Advertisement
E-Paper

ডাবওয়ালাই খুন করেছিল জামালপুরের মহিলা আইনজীবীকে

ধরা হয়েছে স্থানীয় সুজিতের সঙ্গী প্রশান্ত ক্ষেত্রপালকেও। পুলিশের দাবি, ঘটনার পর থেকে বারবার ওই পরিবারের পাশে দেখা গিয়েছে তাঁকেও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৫৭
ধৃতদের সঙ্গে এসপি। নিজস্ব চিত্র

ধৃতদের সঙ্গে এসপি। নিজস্ব চিত্র

কালীপুজোর সকালে হাত-পা বাঁধা রক্তাক্ত দেহ মিলেছিল জামালপুরের আঝাপুরের মহিলা আইনজীবীর। কিছুক্ষণ পরে পুলিশের সঙ্গে সেখানে হাজির হন পাশের পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দা সুজিত ঘোড়ুই। শেষকৃত্যের পরে মৃতার পরিজনেদের সান্তনা দিতেও দেখা যায় তাঁকে। রবিবার ওই খুনের ঘটনায় খণ্ডঘোষের বোঁয়াইচণ্ডী গ্রাম থেকে তাঁকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ধরা হয়েছে স্থানীয় সুজিতের সঙ্গী প্রশান্ত ক্ষেত্রপালকেও। পুলিশের দাবি, ঘটনার পর থেকে বারবার ওই পরিবারের পাশে দেখা গিয়েছে তাঁকেও। পাড়ার লোকজনকে জড়ো করে নিরীহ মহিলাকে খুনের প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ, ফাঁড়ি ঘেরাও করা উচিত বলেও দাবি করেছিলেন তিনি। যে শাস্তি চাইছে, সে-ই খুনি— এতে অবাক এলাকার বাসিন্দারাও। মিতালীদেবীর পড়শিদের দাবি, “শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত আটচালায় আড্ডা দিয়েছে প্রশান্ত। বারবার বলছিল, গ্রামের এক মহিলা খুন হয়ে গেল, পুলিশ এখনও কিছু করতে পারছে না—এটা গ্রামের মানুষের লজ্জা। আমাদের উচিত রাস্তা অবরোধ, ফাঁড়ি ঘেরাও করা। খুন করার পরে এত স্বাভাবিক ছিল কী ভাবে, বুঝতেই পারছি না।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নেশা, জুয়ের ঠেক থেকেই বন্ধুত্ব হয় প্রশান্ত ও সুজিতের। ২৬ অক্টোবর অর্থাৎ ঘটনার রাতেও দু’জন সারা রাত ওই আসরে ছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। ভোরের দিকে বাড়ি যান তাঁরা। পুলিশের দাবি, শেষকৃত্য হওয়ার পরে গা ঢাকা দেয় সুজিত। প্রথমে বাঁকুড়ার ইন্দাসের মাদরা গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়ি, দিন দুয়েক আগে বোঁয়াইচণ্ডীতে মামারবাড়িতে ঠাঁই নেয় সে। পুলিশের দাবি, গত এক সপ্তাহে তিন বার জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে ডেকে পাঠানো হয় প্রশান্তকে। প্রত্যেকবারই স্বাভাবিক ভাবেই উত্তর দেয় সে। প্রশান্তর ঠেকের সঙ্গীদের কথায়, “সন্ধে হলেই মদের নেশায় যেত যে, সেই ছেলে কালীপুজোর পর থেকে মদ ছোঁয়নি। সবার সঙ্গে গল্প করেছে, ফুটবল খেলেছে।’’ এই ‘স্বাভাবিক’ আচরণেই সন্দেহ হয় পুলিশের।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নির্দিষ্ট কোনও কাজ করত না বছর ছাব্বিশের প্রশান্ত। মদ খেয়ে মা, স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তিও করত। ধৃতের মা বলেন, “নেশার টানে বদ সঙ্গে গিয়েছে আমার ছেলে। মানুষ করতে পারলাম না!”

এই পাড়া থেকে প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে পূর্ব পাড়ায় বাড়ি বছর পঁয়তাল্লিশের সুজিতের। মাটির বাড়ির এক কামরার ঘরেই দিন গুজরান করেন পেশায় ডাব বিক্রেতা সুজিত। এর আগেও গাড়ির ব্যাটারি চুরির দায়ে জেল খেটেছিল সে। তা বলে খুন, অবাক পড়শিরা। পুলিশের দাবি, সুজিত জেরায় জানিয়েছেন, মৃতার বাড়িতে সাতটি নারকেল গাছ ছিল। কিন্তু ডাব পাড়ালেও মজুরি দিতেন না তিনি। মাস খানেক আগে অন্য এক জনকে দিয়ে ডাব পাড়ানোর পর থেকেই রাগটা বাড়ে সুজিতের। পুলিশের দাবি, ওই রাতে লুটপাটের ছক কষেছিল ধৃতেরা। কিন্তু মহিলা টের পেয়ে যান। তিনি চিৎকার করতেই তাঁকে আঘাত করে ধৃতেরা।

এ দিন মৃতার ভাই গৌরাঙ্গ ঘোষ বলেন, ‘‘যাঁকে বিশ্বাস করে বাড়িতে ঢুকতে দিত, গাছের ডাব পাড়াত দিদি, সেই কি না খুনি! ভাবতেও পারছি না।’’

Crime Murder police Lawyer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy