Advertisement
E-Paper

উপচে পড়া খুচরো নিয়ে সমস্যায় অটোচালকেরা

যাত্রীদের থেকে ভাড়া বাবদ নোট নিয়ে খুচরো ফেরত দেওয়া নিয়ে বহু অভিযোগ উঠত অটোচালকদের বিরুদ্ধে। খুচরো নিয়ে জেরবার ছিলেন প্রায় স্তরের মানুষই।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:০৮
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

বচসা, শ্লীলতাহানি, এমনকী খুনের অভিযোগ অবধি দায়ের হয়েছিল অটোচালকদের বিরুদ্ধে। বহু অটোচালককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। চালক ও যাত্রীদের মধ্যে বচসা হয়ে উঠেছিল নিত্যদিনের ঘটনা। আর এ সবের কেন্দ্রে ছিল খুচরো। যাত্রীদের থেকে ভাড়া বাবদ নোট নিয়ে খুচরো ফেরত দেওয়া নিয়ে বহু অভিযোগ উঠত অটোচালকদের বিরুদ্ধে। খুচরো নিয়ে জেরবার ছিলেন প্রায় স্তরের মানুষই।

সেই সমস্যা এখনও পিছু ছাড়েনি অটোচালকদের। তবে সমস্যার রূপ বদলেছে। নোটবন্দির পর থেকেই বাজারে খুচরো কার্যত উপচে পড়ছে। খুচরো নিয়ে নাজেহাল ব্যাঙ্ক থেকে সাধারণ মানুষ। যাত্রীরাও অটো থেকে নেমে চালকদের খুচরোই দিচ্ছেন। পাঁচ থেকে দশ — ভাড়া যেমনই হোক, খুচরোই পছন্দ যাত্রীদের। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কিছু ফেরত দেওয়ার অবকাশও থাকছে না। অটোচালকদের ঝাঁপি ভরে উঠছে খুচরোয়। পরিস্থিতি এমনই যে খুচরো দেখলেই ঝাঁঝিয়ে উঠছেন অনেক চালক।

কলকাতা-সহ শহরতলি এলাকায় অধিকাংশ অটোচালকই খুচরো নিয়ে বেজায় বিপত্তিতে পড়়েছেন বলে দাবি করছেন। তাঁদের কথায়, যাত্রীরা খুচরো দিচ্ছেন। তা নিয়ে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু অসুবিধা অন্য জায়গায়। অটোয় গ্যাস ভরতে গেলে পেট্রোল পাম্প মালিকেরা খুচরো নিতে চাইছেন না। গড়িয়া-গোলপার্ক রুটের এক অটোচালক বলেন, ‘‘আটশো টাকার খুচরো জমেছে। এ দিয়ে গ্যাস নিতে গেলে, রে রে করে তাড়িয়ে দিচ্ছে। আবার যাত্রীদের নোট দিতেও বলা যাচ্ছে না।’’ অটোচালকেরা জানাচ্ছেন, সারাদিন অটো চালালে ভাড়া বাবদ প্রায় হাজার দেড়েক টাকা পাওয়া যায়। তার ৯০ শতাংশই এখন খুচরো। অতএব গ্যাসের জন্য ওই খুচরো টাকা দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই।

পেট্রোল পাম্পের মালিকেরা আবার জানাচ্ছেন, দু’টি কারণে খুচরো নেওয়া সম্ভব নয়। তাঁরা গ্যাস ও তেল বিক্রির টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা দিয়ে থাকেন। অত খুচরো যেমন ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া সম্ভব নয়। তেমনই চালকদের থেকে আটশো বা হাজার টাকার খুচরো গুনে নেওয়াও কঠিন। আলিপুর এলাকার এক পাম্প মালিক বলেন, ‘‘সব সময় গ্যাসের সরবরাহ থাকে না। সকালে ও সন্ধ্যার পর থেকেই অটোচালকেরা পাম্পে আসেন। এক সঙ্গে প্রায় ২০-৩০ জন চালক লাইনে দাঁড়ান। অন্য ক্রেতারাও থাকেন। তখন খুচরো গুণে নেওয়া কোনও ভাবেই সম্ভব নয়।’’

গ্যাস ছাড়াও নিত্যপ্রয়োজনীয় যে কোনও জিনিস কিনতে গেলেও একই সমস্যা হচ্ছে। আবার যাত্রীদেরও বলতে পারছেন না যে তাঁরা খুচরো নেবেন না।

কী ভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করছেন অটোচালকেরা?

অধিকাংশ চালকই ১০ শতাংশ বাট্টা দিয়ে খুচরোর বদলে নোট নিচ্ছেন বলে দাবি করছেন। মূলত গ্যাস কেনার জন্যই তাঁরা বাট্টা দিয়ে খুচরো থেকে নোট করে নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন অটোচালকেরা। ১০০ টাকার খুচরো দিয়ে ৯০ টাকার নোট পাচ্ছেন বলে অটো চালকদের দাবি। রুবি মোড় ও বালিগঞ্জ রুটের এক অটোচালকের বলেন, ‘‘এক সময় বাট্টার মাধ্যমে নোট দিয়ে খুচরো নেওয়া হত। এখন আবার বাট্টা দিয়েই খুচরো দিয়ে নোট নিতে হচ্ছে। আমাদের পরিস্থিতি একই রয়ে গিয়েছে। এক দিকে দিনের পর দিন গ্যাসের দাম বেড়ে চলছে। অন্য দিকে, বাট্টা দিতে গিয়ে অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে।’’

সাংসদ তথা রাজ্য আইএনটিটিউসির সভানেত্রী দোলা সেন খুচরো সমস্যার জন্য দায়ী করেছেন কেন্দ্রীয় সরকারকেই। তিনি বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর সরকারের হঠকারি সিদ্ধান্তের জন্যই খুচরো নিয়ে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।’’

Coins Demonetisation Retailers খুচরো অটোচালক
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy