পশ্চিমবঙ্গে কর্মরত ডবলুবিসিএস আধিকারিকদের একাংশের সঙ্গে মঙ্গলবার নবান্নে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার পরেই তাদের জোড়া দাবি মেনে নেবেন বলে ওই আধিকারিকদের আলাদা আলাদা করে চিঠি পাঠালেন তিনি। সঙ্গে আশ্বস্ত করলেন আলোচনায় উঠে আসা তাদের দু’টি দাবি মেনে নেবে তাঁর সরকার। তবে মুখ্যমন্ত্রীর এমন চিঠিকে তাঁর রাজনৈতিক কৌশল হিসাবেই দেখছে বিজেপি। রাজ্য বিধানসভার প্রধান বিরোধী দল বিজেপির বক্তব্য, আর কয়েক মাস পরেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। সেই ভোটে যাতে রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের অনৈতিক ভাবে ব্যবহার করা যায়, সেই ভাবনা থেকেই মুখ্যমন্ত্রী ওই চিঠি লিখে তাদের আশ্বস্ত করেছেন।
নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ডবলুবিসিএস আধিকারিকেরা তাঁদের দু’টি দাবির কথা তুলে ধরেন। সেই দাবিগুলি ছিল, প্রথমত, বিশেষ সচিব হিসাবে দু’বছর কাজ করলে সিনিয়র বিশেষ সচিব পদ দেওয়া হোক এবং দ্বিতীয়ত, উচ্চ স্তরের বেতনে (যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব এবং বিশেষ সচিব) পদোন্নতির ক্ষেত্রে স্থবিরতা তৈরি হয়েছে। সেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য পদের সংখ্যা বাড়িয়ে পদোন্নতির সুযোগ বৃদ্ধি করা হোক।
মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে ডবলুবিসিএস আধিকারিকদের পাঠানো সেই চিঠি। —নিজস্ব চিত্র।
এই দু’টি দাবিকে কার্যকর করতে যে তিনি ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করেছেন, তা-ও ওই চিঠিতে উল্লেখ করে দিয়েছেন মমতা। তিনি লিখেছেন, ‘মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে যে ডবলুবিসিএস (এগ্জিকিউটিভ) ক্যাডার রিভিউ কমিটি আছে, সেই কমিটি যাতে এই বিষয়গুলি তাড়াতাডি় দেখে নেয়। সেই নির্দেশ আমি আজ দিয়ে এসেছি। রাজ্য সরকার এই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে।’
তবে মুখ্যমন্ত্রীর এমন পদক্ষেপকে আক্রমণ করে ভগবানপুরের বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, “ভোট বৈতরণী পার করতে আবারও তিনি কৌশলী পদক্ষেপ নিয়েছেন। এখন ডবলুবিসিএস আধিকারিকদের বলছেন, আপনাদের সব দাবি মেনে নেব। শুধু আমাকে বিধানসভা ভোটটা জিতিয়ে দিন। গত ১৫ বছরে এ রাজ্যে সরকারি কর্মচারীদের বেতন কতটা বেড়েছে? কারা মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) পেয়েছেন? এই সব তথ্য আশাকরি ওই আধিকারিকেরা আমাদের থেকে ভাল জানেন।” তিনি আরও বলেন, “আমি ওই আধিকারিকদের কাছে আবেদন করব যাতে মুখ্যমন্ত্রীর মিথ্যচার তাঁরা যেন আর বিশ্বাস না করেন। কারণ গত ১৫ বছরে বাংলার কম ক্ষতি হয়নি। তাই আর বাংলার ক্ষতি হতে দেওয়া চলবে না।”