Advertisement
E-Paper

হাজিরা-বিক্ষোভে সময় নিলেন অধ্যক্ষ

মুখ চাওয়াচাওয়ি শুরু করলেন পড়ুয়ারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:১২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সামনে দাঁড়িয়ে ইংরেজির বিভাগীয় প্রধান। বিক্ষোভকারী পড়ুয়াকে জিজ্ঞাসা করা হল, ‘‘ইনি কে?’’ পড়ুয়ার উত্তর, ‘‘কলেজের অশিক্ষক কর্মী।’’

বিক্ষোভে স্লোগান উঠছে, ‘এস পাল নিপাত যাও’! ধমক দিয়ে অধ্যক্ষ বিক্ষোভকারীদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘এস পালের পুরো নাম কী?’’ মুখ চাওয়াচাওয়ি শুরু করলেন পড়ুয়ারা।

শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে প্রায় সতেরো ঘণ্টা কলেজে ঘেরাও থাকার পরে সূর্য সেন স্ট্রিটের সিটি কলেজ অব কমার্স অ্যান্ড বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অধ্যক্ষ সন্দীপকুমার পাল রীতিমতো তাজ্জব। শনিবার তাঁর খেদোক্তি, ‘‘পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার দাবি নিয়ে যাঁরা বিক্ষোভ করতে এসেছেন, তাঁরা আমার পুরো নাম পর্যন্ত জানেন না। এস পাল, এস পাল করে চেঁচাচ্ছেন। ইংরেজির বিভাগীয় প্রধানকে বলছেন, অশিক্ষক কর্মী! বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ২০ জন এমন রয়েছেন, যাঁদের হাজিরা শূন্য।’’

তবু এই পড়ুয়াদের জন্যই ‘ভেবে দেখা’র সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অধ্যক্ষ। পর্যাপ্ত হাজিরা না থাকা পড়ুয়াদের থেকে ‘অনুশোচনা পত্র’ নিয়েছেন তিনি। পড়ুয়াদের বুধবার আসতে বলেছেন। শিক্ষা দফতরে কথা বলে দেখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন। যদিও প্রশ্ন, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজে বলেছেন, ৬০ শতাংশের কম হাজিরা থাকলে কোনও ভাবেই পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না। তা হলে এই বাড়তি সময় কিসের? অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘কাউকে কোনও আশ্বাস দিইনি। পড়ুয়ারা বলেছেন, চতুর্থ সেমেস্টারে ৬০ শতাংশ হাজিরা রাখবেন। সে জন্যই শিক্ষা দফতরে কথা বলব বলেছি।’’

চয়েজ বেসড ক্রেডিট সিস্টেম (সিবিসিএস) চালু হওয়ার পরে কলেজে কলেজে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ হচ্ছে। এর জেরে রেজিস্ট্রেশনের জন্য কলেজগুলিকে বাড়তি সময় ধার্য করেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি, পড়ুয়াদের বিক্ষোভ, ডামাডোলে বহু কলেজই সময় মতো রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়া শেষ করতে পারেনি। যদিও শিক্ষামহলের উদ্বেগ, এই বাড়তি সময়ের জেরে নতুন করে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হতে পারে অধ্যক্ষদের। মধ্য কলকাতার এক কলেজের অধ্যক্ষ শুক্রবারই জানিয়েছেন, হাজিরা না-থাকা পড়ুয়ারা নতুন করে তাঁদের গিয়ে ধরছেন। সূর্য সেন স্ট্রিটের সিটি কলেজেও শুক্রবার ৩৫০ জন পড়ুয়া পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার দাবিতে নতুন করেই বিক্ষোভ শুরু করেন। রাতভর ঘেরাও ছিলেন অধ্যক্ষ সন্দীপবাবু-সহ ৩৫ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীকে। সন্দীপবাবু এ দিন বলেন, ‘‘হাতে ব্লেড নিয়ে ঘুরছে। বলছে পরীক্ষায় বসতে না দিলে হাত কাটবে। স্পষ্ট বলে দিয়েছি, হাত কাটো বা লাইনে গলা দাও— আমাদের কিছু করার নেই।’’ পরে অবশ্য চাপের মুখে অধ্যক্ষকে শিক্ষা দফতরে কথা বলে দেখার আশ্বাস দিতে হয়।

শুক্রবার রাত থেকেই ছাত্র বিক্ষোভ সামাল দিতে কলেজে মোতায়েন ছিল পুলিশ। এ দিন সকাল আটটা নাগাদ শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীরা বেরোতে গেলে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। পড়ুয়াদের খাতা খুলে হাজিরা গুনে নিতে বলেন অধ্যক্ষ। তবুও অবরোধ ওঠেনি। এক পড়ুয়ার দাবি, ‘‘এমন অনেকে ছিল, যাদের পর্যাপ্ত হাজিরা ছিল না জানি। দেখছি, তারাও পরীক্ষায় বসতে পারছে। ওই খাতা দেখতে চাই না।’’ পড়ুয়াদের নাছোড় মনোভাবের মুখে পড়েই এর পর তাঁদের আনা ‘অনুশোচনা পত্র’ নেন অধ্যক্ষ।

সিবিসিএস CBCS
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy