Advertisement
E-Paper

বার্নপুরে ফের উড়ান মার্চে

সেই থেকে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে ছিল ইস্কোর ওই বিমানবন্দরও। প্রায় ৫০ বছর পরে সেই বিমানবন্দর থেকেই এ বার বাণিজ্যিক উড়ান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৩
নতুন করে তৈরি করা হয়েছে রানওয়ে। নিজস্ব চিত্র।

নতুন করে তৈরি করা হয়েছে রানওয়ে। নিজস্ব চিত্র।

যাতায়াতের সুবিধার জন্য দু’টি ব্যক্তিগত বিমান কিনেছিলেন ইস্কোর তদানীন্তন কর্ণধার বীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। বিমান ওঠানামার জন্য বার্নপুরের কালাঝরিয়ায় একটি বিমানবন্দরও তৈরি করেন তিনি। সেখান থেকে তাঁর বিমান শেষ বার ওঠানামা করেছিল গত শতকের সত্তরের দশকে। ইস্কোর জাতীয়করণের পরে সেই দু’টি বিমান আর ওড়ার সুযোগ পায়নি।

সেই থেকে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে ছিল ইস্কোর ওই বিমানবন্দরও। প্রায় ৫০ বছর পরে সেই বিমানবন্দর থেকেই এ বার বাণিজ্যিক উড়ান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সব ঠিক থাকলে আগামী মার্চ থেকেই ইস্কো আর বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের যৌথ তত্ত্বাবধানে ওখান থেকে বাণিজ্যিক বিমান চলাচল শুরু করা হবে। সরকারের এই উদ্যোগে খুশি শিল্প-বাণিজ্য মহল।

২০০৭ সালে ইস্কো কারখানার আধুনিকীকরণের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে যোগ দেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। তাঁকে নিয়ে বার্নপুর বিমানবন্দরে নেমেছিল দু’টি সামরিক হেলিকপ্টার। তখন বিমানবন্দরে সাময়িক কিছু সংস্কার হয়েছিল। কিন্তু তার পরে আর প্রয়োজন না-হওয়ায় পুরো এলাকা আগাছার জঙ্গলে ঢেকে যায়। সীমানা-পাঁচিল থেকে রানওয়ে— ভেঙে যায় সবই। তবে বাণিজ্যিক উড়ান চালু করার সিদ্ধান্ত পাকা হওয়ার পরেই বিমানবন্দরের ভোল পাল্টে গিয়েছে। বানানো হয়েছে উঁচু সীমানা-পাঁচিল। নতুন করে তৈরি হয়েছে রানওয়ে। বসে গিয়েছে উড়ান নিয়ন্ত্রক এটিসি টাওয়ারও।

ফের চালু হওয়ার পরে বার্নপুর বিমানবন্দরের অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা, অ্যাম্বুল্যান্স, চিকিৎসা গড়ার বন্দোবস্ত করবে রাজ্য সরকার। বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবে রাজ্য পুলিশ। তার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে তাদের। ইস্কোর ওই বিমানবন্দর থেকে ছোট বিমান চালু করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে স্থানীয় শিল্প মহল। ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বারের কার্যনির্বাহী সভাপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতান বলেন, ‘‘এখান থেকে বিভিন্ন বাণিজ্যিক শহরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ছোট বিমান চালানোর সিদ্ধান্তে আমরা খুশি।’’ আসানসোল চেম্বার অব কমার্সের উপদেষ্টা সুব্রত দত্ত জানান, ইস্কোর এই বিমানবন্দরটি বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার একেবারে কাছে। রানিগঞ্জের মেজিয়া ও কুলটির সাঁকতোড়িয়া হয়ে গাড়ি করে সহজেই বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় চলে যাওয়া যাবে।

ইস্কো সূত্রের খবর, প্রায় ৬৩ একর জুড়ে তৈরি ওই বিমানবন্দরের ১২০০ মিটার রানওয়ে ছোট বিমান ওঠানামার উপযুক্ত। আরও বড় বিমান ওঠানামা করতে গেলে এলাকা বাড়াতে হবে বিমানবন্দরের। বাড়াতে হবে রানওয়েও। বিমানবন্দরের যাবতীয় দেখভাল থেকে সংস্কার— সবই হবে ইস্কোর তত্ত্বাবধানে। বিমান পরিবহণ থেকে বিমানবন্দরের কারিগরি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করবেন বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষ।

ইস্কোর জনসংযোগ আধিকারিক ভাস্কর কুমার বলেন, ‘‘এখান থেকে বাণিজ্যিক উড়ান চালু করার ব্যাপারে বছর দেড়েক আগে ইস্কোর সঙ্গে বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের চুক্তি হয়েছে।’’ তিনি জানান, কেন্দ্রের আঞ্চলিক উড়ান পরিষেবা প্রকল্পে এয়ার ডেকান এখান থেকে কলকাতা পর্যন্ত ১৯ আসনের ছোট বিমান চালাবে। বিমানটি রোজ সকাল ৬টায় কলকাতা থেকে ছেড়ে বার্নপুরে পৌঁছবে ৭টায়। সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে বার্নপুর থেকে সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ফিরবে। পরে বার্নপুর থেকে রৌরকেলা ও জামশেদপুরের মধ্যেও এই বিমান পরিষেবা চালু হবে বলে জানিয়েছেন ভাস্করবাবু।

Commercial flights Burnpur Airport
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy