা নিয়েছে। গরুর টাকা কোথা থেকে আসে? উত্তরপ্রদেশ থেকে কেন তুমি গরু পাঠাও বাংলা দিয়ে? বিহার থেকে কেন তুমি গরু পাঠাও বাংলা দিয়ে? আমি অনেকবার বলেছি, আমাদের সীমানায় ঢুকতে দেব না। গরু দেখার দায়িত্ব কার? বিএসএফের। বিএসএফের মিনিস্টার কে? হোম মিনিস্টার অমিত শাহ। কয়লা কার অধীনে? কোল ইন্ডিয়ার অধীনে। যা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে।’’
নিজে আক্রমণাত্মক হওয়ার পাশাপাশি দলে নেতা, কর্মীদেরও সেই পথেই হাঁটার নির্দেশ দেন মমতা। বলেন, ‘‘আমাদের পরাধীন করে রাখা হয়েছে। পথে নামতে হবে। সেটা শুরু হবে খেলা হবে দিবস থেকে। ব্লকে ব্লকে খেলতে খেলতে মিছিল করুন। বিজেপি দেখলেই বলবেন, সবচেয়ে বড় চোর কে? বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস ভাই ভাই। বাংলায় এদের ঠাঁই নাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy